ছাত্রদের সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা

প্রিয় পাঠক আজকের বাংলা রচনা পর্বে যে রচনাটি আমরা উপস্থাপন করতে চলেছি তা হল-ছাত্রদের সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা।  প্রথমে এই রচনাটি একটু বড়ো করে লেখা হয়েছে ,ছাত্রদের সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা class 10 , এবং ছাত্রজীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা class 9 ।

পরে রচনাটি সংক্ষিপ্ত করে লেখা হয়েছে যা ছাত্র সমাজ আদর্শ কর্তব্য প্রবন্ধ রচনা class 7, ও ছাত্র সমাজ আদর্শ কর্তব্য প্রবন্ধ রচনা class 8 ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

মাধ্যমিক বাংলা রচনা ও উচ্চমাধ্যমিক বাংলা রচনা পেতে darsanshika.com পেজটিতে অবশ্যই Visit করুন।

ছাত্রদের সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা
ছাত্রদের সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা

 

ছাত্রদের সামাজিক দায়িত্ব কর্তব্য রচনা Class 9 /10

 

i) ভূমিকাঃ 

“আমরা শক্তি আমরা বল

আমরা ছাত্রদল।

মোদের পায়ের তলায় মূর্ছে তুফান

ঊর্ধ্বে বিমান ঝড় বাদল ।” কাজী নজরুল ইসলাম 

ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গেয়েছিলেন কবি ।এই ভেবে যে ছাত্ররা দুর্বার প্রাণশক্তির আধার। তাদের লক্ষ্য নির্দিষ্ট, হৃদয়ে মৃত্যুঞ্জয়ী সাহস, কর্মে তাদের নিরলস অবিশ্রাম গতি। দুর্গম গিরি, কান্তার মরু ছাত্রদের কাছে কোনো বাধা নয়, অফুরন্ত তাদের প্রাণশক্তি। এই অফুরন্ত প্রাণশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ছাত্ররা যদি মানব সেবায়, সমাজের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করে তবে দেশের জাতীয় উন্নতি অবধারিত।

ii) ছাত্রদের স্বভাব বৈশিষ্ট্যঃ

স্বভাবে বন্ধনহীনতা, চরিত্রধর্মে এগিয়ে চলা, প্রথা ও কুসংস্কারের জগদ্দল পাথর সরিয়ে দিয়ে গতিময় জীবনের স্রোতকে প্রবাহিত করে দেওয়া ছাত্রদের অফুরান প্রাণের বৈশিষ্ট্য। শুষ্ক ও মিথ্যা আচারের শৈবালে রুদ্ধ গতি নদীর মতো গতিহীন সমাজে আদর্শায়িত কর্মচাঞ্চল্যের প্রাণধারা প্রবাহিত করতে পারে ছাত্র সমাজ।

সার্বিক ও সামাজিক কল্যাণের মন্ত্রে তারা দীক্ষিত। পুরাতন সব কিছুকে নির্বিবাদে মেনে নেওয়া নয়, যুক্তির দ্বারা বিচার করে গ্রহণ করা হল ছাত্রদের বৈশিষ্ট্য। কিশোর ছাত্র বিশেষ করে তাদের কৈশোর বয়সই একটি বড়ো ঝঞ্ঝার কাল। সেই সময়ে তাদের প্রশস্ত উদার হৃদয় নতুন কিছু করতে চায়, করে দেখতে চায়।

iii) সামাজিক দায়িত্বের গুরুত্বঃ

নবজাত শিশু দুটি সত্তা বহন করে – একদিকে ব্যক্তিসত্তা  এবং অন্যদিকে সমাজসত্তা। সেই শিশুর নগ্নতা ঢাকার জন্য সমাজ এগিয়ে আসে বস্ত্রহাতে, উৎপাদন করে খাদ্য ও বানিয়ে দেয় বাসস্থান। সমাজের অস্তিত্ব নির্ভর করে পারস্পরিক দেওয়া-নেওয়ার উপর।

