একাদশ শ্রেণীর Education দ্বিতীয় সেমিস্টার ,সিলেবাসের একটি অন্যতম বিষয় Group-C; Unit – II: Growth & Development. Class 11 Education Semester 2 , Growth & Development SAQ ছাত্রছাত্রীদের জন্য 2 নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আজকের প্রশ্ন- বৃদ্ধি ও বিকাশ প্রশ্ন উত্তর | Class xi Education |
Education-এর প্রয়োজনীয় সব Notes তোমরা এই পেজে পাবে , আমরা সহজ ও সংশ্লিষ্ট ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্বরূপ বিষয়গুলি উপস্থাপন করে থাকি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি । আলোচনার এই পর্বের আলোচ্য বিষয়ঃ বৃদ্ধি ও বিকাশ প্রশ্ন উত্তর SAQ | একাদশ শ্রেণী শিক্ষাবিজ্ঞান |

একাদশ শ্রেণী | EDUCATION
দ্বিতীয় সেমিস্টার
বৃদ্ধি ও বিকাশ প্রশ্ন উত্তর SAQ
প্রতিটি প্রশ্নের মান 2
1. কৈশোর কালকে ঝড়ঝঞ্ঝা কাল বলা হয় কেন ?
উত্তরঃ মনোবিদ জি. এম. হল বয়ঃসন্ধিকালকে ‘ঝড়ঝঞ্জা ও দুঃখকষ্টের কাল’ বলেছেন। এর কারণগুলি হল –এই সময়ে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে যৌন প্রবণতা দেখা দেয়। যৌনতা সম্পর্ক ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে অনেক সময় মানসিক অবসাদ দেখা যায়।
দেহগত পরিবর্তনের সাথে সাথে এই সময়ে বিভিন্ন নতুন পরিবেশ ও বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, যা কিশোর কিশোরীদের সহজে কাটিয়ে ওঠে সম্ভব হয় না।
2. স্তরের শিক্ষা বলতে কী বোঝ ?
উত্তরঃ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাস্তর অর্থাৎ একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষা স্তরকে +2 শিক্ষাস্তর বলে। এই শিক্ষাস্তরের বয়সসীমা হল – 16 – 18 বছর।
3. প্রাথমিক শিক্ষার প্রয়োজনীয় উল্লেখ করো ?
উত্তরঃ প্রাথমিক শিক্ষা ঐ স্তরের শিক্ষার্থীদের সামাজিক, দৈহিক, প্রক্ষোভিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করে।
শিক্ষার্থীর সু – অভ্যাস গঠন ও ভাষার বিকাশ সহায়তা করে।
4. প্রাথমিক শিক্ষার দুটি সমস্যা লেখ ?
উত্তরঃ প্রাথমিক শিক্ষার দুটি সমস্যাগুলি হলঃ
(i) আর্থিক সমস্যাঃ
ভারতবর্ষের মতো উন্নয়নশীল দেশে আর্থিক সমস্যার কারণে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন যথাযথভাবে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এছাড়া অভিভাবকদের নিরক্ষতা ও আর্থিক সমস্যা প্রসারে বাধা দেয়।
(ii) সামাজিক সমস্যাঃ
জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নানা রক্ষণশীল নীতি, গোষ্ঠীগত অনগ্রসরতা, জাতিগত ভেদাভেদ ইত্যাদি হল সামাজিক সমস্যা।
5. বাল্যকাল বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ 6 থেকে 11 বছর বয়স পর্যন্ত সীমাবদ্ধ জীবন কালকে বাল্য কাল বলে। বাল্যকাল হল এমন একটি স্তর যে স্তরে শিশুদের মধ্যে অদ্ভূত রকমের শৃঙ্খলা ও সংযতভাবে দেখা দেয়। এই স্তরকে বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে 3 টি পর্যায় ভাগ করা যায়।
(i) প্রাক বাল্যকাল।
(ii) প্রারম্ভিক বাল্যকাল।
(iii) প্রান্তীয় বাল্যকাল।
6. বাল্যকালের দুটি প্রাথমিক চাহিদা উল্লেখ করো ?
