মুঘল মনসবদারী ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য আলোচনা

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস,সিলেবাসের একটি অন্যতম বিষয়- Unit:4- রাষ্ট্রের অবস্থা ও গতি (Nature of state)।এই বিষয়টিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে- শাসনের যন্ত্রপাতিঃ মুঘল মনসবদার যেটির সম্বন্ধে আজকে আমাদের আলোচনা। আজকের বিষয়- মুঘল মনসবদারী ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা কর।

আশা করি , একাদশ শ্রেণী ইতিহাস, Semester 2 -এর ছাত্রছাত্রীরা , এই উপস্থাপনার মাধ্যমে খুবই উপকৃত হবে ।

আমরা সহজ ও সংশ্লিষ্ট ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্বরূপ বিষয়গুলি উপস্থাপন করে থাকি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি ।পরবর্তীতে একাদশ শ্রেণীর আরও অন্যান্য বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব NOTES পেতে darsanshika.com পেজটিতে অবশ্যই Visit করুন।

মুঘল মনসবদারী ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা কর।
মুঘল মনসবদারী ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা কর।

 

মুঘল মনসবদারী ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা কর। 

ভূমিকাঃ

মনসব কথাটির  অর্থ হল পদমর্যদা বা Rank। এই পদমর্যদার অধিকারীদের মনসবদার বলা হয়। মনসবদারী প্রথা একটি পারসিক প্রথা। আকবরের সাম্রাজ্যের সামরিক ও বেসামরিক কাজকর্মের ভিত্তি হিসাবে 1577 সালে মনসবদারী ব্যবস্থা চালু করেন।

মনসবদারী প্রথা প্রবর্তনের কারণঃ   

সম্রাট আকবর কতকগুলি উদ্দেশ্যে মনসবদারী প্রথা প্রবর্তন করেন।

(i) সামরিক ও বেসামরিক সরকারি কর্মচারীদের সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে মনসবদারী প্রথা প্রবর্তন করেন।

(ii) জাইগীরদার প্রথার দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য মনসবদারী প্রথা প্রবর্তন করেন।

(iii) নির্দিষ্ট পরিমাণ সামরিক শক্তিকে বৃদ্ধি করার জন্য এই প্রথার প্রবর্তন করা হয়।

মনসবদারী ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যঃ

মুঘল সম্রাট আকবর প্রবর্তিত মনসবদারী ব্যবস্থার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় –

(i) আকবর মনসবদারদের সৈন্য ও অস্ম সংখ্যার উপর ভিত্তি করে সমস্ত ব্যবস্থাটিকে 33 টি স্তরে বিভক্ত করেন।

(ii) মনসবদারদের পদ বংশানুক্রমিক ছিল না। মনসবদারদের নিয়োগ ,পদোন্নতি, পদচ্যুতি সবই সম্রাজের উপর নির্ভরশীল ছিল।

(iii) আকবর মনসবদারী প্রথার মধ্যে আলাউদ্দিন খলজি প্রবর্তিত দাগ ও হুলিয়া প্রথা পুনরায় প্রবর্তনের জন্য সেনাবাহিনীতে দক্ষ সেনা ও ঘোড়া রাখার ব্যবস্থা করেন।

(iv) মনসবদাররা ছিল সরকারী কর্মচারী। তারা সামরিক ও অসামরিক উভয় পদেই নিযুক্ত থাকতেন।

(v) সম্রাট জাহাঙ্গির মনসবদারদের ঘোড় সত্তয়ার সেনাদের ভড়ন পোষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে দেন । এছাড়া তিনি দুই ঘোড়ার সত্তায়ারি এবং তিন ঘোড়ার সত্তয়াড়ি প্রথা চালু করেন।

মনসবদারী প্রথার গুরুত্বঃ

(i) মনসবদারী প্রথার মাধ্যমে সামরিক, প্রশাসনিক ও অভিজাততন্ত্রের সমন্বয় সাধন করা সহজ হয়। এরই ফলশ্রুতিতে মুঘল সাম্রাজ্য দীর্ঘ 200 বছরের অধিক স্থায়ী হয়েছিল।

(ii) মনসবদারের পথ বংশানুক্রমিক না হওয়ায় সর্বদা যোগ্য ব্যাক্তিরা এই পদ লাভ করার সুযোগ পেত। তাছাড়া সামান্ত প্রথার উদ্ভব ঘটেনি।

(iii) আকবর ও তার পরবর্তী মুঘল সম্রাটগণ মনসবদারী প্রথার মাধ্যমে এক বিশাল সেনাবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন।

(iv) জাতিভিত্তিক মনসবদারী প্রথা চালু হওয়ার ঐক্যবদ্ধভাবে বিভিন্ন জাতি কর্তৃক সম্রাটের বিরোধিতার পথ বন্ধ হয়। তাছাড়া বিদেশী অভিজাতদের আধিপত্য নষ্ট নয়।

                   সুতরাং বলা যায় যে, আকবর প্রবর্তিত মনসবদারী ব্যবস্থা সম্পূর্ন ভাবে নতুন একটি ব্যবস্থা হলেও তা পুরনো একটি প্রথা। মুঘল সাম্রাজ্যে দীর্ঘকাল স্থায়িত্ব নির্ভরশীল ছিল মনসবদারী প্রথার উপর।


 একাদশ শ্রেণীর আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পড়ুনঃ


 প্রশ্নউত্তরঃ 

১. মুঘল মনসবদারি প্রথা কী ?

উত্তরঃ  মনসবদারী প্রথা একটি পারসিক প্রথা। আকবরের সাম্রাজ্যের সামরিক ও বেসামরিক কাজকর্মের ভিত্তি হিসাবে 1577 সালে মনসবদারী ব্যবস্থা চালু করেন।

২. মনসবদার কাকে বলে ?

উত্তরঃ মনসব কথাটির  অর্থ হল পদমর্যদা বা Rank। এই পদমর্যদার অধিকারীদের মনসবদার বলা হয়।

৩. মনসবদারি প্রথা কে কবে প্রবর্তন করেন ? 

উত্তরঃ সম্রাট আকবরের সাম্রাজ্যের সামরিক ও বেসামরিক কাজকর্মের ভিত্তি হিসাবে 1577 সালে মনসবদারী ব্যবস্থা চালু করেন। 

৪. দাগ ও হুলিয়া কি ?

উত্তরঃ সৈন্যবাহিনীর দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য আলাউদ্দিন খলজি দাগ ও হুলিয়া প্রথার প্রচলন করেন । হুলিয়া হল সেনার দৈহিক বৈশিষ্ট লিপিবদ্ধ করে রাখার পদ্ধতি । আর দাগ হল  ঘোড়া চিহ্নিতকরণ। আকবর মনসবদারী প্রথার মধ্যে আলাউদ্দিন খলজি প্রবর্তিত দাগ ও হুলিয়া প্রথা পুনরায় প্রবর্তনের জন্য সেনাবাহিনীতে দক্ষ সেনা ও ঘোড়া রাখার ব্যবস্থা করেন।


 

 

 

Leave a comment