সমাজ থেকে শুধু গ্রহণ করব, সমাজকে কিছু দেব না – এই  নিয়মে সমাজ চলতে পারে না । সম্ভাব্য সমস্ত উপায়ে সমাজের কাছে আজন্ম প্রাপ্ত সমস্ত ঋণ শোধ করতে হয়। সমাজ উন্নয়নের মতো বিস্তৃত ও উজ্জ্বল লক্ষ্যে প্রণোদিত হয়ে আর্ত মানুষের জন্য কিছু করা অর্থাৎ সমাজ সেবা করাই হল সামজের ঋণ শোধের উৎকৃষ্ট পথ।

আবার বাড়ির এই সামাজিক সত্তা সমাজের প্রতি একনিষ্ঠ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই বিকশিত হয়, চরিত্রে আসে সংহতির ভারসাম্য।

iv) অপরাজেয় শক্তি ছাত্রছাত্রীঃ

জীবনে অন্য কালপর্বগুলির চেয়ে ছাত্রজীবনেই পরিকল্পিত ও সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সমাজ সেবা করা সম্ভব। প্রবীণের তুলনায় সূক্ষ্ম অনুভূতির অধিকারী বলে তাদের মধ্যে পীড়িত ও যন্ত্রণাবিদ্ধ মানুষের বেদনাজাত প্রতিক্রিয়াগুলি ক্ষিপ্রতর হয়।দেহে ও মনে উদ্দীপনা ও শক্তি নিয়ে তারা মানব কল্যাণে নিজেদেরকে নিয়োজিত করতে দ্বিধা করে না।

অথচ ছাত্রজীবনে সময়ের অপব্যবহারও ঘটে যথেষ্ট। তারা তাদের অমূল্য প্রাণশক্তি, উদ্যম কল্পনাকে ছড়িয়ে দেয় যততত্র। অথচ তা যদি সমাজকল্যাণে নিযুক্ত হয় তাহলে দুদিক থেকে সার্থকতা। একদিকে তারা নিজেদেরকে  ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তোলার অবকাশ পায়, অন্যদিকে সমাজও এদের দ্বারা উপকৃত হয়।  সমাজসেবী ও দেশরক্ষাকারী হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে ছাত্রসমাজকে অনুপ্রাণিত করতে হবে।

v) জনসেবাঃ

আজকাল স্কুল-কলেজে জনসেবাকে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্যে রাখা হয়েছে। তাই এন. এস. এস., এন. সি. সি. রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে। এসবের মাধ্যমে একজন ছাত্র যেমন সমাজসেবার মাধ্যমে অন্তর্নিহিত সত্তার বিকাশ ঘটাচ্ছে তেমনি তারা তাদের সমাজের চারপাশের পরিবেশ তথা মানুষজনের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করছে।

যে ছাত্ররা শিক্ষিত হচ্ছে তারই চারপাশে অনেকে অশিক্ষিত থেকে যাচ্ছে। ছাত্ররা যদি নিজেদের শিক্ষিত করার পাশাপাশি তার চারপাশের মানুষদের অল্প হলেও শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারে তাহলে তাতে তাদের ও সমাজের প্রভূত উন্নতি ঘটে। আজকের সমাজে দারিদ্র্য, অশিক্ষা, কুসংস্কার এখনো মানুষের মনে জগদ্দল পাথরের মতো বদ্ধমূল। তাকে সমাজ থেকে সরাতে গেলে ছাত্রসমাজের ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ছাত্র সমাজ এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হলে, সরকারও এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করলে ছাত্রদের দ্বারাই সমাজের মঙ্গল সম্ভব।

Vi) কর্তব্যবোধ ছাত্রসমাজঃ

ছাত্রসমাজ নিজেরা যদি কর্তব্যবোধে সচেতন হয়, তারা যদি নিজেদেরকে একজন দেশের নাগরিক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাহলে তাদের অনেক কিছুই করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা।

সচেতনতাই পারে যে কোনো লক্ষ্যকে সার্থক করতে। তাই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ও সরকারের উচিত ছাত্রদের মানসিকতার মধ্যে সমাজসেবার গঠনমূলক দিকটিকে তুলে ধরা ও তাদের এ ব্যপারে উদ্বুদ্ধ করা।

 vii) ছাত্রজীবনের লক্ষ্যঃ

শুধু নিজেদের কেরিয়ার গঠন নয়, শুধু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়া, কিংবা বড়ো পদে চাকরি করা নয়, সমাজের প্রতি কিছু দায়বদ্ধতা এ কথা ছাত্রদেরকে বোঝানো উচিত।