উত্তরঃ বাল্যকালের দুটি প্রাথমিক চাহিদা হল-
দৈহিক চাহিদা – খাদ্যের চাহিদা, ঘুমের চাহিদা , পুনরাবৃত্তির চাহিদা ইত্যাদি।
মানসিক চাহিদা – নতুন অভিজ্ঞতার চাহিদা, অনুকরণের চাহিদা, নিরাপত্তার চাহিদা, অনুসন্ধানের চাহদি, নিজেকে প্রকাশ করার চাহিদা ইত্যাদি।
7. আর্নেস্ট প্রদত্ত জীবন বিকাশের স্তরগুলি কী কী ?
উত্তরঃ শৈশব , ii. বাল্যকাল , iii. কৈশোর ও iv. পরিণত
8. প্রাক্ প্রাথমিক শিক্ষার কয়েকটি শিক্ষাব্যবস্থার নাম লেখ ?
উত্তরঃ কিন্ডার গার্টেন শিক্ষালয় , ii. নার্সারি শিক্ষালয় , iii. প্রাক্ বুনিয়াদি শিক্ষালয় , iv. মন্তেসরি শিক্ষালয়, v. অঙ্গনওয়ারী (I. C. D. S Integrated child development service) ।
9. কয়েকটি প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার নাম লেখ ?
উত্তরঃ (i) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , (ii) বেসরকারী প্রাথমিক শিক্ষালয় , (iii) বুনিয়াদি শিক্ষালয় , (iv) ধর্মীয় বিদ্যালয়।
প্রতিটি প্রশ্নের মান 5
1. বুদ্ধির সংজ্ঞা দাও বুদ্ধির বৈশিষ্ট্য লেখ ?
উত্তরঃ বুদ্ধি হল এমন এক ধরনের মানসিক ক্ষমতা যার দ্বারা জ্ঞান অর্জন ও প্রয়োগ করা যায়। অন্য ভাষায় বলা যায় বুদ্ধি হল কতকগুলি সহজাত ক্ষমতার সমন্বয় যা ব্যক্তিকে নিত্য নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলতে সাহায্য করে।বুদ্ধি হল এক প্রকার মানসিক শক্তি যার বহিঃ প্রকাশ ঘটে বিভিন্ন আচরণের মধ্যে দিয়ে।
বুদ্ধির কতকগুলি বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেগুলি হল
(i) বুদ্ধি হল মৌলিক মানসিক ক্ষমতা ।
(ii) বুদ্ধি একটি সহজাত ক্ষমতা, তবে একে কার্যকারী করতে অনুশীলনের প্রয়োজন হয়।
(iii) বুদ্ধি মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে বন্টিত হয়।
(iv) লিঙ্গ ভেদে বুদ্ধির বিশেষ কোনো পার্থক্য হয় না।
(v) বুদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো জাতীগত পার্থক্য থাকে না।
(vi) বুদ্ধির বিভিন্ন স্তরে বুদ্ধির বিকাশের হার ভিন্ন ভিন্ন হয়।
(vii) বুদ্ধি আমাদের বিচার বিশ্লেষণে সাহায্য করে।
(viii) একাধিক বস্তু ব্যক্তি বা ধারণার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নিধা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বুদ্ধি আমাদের সহায়তা করে।
(ix) থর্নডাইক বুদ্ধিকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন মূর্তবুদ্ধি, বিমূর্ত বুদ্ধি ও সামাজিক বুদ্ধি।
(x) দ্রুত সমস্যার সমাধান বুদ্ধির আরোও একটি বৈশিষ্ট্য।
2. শৈশব কালে শিশুদের চাহিদা গুলো কী কী ?
