শৈশবের বিকাশমূলক বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো

একাদশ শ্রেণী দ্বিতীয় সেমিস্টারের Education-এর একেবারে নতুন সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় Unit – II: Growth & Development :  Childhood . 

আজ  WBCHSE Class 11 Education semester 2 , Unit – II: Growth & Development  এই পর্বে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি আলোচনা করবো, তা হল- শৈশব বলতে কি বোঝো শৈশবের বিকাশমূলক বৈশিষ্ট্যগুলি কি কি | meaning and the developmental characteristics of childhood |

আমরা সহজ ও সংশ্লিষ্ট ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্বরূপ বিষয়গুলি উপস্থাপন করে থাকি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি । পরবর্তীতে একাদশ শ্রেণীর আরও অন্যান্য বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব NOTES পেতে darsanshika.com পেজটিতে অবশ্যই Visit করুন।

শৈশব বলতে কি বোঝো শৈশবের বিকাশমূলক বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা |
শৈশব বলতে কি বোঝো শৈশবের বিকাশমূলক বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা |

 

শৈশব বলতে কি বোঝো | শৈশবের বিকাশমূলক বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো |

 

শৈশব বলতে কি বোঝোঃ

জন্মের পর থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত সময়কালকেই শৈশব কাল বলে। এই সময়ইকালে শিশুর দৈহিক, প্রাক্ষোভিক,ও  সামাজিক বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটে থাকে ।

শৈশবের বিকাশমূলক বৈশিষ্ট্যগুলি  হলঃ 

শৈশব কালের বিকাশগত বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

(i) দৈহিক বিকাশঃ 

একবছর থেকে তিন বছর সময়কাল পর্যন্ত শিশুর দেহের আয়তন ও ওজন দ্রুতহারে বাড়তে থাকে ইন্দ্রিয়গুলো শক্তিশালী ও স্বনির্ভর হয়ে ওঠে। কেবল শব্দ, আলো, ব্যাথা, গন্ধ, স্বাদ ইত্যাদি পৃথক পৃথক ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে অনুভব করতে শেখে।

দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পৃথক পৃথক ভাবে কাজ করতে সক্ষম হয় এবং তাদের কাজের মধ্যে সমবায় দেখা যায়। ক্রমে সে হামাগুড়ি দিয়ে স্থান পরিবর্তন করতে এবং সবশেষে হাঁটতে শেখে। এই সময়েই তারা কোন জিনিসকে শক্ত করে ধরতে শেখে। এই সময় খেলাধূলা ও জলের প্রতি শিশুদের প্রবণতা বাড়ে।

(ii) বৌদ্ধিক বিকাশঃ  

দৈহিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর মধ্যে ভাষার বিকাশ শুরু হয়। জন্ম মুহুর্তে যে শিশু একমাত্র ভাষা ছিল কান্না  এই স্তরে শিশু প্রথমে এবং ক্রমে বাক্য ব্যবহার করে মনের ভাব প্রকাশ করতে শেখে। অর্থাৎ শিশুর বাচনিক বিকাশ হয়। এই স্তরের শিশুদের মধ্যে কৌতূহল, অনুকরণ, কল্পনা শক্তি , অনুসন্ধান ইত্যাদি মানসিক বৈশিষ্ট্য শিশুদের মধ্যে প্রবলভাবে দেখা দেয়। ছবি আঁকা, নাচ ও গানের প্রতি ঝোঁক দেখা দেয়।

(iii) প্রাক্ষোভিক বিকাশঃ 

এই স্তরে শিশুদের মধ্যে আনন্দ দুঃখ , রাগ, ভয়, ভালোবাসা, উল্লাস ইত্যাদি প্রাক্ষোভিক বিকাশ হয়ে থাকে। তাছাড়া আশঙ্খা , লজ্জা, ঘৃণা ইত্যাদি মনোভাবের বিকাশ হয়। এই স্তরে শিশু তার পরিবারের সদস্য বিশেষ করে মা , ও   সহপাঠীদের ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়। অস্থায়ী কিছু সেন্টিমেন্ট তার মধ্যে কাজ করে। যেমন – মায়ের প্রতি সেন্টিমেন্ট।

(iv) সামাজিক বিকাশঃ 

শিশুর সামাজিকতার প্রাথমিক প্রকাশ তার মাকে কেন্দ্র করে হাঁসি, কান্নার মাধ্যমে হয়। তারপর ধীরে ধীরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে এবং ক্রমে প্রতিবেশীদের মধ্যে প্রকাশ ঘটে। এই বয়সেই সহযোগীতা, সহানুভূতি ও প্রতিদ্বন্দিতামূলক সামাজিক প্রবণতাগুলো লক্ষ্য করা যায়।

এই সময়ে শিশুদের চাহিদা গুলো কী কী ? 