আজকের ছাত্ররা যে স্বার্থপর মনোবৃত্তির শিকার হচ্ছে, কিংবা নিঃসঙ্গতার বলি হচ্ছে তার অন্যতম কারণ হচ্ছে ছাত্ররা এই সমাজের দায়বদ্ধতা থেকে পিছিয়ে পড়ছে বলেই, জনসংযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেই। শুধু নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলে হবে না যেখানে প্রতিষ্ঠিত হব, যাদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত হব, তারা যদি মনে-প্রাণে প্রতিষ্ঠা না দেয়, অন্তরে অন্তরে একটা দূরত্ব বজায় রাখে তাহলে ছাত্রদের তথাকথিত প্রতিষ্ঠালাভের অর্থ অর্থহীন হয়ে পড়ে ।

সেজন্য প্রয়োজন অভিভাবকদের সচেতনতা। এক জন  ছাত্র তার বন্ধুর কাছ থকে বই চাইলে সে যেন না বলে তার মা দিতে বারণ করেছে। তাহলে তো মূল উদ্দেশ্য নষ্ট হয়ে যায়।

viii) ছাত্রসমাজ ও রাজনীতিঃ

আমাদের দেশে যেখানে এখনো মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে ক্ষমতা  কুক্ষিগত, সরকারি  সুফল  যেখানে কয়েক মানুষের কারায়ত্ত । প্রশাসকরা সাধারণের অসচেতনতার কারণে তাদের শাসন যন্ত্রকে কায়েম রেখছে । সেখানে কর্তব্য সচেতন নাগরিক হিসাবে ছাত্রদের ভূমিকা অস্বীকার করার কোন উপায় থাকে না।

ছাত্র সমাজ তথা যুবসমাজকে পিছিয়ে রেখে, মানবকল্যাণে উদবুদ্ধ না করে দেশের অগ্রগতি হলে তাও হবে ব্যর্থ।পরাধীন ভারতে ক্ষুদিরাম, বিনয়, বাদল,দীনেশের মতো ছাত্ররা দেশকে স্বাধীন করার জন্য এগিয়ে গিয়েছিল, এমনকি আত্মদানেও পিছপা হয়নি তারা।

ছাত্রদের মধ্যে সেই সব আদর্শকে তুলে ধরতে হবে। কেননা আজকের ছাত্রসমাজে ছাত্রসমাজে যদি কাউকে তার জীবনের লক্ষ্য জিজ্ঞাসা করা যায়, তাহলে সে কখনোই বলবে না সে দেশের সেবা করতে চায়। তাই সবার আগে প্রয়োজন ছাত্রদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি।

ix) কর্মপন্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাঃ

লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে প্রথমেই প্রয়োজন নির্দিষ্ট কর্মপন্থার। শুধু বস্তা পচা কিছু তত্ত্ব ছাত্রদের মাথায় ঢোকালে এবং ছাত্ররা সেগুলো মুখস্থ করে বেশি নম্বর পেলেই চলবে না, তারা যথার্থ মানুষ হয়ে উঠেছে কিনা, তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা গড়ে উঠেছে কিনা সেটা দেখাও জরুরি। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু সংস্কার প্রয়োজন।

প্রয়োজন সুস্থ, সবল, সরল, উদার মানসিকতার। সমাজসেবা যেহেতু মানুষের অন্তর্নিহিত মানবতার মৌলিক প্রকাশ ও সহজাত প্রবৃত্তি, সেহেতু তা কেবলমাত্র প্রশিক্ষণ দিয়েই গড়ে তোলা যায় না।

সমাজসেবীরা গড়ে ওঠে না, সমাজসেবী হয়ে ওঠার ক্ষমতা সহজাত। তাই তাদের অন্তরে কিছু প্রেরণা ও সম্ভাবনা থাকা দরকার, দরকার  কিছু মানসিকতার। কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী কর্মসূচি গ্রহণ ও তার মূল্যায়ণ প্রয়োজন। শুধু এন. এস. এস. বা এন. সি. সি. করলেই হবে না, একজন সমাজসেবী ও দেশরক্ষাকারী হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে গেলে চাই যথার্থ লক্ষ্য ও মানসিকতা এবং সেই মানসিকতার উপযুক্ত লালন।

x) উপসংহার:

শিক্ষার লক্ষ্যের অন্যতম দিক হল সমাজের সঙ্গে তার সংগতি স্থাপন। জীবনের সামগ্রিক দিকের উন্মোচন হল শিক্ষার লক্ষ্য। স্বামীজি তাই বলেছেন, ‘শিক্ষা হল মানবের, অন্তর্নিহিত সত্তার জাগরণ, যা সমাজসেবার মাধ্যমে ঘটতে পারে।‘ তাই ছাত্রসমাজকে শুধু পুঁথিগত শিক্ষা দিয়ে নয়, সত্যিকারের মানুষ করে গড়ে তুলতে গেলে সমাজ সেবার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কবি সুনির্মল বসু বলেছেন :

“বিশ্ব-জোড়া পাঠশালা মোর

সবার আমি ছাত্র,

নানান ভাবের নতুন জিনিস

শিখছি দিবারাত্র।”


ছাত্রদের সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা অনুসরণে লেখা যায়:

১. দেশ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা 

২. আদর্শ সমাজ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা । 


 

ছাত্র সমাজ আদর্শ কর্তব্য প্রবন্ধ রচনা class 7/8

 

i) ভূমিকাঃ 

“আমরা শক্তি আমরা বল

আমরা ছাত্রদল।

মোদের পায়ের তলায় মূছে তুফান

ঊর্ধ্বে বিমান ঝড় বাদল ।”কাজী নজরুল ইসলাম । 

ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গেয়েছিলেন কবি ।এই ভেবে যে ছাত্ররা দুর্বার প্রাণশক্তির আধার। এই অফুরন্ত প্রাণশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ছাত্ররা যদি মানব সেবায়, সমাজের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করে তবে দেশের জাতীয় উন্নতি অবধারিত।

ii) ছাত্রজীবনের লক্ষ্যঃ

শুধু নিজেদের কেরিয়ার গঠন নয়; শুধু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়া, কিংবা বড়ো পদে চাকরি করা নয়, সমাজের প্রতি কিছু দায়বদ্ধতা এ কথা ছাত্রদেরকে বোঝানো উচিত।

আজকের ছাত্ররা যে স্বার্থপর মনোবৃত্তির শিকার হচ্ছে, কিংবা নিঃসঙ্গতার বলি হচ্ছে তার অন্যতম কারণ হচ্ছে ছাত্ররা এই সমাজের দায়বদ্ধতা থেকে পিছিয়ে পড়ছে বলেই, জনসংযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেই। শুধু নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলে হবে না যেখানে প্রতিষ্ঠিত হব, যাদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত হব, তারা যদি মনে-প্রাণে প্রতিষ্ঠা না দেয়, অন্তরে অন্তরে একটা দূরত্ব বজায় রাখে তাহলে ছাত্রদের তথাকথিত প্রতিষ্ঠালাভের অর্থ অর্থহীন হয়ে পড়ে ।

iii) ছাত্রজীবনের কর্তব্যঃ

‘ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ’-অধ্যয়নই হচ্ছে ছাত্রদের একমাত্র তপস্যা। অধ্যায়ন ছাত্র জীবনের একমাত্র তপস্যা হলেও তাদের সামাজিক কর্তব্য রয়েছে।তাই তাদের কতকগুলি গুণাবলী অর্জন করতে হয়- চরিত্র গঠন ,  নিয়মানুবর্তিতা, সময়ানুবতির্তা,  অধ্যবসায়, খেলাধুলা ও ব্যায়াম, সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ

 iv) জনসেবাঃ

যে ছাত্ররা শিক্ষিত হচ্ছে তারই চারপাশে অনেকে অশিক্ষিত থেকে যাচ্ছে। ছাত্ররা যদি নিজেদের শিক্ষিত করার পাশাপাশি তার চারপাশের মানুষদের অল্প হলেও শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারে তাহলে তাতে তাদের ও সমাজের প্রভূত উন্নতি ঘটে। আজকের সমাজে দারিদ্র্য, অশিক্ষা, কুসংস্কার এখনো মানুষের মনে পাথরের মতো বদ্ধমূল। তাকে সমাজ থেকে সরাতে গেলে ছাত্রসমাজের ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে পড়ে।