উত্তরঃ শৈশবের বিকাশগত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কতকগুলি চাহিদা শিশুদের পরিলক্ষিত হয়। সেগুলি হল-
(ক) দৈহিক চাহিদা
(i) খাদ্যের চাহিদা
দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধির জন্য খাদ্যের চাহিদা প্রবল হয়।
(ii) ঘুমের চাহিদা
দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধির জন্য ঘুমের চাহিদা প্রবল হয়।
(iii) সক্রিয়তার চাহিদা
সবসময়েই কিছু না কিছু করতে চায়। কাজে বাঁধা দিলে বিরক্ত হয়।
(iv) পুনরাবৃত্তির চাহিদা
একই কাজ ও একই কথা বারবার সে বলতে চায়।
(খ) সামাজিক চাহিদা
i) অভিজ্ঞতা অর্জনের চাহিদা
নতুন বিষয়কে জানার প্রতি শিশুর চাহিদা প্রবল হয়। এটা কী , ওটা কী , এমন প্রশ্নের সে উত্তর চায়।
ii) অনুকরণের চাহিদা
বিচার বিবেচনা ছাড়া বয়স্কদের অনুকরণ করতে চায়।
iii) কল্পনার চাহিদা
শিশু কল্পনা প্রবণ হয়। আজগুবি বা অবাস্তবিক বিষয়ে কল্পনা করতে তারা ভালোবাসে।
iv) অনুসন্ধানের চাহিদা
খেলনা, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ভেঙে সেটা কি তা জানার চেষ্টা করে।
v) সহযোগীতার চাহিদা
এই চাহিদার জন্য শিশুরা দলবদ্ধভাবে খেলাধূলা করতে পছন্দ করে।
vi) সমবেদনার চাহিদা
শিশু পিতামাতা বয়স্কদের কাছ থেকে সমবেদনার প্রত্যাশা করে।
vii) প্রতিদ্বন্দিতার চাহিদা
সব কিছুকে নিজের করে পাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দিতার চাহিদা সঞ্চারিত হয়।
viii) সমর্থনের চাহিদা
যে কোনো কাজের জন্য বয়স্কদের কাছ থেকে সমর্থন প্রত্যাশা করে।
এইসব চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখেই শিক্ষাব্যবস্থা রচনা করা প্রয়োজন।
3. কৈশোর কালের চাহিদাগুলো আলোচনা করো ?
উত্তরঃ কৈশোর কালের মনোবৈজ্ঞানিক চাহিদাগুলি হল
ক) জৈবিক চাহিদা
(i) খাদ্যের চাহিদা
কৈশোর কালে দৈহিক বিকাশ পরিপূর্ণতা লাভ করে বলে এই সময় খাদ্যের চাহিদা প্রবল হয়। খাদ্যের চাহিদা যথাযথভাবে মেটাতে না পারলে দৈহিক বিকাশ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
(ii) যৌন চাহিদা
যৌন অঙ্গগুলির পরিপূর্ণতা লাভের সাথে সাথে যৌন চাহিদা সৃষ্টি হয়। যৌনতা সম্পর্কে কৌতুহল প্রকাশ করে এবং বিপরীত লিঙ্গের সাথে মিলিত হবার তাগিদ অনুভব করে।
(খ) মানসিক চাহিদা
(i) স্বাধীনতা চাহিদা
কৈশোর কালে দৈহিক ও মানসিক বিকাশের কারণে ছেলে মেয়েরা অপরের ওপর নির্ভরতা ত্যাগ করে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে চায়, নিজের অধিকার সুনিশ্চিত করতে চায়।
(ii) নিরাপত্তার চাহিদা
এই সময়ে নিজের দেহজগৎে যেমন পরিবর্তন ঘটে। এর কারণে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যার জন্য দেখা দেয় নিরাপত্তার চাহিদা।
(iii) আত্মপ্রকাশের চাহিদা
বিভিন্ন সৃষ্টিমূলক কাজের মধ্য দিয়ে কিশোরিরা নিজেদের আত্মপ্রকাশ করতে চায়।
(iv) জ্ঞানের চাহিদা
এই সময় বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি কৌতুহল ও অনুরাগ দেখা দেয়। ফলে কৌতূহল ও অনুরাগ মিলিত হয়ে জ্ঞান আহরণের আন্তরিক তাগিদ দেখা দেয়।
(v) জীবনদর্শের চাহিদা
জীবন কী ? জীবনের চরম লক্ষ্য কী ? এমন সব প্রশ্ন কিশোর কিশোরীদের মধ্যে দেখা দেয়।
গ) সামাজিক চাহিদা
(i) স্বীকৃতির চাহিদা
সামাজিক কাজে অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে এই বয়সের ছেলেমেয়েরা নিজেদের সামাজিক মর্যাদা লাভ করতে চায়।
(ii) নৈতিক চাহিদা
ভালো মন্দের বিচার বোধ এই বয়সের ছেলে মেয়েদের মধ্যে দেখা যায়। মহান ব্যক্তিদের মূল্যায়ণ করে নৈতিক জীবন বোধ গড়ে তুলতে চায়।
4. বৈদিক যুগে শিক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো ?