শৈশবের বিকাশগত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কতকগুলি চাহিদা শিশুদের পরিলক্ষিত হয়। যেগুলি হল –

1. দৈহিক চাহিদাঃ 

  • খাদ্যের চাহিদা – দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধির জন্য খাদ্যের চাহিদা প্রবল হয়।
  • ঘুমের চাহিদা – দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধির জন্য ঘুমের চাহিদা প্রবল হয় ।
  •  সক্রিয়তার চাহিদা – সবসময়েই কিছু না কিছু করতে চায়। কাজে বাঁধা দিলে বিরক্ত হয়। 
  • পুনরাবৃত্তির চাহিদা – একই কাজ ও একই কথা বারবার সে বলতে চায়।

 আরোও পড়ুন 


 

2. সামাজিক চাহিদাঃ 

  • অভিজ্ঞতা অর্জনের চাহিদা – নতুন বিষয়কে জানার প্রতি শিশুর চাহিদা প্রবল হয়। এটা কী , ওটা কী , এমন প্রশ্নের সে উত্তর চায়।
  • অনুকরণের চাহিদা – বিচার বিবেচনা ছাড়া বয়স্কদের অনুকরণ করতে চায়।
  • কল্পনার চাহিদা – শিশু কল্পনা প্রবণ হয়। আজগুবি বা অবাস্তবিক বিষয়ে কল্পনা করতে তারা ভালোবাসে।
  • অনুসন্ধানের চাহিদা – খেলনা, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ভেঙে সেটা কি তা জানার চেষ্টা করে ।

3. সামাজিক চাহিদাঃ 

  • সহযোগীতার চাহিদা – এই চাহিদার জন্য শিশুরা দলবদ্ধভাবে খেলাধূলা করতে পছন্দ করে।
  • সমবেদনার চাহিদা – শিশু পিতামাতা বয়স্কদের কাছ থেকে সমবেদনার প্রত্যাশা করে।
  • প্রতিদ্বন্দিতার চাহিদা – সব কিছুকে নিজের করে পাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দিতার চাহিদা সঞ্চারিত হয়।

4. সমর্থনের চাহিদাঃ 

যে কোনো কাজের জন্য বয়স্কদের কাছ থেকে সমর্থন প্রত্যাশা করে। শিশুদের  এইসব চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখেই শিক্ষাব্যবস্থা রচনা করা প্রয়োজন।


 একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টারের আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পড়ুনঃ  


 প্রশ্নউত্তরঃ

১. শৈশব বলতে কি বোঝো ?

উত্তরঃ জন্মের পর থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত সময়কালকেই শৈশব কাল বলে। এই সময়ইকালে শিশুর দৈহিক, প্রাক্ষোভিক,ও  সামাজিক বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটে থাকে ।

২. শৈশব কালের বয়স সীমা কত ?

উত্তরঃ জন্মের পর থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত শৈশবকাল ।

৩. শৈশব কালের বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ ।

উত্তরঃ শৈশব কালের বৈশিষ্ট্য গুলি  হলঃ

(i) শিশুর দেহের আয়তন ও ওজন দ্রুতহারে বাড়তে থাকে ইন্দ্রিয়গুলো শক্তিশালী ও স্বনির্ভর হয়ে ওঠে।

(ii) এই স্তরে শিশুদের মধ্যে আনন্দ দুঃখ , রাগ, ভয়, ভালোবাসা, উল্লাস ইত্যাদি প্রাক্ষোভিক বিকাশ হয়ে থাকে।

(iii) নতুন বিষয়কে জানার প্রতি শিশুর চাহিদা প্রবল হয়। এটা কী , ওটা কী , এমন প্রশ্নের সে উত্তর চায়।

(iv) ক্রমে বাক্য ব্যবহার করে মনের ভাব প্রকাশ করতে শেখে।


 

 

Leave a comment