v) সামাজিক দায়িত্বঃ 

সমাজ থেকে শুধু গ্রহণ করব, সমাজকে কিছু দেব না – এই  নিয়মে সমাজ চলতে পারে না । সম্ভাব্য সমস্ত উপায়ে সমাজের কাছে আজন্ম প্রাপ্ত সমস্ত ঋণ শোধ করতে হয়। সমাজ উন্নয়নের মতো বিস্তৃত ও উজ্জ্বল লক্ষ্যে প্রণোদিত হয়ে আর্ত মানুষের জন্য কিছু করা অর্থাৎ সমাজ সেবা করাই হল সামজের ঋণ শোষের উৎকৃষ্ট পথ।

শুধু পঠন-পাঠনের মধ্যেই সীমিত থাকা নয়। সমাজভাবনা থেকে দূরে পনিয়াও তার কাম্য নয়। জনকল্যাণমুখী কর্মধারার সঙ্গে যুক্ত হয়েই পঠন-পাঠন সম্পূর্ণ, যথার্থ হয়। নিরক্ষরতার অভিশাদে জনকল্যাণময়ীর। দারিদ্র্যের দুঃসহ পীড়নে কত জীবন বেদনা-নীল। গণমুখী কর্মধারায় সেই অভিশাপ মোচনেরই অঙ্গীকার। বেদনার অপসারণের মহান ব্রত। এই সমাজ-কল্যাণ যন্ত্রে ছাত্রদেরও এক গৌরবময় ভূমিকা থাকা বাঞ্ছনীয়।

vi) অন্যায়ের প্রতিবাদঃ 

যুগ যুগ ধরে সমাজের বুকে জমে ওঠে নানা অন্যায় অবিচার। কত শোষণ আর অত্যাচারে জর্জরিত হয়েছে সাধারণের জীবন। আজও হয়। ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতার আগুন জ্বলে ওঠে। কত জীবন সেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কত অকারণ রক্তের হোলিখেলায় মেতেছে মানুষ। প্রতিহিংসায় কত জীবন শেষ হয়ে গেছে।

ছাত্রসমাজ এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে। সমাজ-জীবনকে যারা প্রতিনিয়ত ভেজালে, নেশায়, হঠকারিতায় পঙ্গু, হীনবল করছে ছাত্রসমাজ সেখানে প্রবল প্রতিবাদ। দেশের স্বাধীনতার জন্যে তারা জীবন উৎসর্গ করে। ছাত্ররা কোন সঙ্কীর্ণতা, ক্ষুদ্রতাকে প্রশ্রয় দেয় না। মনুষ্যত্বের দীক্ষাই তাদের কাছে শ্রেষ্ঠ দীক্ষা ।

vii) উপসংহারঃ

শিক্ষার লক্ষ্যের অন্যতম দিক হল সমাজের সঙ্গে তার সংগতি স্থাপন। জীবনের সামগ্রিক দিকের উন্মোচন হল শিক্ষার লক্ষ্য। স্বামীজি তাই বলেছেন, ‘শিক্ষা হল মানবের, অন্তর্নিহিত সত্তার জাগরণ, যা সমাজসেবার মাধ্যমে ঘটতে পারে।‘ তাই ছাত্রসমাজকে শুধু পুঁথিগত শিক্ষা দিয়ে নয়, সত্যিকারের মানুষ করে গড়ে তুলতে গেলে সমাজ সেবার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

 


অন্যান্য রচনা পড়ুনঃ  

১.তোমার প্রিয় কবি রচনা | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২. ছাত্র জীবনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রচনা

৩. মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চা প্রবন্ধ রচনা

৪.একটি গাছ একটি প্রাণ রচনা

৫.পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা

৬.আধুনিক জীবন ও বিজ্ঞান- প্রবন্ধ রচনা

৭.একটি নদীর আত্মকথা- বাংলা প্রবন্ধ রচনা

৮.বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ রচনা

৯.প্রতিবেদন রচনা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

১০.বিজ্ঞান ও কুসংস্কার রচনা

১১.সাহিত্য পাঠের প্রয়োজনীয়তা রচনা

১২.পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা


 

Leave a comment