উত্তরঃ আনুমানিক খ্রীঃ পূর্ব দুহাজার বছর থেকে খ্রীঃ পূর্ব তিনহাজার বছর পর্যন্ত প্রাচীন ভারতীয় আর্য সত্যতার যুগে প্রবর্তিত বেদ নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থাকে বৈদিক যুগের শিক্ষা বলে। বৈদিক যুগে শিক্ষার বৈশিষ্ট্য গুলি হল –
i) শিক্ষার লক্ষ্য
বৈদিক যুগে শিক্ষার লক্ষ্য ছিল দ্বিমুখী শিক্ষার্থীর আত্মউপলব্ধি ও আধ্যাত্মিক বিকাশ অর্থাৎ আধ্যাত্মিক চেতনার উন্মেষের মাধ্যমে আত্ম উপলব্ধি করাই ছিল শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য।
ii) বিদ্যারম্ভ বা অক্ষর স্বীকার
শিক্ষার্থীর শিক্ষা শুরু হত ‘বিদ্যারম্ভ’ বা ‘অক্ষর স্বীকার’ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এর সাথে আর একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হত সেটি হল ‘চূড়াকর্ম’ বা ‘চূড়াকরণ’।
iii) উপনয়ন
বৈদিক যুগে শিক্ষক বা গরুরা উপনয়ন নামক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিষ্যকে ব্রহ্মচারী হিসাবে দ্বিতীয় জন্মদিন অর্থাৎ উপনয়নের মাধ্যমে শিষ্যকে ব্রহ্মার্যে আশ্রমে প্রবেশ করানো হত।
iv) শিক্ষা কাল
উপনয়নের মাধ্যমে বৈদিক শিক্ষা শুরু হত। বারো বছর পরে শিক্ষাক্রমটি শেষ হত ‘সমাবর্তন’ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
v) শিক্ষার সুযোগ
বৈদিক যুগে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের শিক্ষার অধিকার ছিল, কিন্তু শূদ্রদের শিক্ষার অধিকার ছিল না।
vi) পাঠক্রম
বর্ণ বা শ্রেণীভেদে পাঠক্রম বিভিন্ন ছিল। যেমন – ব্রাহ্মণরা বেদ পাঠ করত, ক্ষত্রিয়রা অস্ত্রবিদ, যুদ্ধবিদ্যা, ধর্মশাস্ত্র, নীতিশাস্ত্র, শল্যবিদ্যা ও দন্ডবিদ্যা ইত্যাদি, বৈশ্যরা কৃষি ও বাণিজ্য, পরিমাপ বিদ্যা ইত্যাদি শিখত।
vii) সহপাঠক্রম
পাঠক্রমের অনুশীলনের সাথে সাথে শিক্ষার্থীর কতগুলি সহপাঠক্রম পালন করতে হত। যেমন – ভিক্ষাকরা, সামাজিক দায়িত্ব, কৃষি কাজ করা, গোধন রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি।
viii) শিক্ষাদান পদ্ধতি
শিক্ষাদান কয়েকটি স্তরে অগ্রসর হত। যেমন – উপক্রম – আবৃত্তি – মনন – নিদিধ্যাসন ।
ix) শিক্ষক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক
গুরুশিষ্যের সম্পর্ক ছিল পিতা মাতার মত।
5. বৈদিক যুগে শিক্ষাদান প্দ্ধতি সম্পর্ক আলোচনা করো ?
উত্তরঃ প্রাচীন বৈদিক শিক্ষাব্যবস্থায় আচার্য বা গুরু কখনও ব্যক্তিগতভাবে আবার কখনও বা সমষ্টিগতভাবে শিক্ষাদান করতেন। সমষ্টিগতভাবে শিক্ষাদানের সময় ও ব্যক্তিগত অসুবিধাগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হত। অর্থাৎ শিক্ষাদান প্রদ্ধতি (Teaching method ) ছিল ব্যক্তিকেন্দ্রিক। বৈদিক যুগে পঠন পাঠনের বিষয় ছিল ‘মন্ত্র।’ লিখিত কোন গ্রন্থ ছিল না।
গুরুর মুখে শুনে শিক্ষার্থী পাঠ মুখস্ত করত তবে কোন কিছু না বুঝে শিক্ষার্থীরা মুখস্ত করত না। ধারাবাহিক বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে মন্ত্রের আত্মনির্হিত অর্থ ব্যাখ্যা করা হত। গভীর আত্মচিন্তাই ছিল প্রকৃত জ্ঞানলাভের পথ। অর্থাৎ বৈদিক যুগে শিক্ষা পদ্ধতি এমন ছিল যা। শিক্ষার্থীর চিন্তা ও মনের পরিপন্থী। গুরুশিক্ষার্থীদের সামনে পাঠদানের বিষয়বস্তু উপস্থাপনের সময় কয়েকটি পর্যায় অগ্রসর হতেন।
(i) উপক্রম
পূর্বজ্ঞান পরীক্ষা করে শিক্ষার্থীর জ্ঞানের স্তর অনুধাবন করা হত।
(ii) শুশ্রূষা
আচার্যের মন্ত্র উচ্চারণ শোনার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করাই ছিল শুশ্রূষা।
(iii) শ্রবণ
এই পর্যায়ে গুরু মুখে মুখে বিষয়বস্তু উত্থাপন করতেন এবং শিক্ষার্থী মনোযোগ সহকারে তা শ্রবণ করত।
(iv) আবৃত্তি
এই পর্যায়ে শিক্ষার্থী গুরুর কাছ থেকে শোনা বিষয়বস্তু আবৃত্ত করত।
(v) মনন
এই পর্যায়ে শিক্ষার্থীর আলোচনা ও যুক্তির মাধ্যমে বিষয় বস্তুর তাৎপর্য উপলব্ধি করতে সচেষ্ট হত।
(vi) নিদিধ্যাসন
যুক্তির আলোকে বিষয়বস্তুকে উপলব্ধি করে জীবন সত্যের উপলব্ধির প্রয়াস হল নিদিধ্যাসন।সুতরাং, শিক্ষাদান পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর যুক্তি শক্তি ও স্মৃতিশক্তির উপর সমান গুরুত্ব দেওয়া হত। তাছাড়া প্রশ্নকে শিক্ষণের একটি কৌশল বলে বিবেচনা করা হত। পাঠ্য বিষয় বস্তুকে সহজ বদ্ধ গড়ে তোলার জন্য কাহিনী ও গল্পের সাহায্য নেওয়া হত। এইভাবে শিক্ষার্থীরা শিক্ষণের প্রশিক্ষণ পেত।
6. মাধ্যমিক শিক্ষা বলতে কী বোঝ ? মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য ও পাঠক্রম সম্পর্ক লেখ ?
উত্তরঃ প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থার একটি স্তর হল মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা হল এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতাগুলোকে সম্প্রসারিত করে ব্যক্তিগত ও সমাজ জীবনের উপযুক্ত করে তোলা হয়।
মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য
ভারতীয় শিক্ষা কমিশন (1968 – 66) এর মতানুযায়ী মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি হল –
i) শিক্ষার্থীর জ্ঞান মূলক বিকাশের সঙ্গে তাদের মধ্যে কর্মমুখী দৃষ্টিভঙ্গি জাগ্রত করা।
ii) শিক্ষার্থীর সংস্কৃতিক জীবনকে সুরক্ষিত করা।
iii) শিক্ষার্থী যাতে সামাজিক অভিযোজনে সক্ষম হয় সেদিকে লক্ষ্য দেওয়া।
iv) শিক্ষার্থীর অবসর যাপনের প্রশিক্ষণ দেওয়া ।
v) সৃজনমূলক কাজের উপযোগী প্রশিক্ষণ দেওয়া।
vi) শিক্ষার্থীর মধ্যে নেতৃত্ব গ্রহণের ক্ষমতা জাগ্রত করা।
vii) সর্ব্বজনীন শিক্ষার স্তর হিসাবে শিক্ষাকে চারিত্রিক বিকাশের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
viii) গণতান্ত্রিক নাগরিকতা বিকাশের জন্য শিক্ষা হবে শক্তিশালী।
ix) এই স্তরে শিক্ষার্থীর মধ্যে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে জীবনের সঠিক পথে পরিচালিত করা।
x) বৈজ্ঞানিক ও বৃত্তিমূলক জ্ঞান আহরণের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি জাগ্রত করা।
xi) দেশের ঐতিহ্য সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচয় বোধ করানো।
xii) বিভিন্ন দিক থেকে শিক্ষার্থীদের বিকাশ ঘটিয়ে পরিপূর্ণ ব্যক্তিসত্ত্বার অধিকারী করে তোলা।
পাঠক্রম
পশ্চিমবঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা বলতে নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষাকে বোঝায়। ভারতীয় শিক্ষা কমিশন (কোঠারি কমিশন)
বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষার যে পাঠক্রম ও পাঠ্যসূচী রয়েছে তা হল
(i) ভাষা বিভাগ – মাতৃভাষা বা প্রথম ভাষা, ইংরাজী ভাষা বা দ্বিতীয় ভাষা, সংস্কৃত ভাষা বা তৃতীয় ভাষা।
(ii) বিজ্ঞান বিভাগ – গণিত – পাটিগণিত, বীজগণিত, ত্রিকোনমিতি, জ্যামিতি, পরিমিতি।
(iii) সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ – ইতিহাস , ভূগোল।
(iv) ঐচ্ছিক বিষয় – শিক্ষার্থীর পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো বিষয় বেছে নিতে পারে।
(v) আবশ্যিক বিষয়-পরিবেশ বিদ্যা।
7. প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা কীভাবে শিক্ষামূলক দায়িত্ব পালন করে ?
উত্তরঃ শৈশব কালের বেশির ভাগ সময় কাটে পরিবারের মধ্যে। খুব অল্প সময়ই কাটে প্রাক্ প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাই শৈশবে শিক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে এই দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানকে। প্রাক্ প্রাথমিক বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলো হল – নার্মারি বিদ্যালয়, I. C. D. S , মন্তেসরি শিক্ষালয়, কিন্ডার গার্টের ইত্যাদি। প্রাক্ প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি হল –
ক) সু – অভ্যাস গঠন
দৈনন্দিন জীবনের উপযোগী অভ্যাস তৈরি করা। যেমন পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা, প্রত্যাহিক কাজগুলো যথাসময়ে নিয়মিত করা, খাবার আগে ভালো করে হাত ধোঁয়া ইত্যাদি।
খ) প্রকৃতি পরিচয়
পরিবেশ সম্পর্ক বিভিন্ন কর্মসূচী ও বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা। যেমন – বিভিন্ন (বিষয়) জীবজন্তুর ছবি, বিভিন্ন পরিবেশের ছবি ইত্যাদি দেখানো।
গ) লেখা শিক্ষার অনুশীলন
লাইন কাটা, অক্ষর লেখা, বিভিন্ন আকারের বৃত্ত, ত্রিভুজ এঁকে রং করতে লেখানো।
ঘ) মানসিক অনুশীলন
মানসিক বিকাশের জন্য নাচ, গান, যোগ ব্যায়াম শেখানো।
ঙ) সৃজনশীলতার বিকাশ
অঙ্কন, নাচ, গান, মাটির কাজ, কাগজ কেটে নানান জিনিস তৈরি করা ইত্যাদি।
চ) ভাষাগত শিক্ষা
শুদ্ধভাবে বর্ণমালাগুলো উচ্চারণ করতে শেখানো শুদ্ধভাবে বানান করতে শেখানো দরকার। শব্দ লেখা বিভিন্ন কার্ড ব্যবহার করা।
ছ) সামাজিকীকরণ
এক্ষেত্রে খেলাধূলা, টিফিন খাওয়া, বেড়ানো ইত্যাদির আয়োজন করা।
জ) নৈতিক বিকাশ
বিভিন্ন মনিষীদের, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কাহিনী, ধর্মীয় গল্প, নীতি শিক্ষা ইত্যাদি শেখানো।
সুতরাং, এই স্তরের শিক্ষা, ব্যবস্থাকে হতে হবে শিশুর চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। স্বতঃপ্রণোদিত, আনন্দদায়ক ও তৃপ্তিদায়ক। এই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুর স্বাধীনতাকে প্রধান্য দিতে হবে।
8. বৃদ্ধি ও বিকাশের মধ্যে পার্থক্য লেখো ।
উত্তরঃ বৃদ্ধি ও বিকাশ পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত এবং নির্ভরশীল হলেও উভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় ।
(i) প্রাণীর আকারগত ও আয়তনগত বেড়ে যাওয়াকে বৃদ্ধি বলে । আর বিকাশ হল আকার ও আয়তনগত বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রাণীর কার্যকারণ ও সক্রিয়তা অর্জন করা ।
(ii) বৃদ্ধি কেবলমাত্র দৈহিক বা শারীরিক অবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ । এক্ষেত্রে মানসিক অবস্থা বিচার্য নয় । অপরদিকে বিকাশের ধারণায় দৈহিক ,মানসিক, সামাজিক ও প্রাক্ষোভিক প্রভৃতি সমস্ত বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত ।
iii) বৃদ্ধি একটি স্বতঃস্ফুর্ত প্রক্রিয়া ,তবে এক্ষেত্রে অনুশীলনের কিছুটা প্রভাব আছে । অপরদিকে বিকাশ একটি স্বতঃস্ফুর্ত প্রক্রিয়া নয় । বিকাশ হয় পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার ফলে অর্থাৎ বিকাশের ক্ষেত্রে অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ ।
(iv) বৃদ্ধির একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে অর্থাৎ বৃদ্ধি একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত ঘটে। অপরদিকে বিকাশে নির্দিষ্ট কোন সময়সীমা নেই অর্থাৎ বিকাশ একটি জীবনব্যাপি প্রক্রিয়া জন্মতে এর শুরু মৃত্যুতে এর শেষ ।
(v) বৃদ্ধি যেহেতু একটি দৈহিক অবস্থা তাই তা পরিমাপযোগ্য ,কিন্তু বিকাশ যেহেতু একটি মানসিক অবস্থা তাই তা পরিমাপযোগ্য নয় পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষ ।
(vi) বৃদ্ধির পরিমাণগত দিক আছে ,গুণগত দিক নেই । বিকাশের গুণগত দিক আছে পরিমাণগত দিক নেই ।
শিক্ষা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করলেও তা নিয়ে শিক্ষাবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে । আর ব্যক্তির পূর্ণবিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষাই একমাত্র সহায়ক ।
8. পরিণমন কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী ? Click Here
9. বয়সসন্ধিকালকে সমস্যা বহুল স্তর বলা হয় কেন ? Click Here
10. বাল্যকালের প্রক্ষোভিক বিকাশ সম্পর্কে লেখ ? Click Here
11. কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকাল বলতে কী বোঝ ? Click Here
12. কৈশোর কালের জীবন বিকাশের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী ? Click Here
12. শৈশব কালের বিকাশগত বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী ? Click Here
13. বুদ্ধি বলতে কী বোঝ / বুদ্ধির ধারণা দাও । Click Here
একাদশ শ্রেণীর আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পড়ুনঃ
- একাদশ শ্রেণী | বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর |
- একাদশ শ্রেণী বাংলা | তেলেনাপোতা আবিষ্কার বড় প্রশ্নউত্তর |
- একাদশ শ্রেনী দর্শন | যৌগিক যুক্তির সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
- একাদশ শ্রেণী রাষ্ট্রবিজ্ঞান | রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ বড় প্রশ্ন উত্তর ।
- একাদশ শ্রেণী রাষ্ট্রবিজ্ঞান | আইন কাকে বলে আইনের উৎস গুলি আলোচনা করো |
- কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র বিষয়বস্তু |একাদশশ্রেণী ইতিহাস দ্বিতীয় সেমিস্টার
- মুঘল মনসবদারী ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা কর। একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস
- দানবীর কর্ণ নাট্যংশের শব্দার্থ ও বঙ্গানুবাদ | Sanskrit Class 11
- অথর্ববেদ | 2 নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর | একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত |