একাদশ শ্রেণী রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ

একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সেমিস্টার II- এর Unit -1: Key Concept Of Political Theory-এর  অন্তর্ভুক্ত  Law, Liberty , Equality , Justice, Separation Of Powers . একাদশ শ্রেণীর Political Science এই অধ্যায়ঃরাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ থেকে ৮ নম্বরের Descriptive প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে । তাই আজ আমরা Class 11 Political Science 1st Chapter থেকে ৮ নম্বরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নউত্তর আলোচনা করবো। একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় ৮ নম্বরের বড় প্রশ্ন উত্তর।  

WBCHSE Class 11 Political Science ,-এর এই পর্বে আমাদের আলোচ্য বিষয়ঃ একাদশ শ্রেণী রাষ্ট্রবিজ্ঞান | রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ বড় প্রশ্ন উত্তর । 

আমরা সহজ ও সংশ্লিষ্ট ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্বরূপ বিষয়গুলি উপস্থাপন করে থাকি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি ।পরবর্তীতে একাদশ শ্রেণীর আরও অন্যান্য বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব NOTES পেতে darsanshika.com পেজটিতে অবশ্যই Visit করুন।

রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ বড় প্রশ্ন
রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ বড় প্রশ্ন

 

একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান | দ্বিতীয় সেমিস্টার 

রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ বড় প্রশ্ন

 

প্রতিটি প্রশ্নের মান ৮: 

১. আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক আলোচনা করো।

অথবা

“আইন কী স্বাধীনতার শর্ত”– ব্যাখ্যা করো। 

 

সরকার আইন প্রণয়ন করে। তবে আইন যদি জনগণের স্বার্থে পরিপন্থী হয় তবে সেই আইন স্বাধীনতার পরিপন্থী হবে। আইন ও স্বাধীনতার প্রকৃত সম্পর্ক নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা একমত নন। অর্থাৎ বিষয়টি রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের কাছে খুবই বির্তকিত।

 (i) আইন ও স্বাধীনতার মধ্যে পার্থক্যের কারণঃ

আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতবাদের পার্থক্যের দুটি কারণ হল –

প্রথমত,

রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা একমত না। যারা রাষ্ট্রকে কল্যাণকারী রাষ্ট্র হিসাবে দেখেন তাদের মতে আইন ও স্বাধীনতা একে অপরের পরিপূরক রাষ্ট্রের আইনই স্বাধীনতা এক বিকশিত ও রক্ষা করে।

দ্বিতীয়ত,

আরেকদল রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মনে করেন রাষ্ট্রের আইন প্রয়োজন আছে কিন্তু তা ক্ষতি কর। যেমন মাকর্সবাদীরা মনে করেন রাষ্ট্র বিশেষ শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষার যন্ত্র। এক্ষেত্রে আইন সকলের স্বাধীনতার সহায়ক হতে পারে না।

সুতরাং, একদল রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মনে করেন আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ এবং আরেকদল রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মনে করেন আইন ও স্বাধীনতা সম্পর্ক পরস্পর বিরুদ্ধ। আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্কের দিকগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল –

 (ii) আইন স্বাধীনতার রক্ষকঃ

আইন স্বাধীনতাকে রক্ষা করে। প্রত্যেক মানুষের বাঁচার স্বাধীনতা রয়েছে। রাষ্ট্রের আইন আছে বলেই আমরা বাঁচার স্বাধীনতা ভোগ করি।

 (iii) আইন স্বাধীনতার অভিভাবকঃ

আমাদের অভিভাবকের আমাদের সকল বিপদ – আপদ থেকে যেমন রক্ষা করে, তেমনই রাষ্ট্রের আইন সর্বপ্রকার বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করে স্বাধীনতাকে রক্ষা করে।

 (iv) আইন স্বাধীনতা সৃষ্টি করেঃ

ইতিবাচক অর্থে আইন স্বাধীনতা সৃষ্টি করে। অধ্যাপক ল্যাসকি স্বাধীনতার অর্থে বলেছেন ব্যক্তির পরিপূর্ণ বিকাশের অনুকূল পরিবেশ। রাষ্ট্রের সৃষ্ট আধিকারের মাধ্যমে এই পরিবেশ সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্র আইন করেই এই অধিকার সৃষ্টি করে।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, আইন ব্যক্তির স্বাধীনতা রচনায় সাহায্যে করে, অধিকার সৃষ্টি ও সুরক্ষিত করে ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান করে। তাই আইন ও স্বাধীনতার মধ্যে কোনো বিরোধিতা নাই। বার্কার এর ভাষার – “ Liberty and low do not quarrel ”. 


 

২. সাম্য ও ন্যায়ের সম্পর্ক আলোচনা কর। 

অধ্যাপক ল্যাসকি বলেছেন স্বাধীনতার অর্থ “প্রতিটি ব্যক্তি যাতে আত্মবিকাশের সুযোগ পায় এমন পরিবেশকে রক্ষা করা।“ স্বাধীনতাকে বলা হয় ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশে আবশ্যকীয় সুযোগ সুবিধা এই সুযোগ সুবিধার দুটি প্রধান অস্ত্র হল সাম্য ও ন্যায়। তাই সাম্য ও ন্যায়ের সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সমাজে সাম্য না থাকলে যেমন প্রকৃত ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না, তেমনই প্রকৃত ন্যায় বিচারের সুযোগ না থাকলে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। অর্থাৎ সাম্য ও ন্যায় একে অপরের পরিপূরক।

(i) সাম্যের নীতি ও ন্যায়ঃ  

সাম্য নীতি সবসময় ন্যায় বিচারকে সুনিশ্চিত করতে পারে না। একটি দেশের বিপুল জনসংখ্যা যখন দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে তখন সাম্য নীতি প্রয়োগ করে সকলকে সমান অধিকার দেওয়া সম্ভব হয় না, এর ফলে সমাজে পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন জাতি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য বিশেষ কিছু বিষয়ে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

(ii)স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার ন্যায় ও সাম্যঃ   

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সাম্য বলতে বোঝায় সমস্ত বৈষম্যের অবসান। সাম্য ও ন্যায় অতপ্রোত ভাবে জড়িত। অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকলে কখনও ন্যায় থাকতে পারে না। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী  R.H টনির মতে  স্বাধীনতার বিকাশের জন্য সমান অধিকার ও সাম্য নীতির প্রয়োজন।

(iii) ব্যক্তি জীবনে সাম্য ও ন্যায়ঃ   

ব্যক্তি জীবনে সাম্য ও ন্যায় খুবই  তাৎপর্যপূর্ণ। অধ্যাপক ল্যাসকি বলেছেন ব্যক্তি জীবনে যোগ্যতা, গুণাবলী ও সামর্থ্যের  ভিত্তিতে পার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক কিন্তু প্রকৃতি গত দিক থেকে সমস্ত মানুষ সমান। কোনো সমাজ যদি প্রকৃতিগত দিক থেকে সকল মানুষকে সমান দেখে তাহলে বলতে হয় সেখানে সাম্যনীতি প্রয়োগ করা হয়েছে। আর যে সমাজে সাম্য নীতি অনুসরণ করা হয় সেখানে নিশ্চিত ভাবে ন্যায় নীতিও থাকে।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, সাম্য ও ন্যায়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এবং এই সম্পর্ক সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। সমাজে ন্যায় নীতি প্রতিষ্ঠাই হল মূল লক্ষ্য তাই ন্যায় ও সাম্য একে অপরের পরিপূরক।


প্রথম অধ্যায়ের অন্যান্য প্রশ্নউত্তর পড়ুনঃ    

একাদশ শ্রেণী রাষ্ট্রবিজ্ঞান | আইন কাকে বলে আইনের উৎস গুলি আলোচনা করো  |

Class 11 Political Science প্রথম অধ্যায়ঃ রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ ২ নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর |  


৩.  স্বাধীনতার সংজ্ঞা নিরূপণ করো এবং এর প্রকারভেদ আলোচনা করো ।

ইংরেজি লিবারটি (Liberty) শব্দের বাংলা অর্থ স্বাধীনতা। রাষ্ট্র বিজ্ঞানে স্বাধীনতা শব্দটি বহু বিতর্কিত বিষয়। আমাদের জীবনে স্বাধীনতার অতি তাৎপর্যপূর্ণ এইজন্য যে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা যুগ যুগ ধরে মানুষকে চালিত করে আসছে। অনেকে বলেছেন নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তির নাম স্বাধীনতা। অধ্যাপক ল্যাসকির মতে “স্বাধীনতার অর্থ প্রতিটি ব্যক্তি যাতে আত্মবিকাশের সুযোগ পায় এমন পরিবেশকে রক্ষা করা স্বাধীনতা অধিকারের দ্বারা সৃষ্টি হয়।”

(i) স্বাধীনতার প্রকারভেদ গুলি হলঃ

বিভিন্ন রাষ্ট্র বিজ্ঞানীগণ ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টি কোন থেকে স্বাধীনতা শব্দটিকে বিচারক বিশ্লেষণ করে তার বিভিন্ন প্রকারভেদ উল্লেখ করেছে।

(ii) ব্যক্তিগত স্বাধীনতাঃ

ব্যক্তি হিসাবে একজন মানুষ যে আইন সঙ্গত স্বাধীনতা ভোগ করে তাকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বলে। একে পৌর স্বাধীনতাও বলা হয়। জীবনের নিরাপত্তা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্পত্তির অধিকার এই স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত। ভারতবর্ষের এই অধিকার গুলি মৈলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত।

(iii) রাজনৈতিক স্বাধীনতাঃ 

একজন নাগরিক হিসাবে ব্যক্তি যে স্বাধীনতা ভোগ করে তাকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা বলে।

ভোটাধিকার, সরকার গঠন ও নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার। নির্বাচন ও নির্বাচিত হওয়ার অধিকার এই স্বাধীনতার অধিকার।

(iv) অর্থনৈতিক স্বাধীনতাঃ

ব্যক্তির শিক্ষা ও সামর্থ অনুযায়ী জীবিকা অর্জনের স্বাধীনতাকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলে। মানুষের যদি অভাব, অভিযোগ থাকে, সে যদি বেকার হয় তখন সেই সমাজ নিজেকে বিকশিত করতে পারে না, সেই জন্য দরকার অর্থনৈতিক স্বাধীনতা।

(v) সামাজিক স্বাধীনতাঃ

সমাজের বিবেক কতৃক স্বীকৃত, সামাজিক বিধি কতৃক সংরক্ষিত স্বাধীনতাই হল সামাজিক স্বাধীনতা। কিন্তু সমাজের বিবেক তথা ন্যায় নীতি বোধ যেহেতু অনির্দিষ্ট, অস্পষ্ট ও আপেক্ষিক সেহেতু স্বাধীনতার ধারণাও অনির্দিষ্ট  ও আপেক্ষিক হতে পারে।


৪. সাম্য কাকে বলে ? সাম্যের প্রকারভেদগুলি আলোচনা করো।

 

সাম্য কাকে বলেঃ 

সাম্য কথার অথ হল সমতা। আপাত দৃষ্টিতে সাম্য বলতে বোঝায় সকলেই সমান। সাম্যের দুটি অর্থ আছে একটি ইতিবাচক অর্থ এবং অন্যটি নেতিবাচক অর্থ। ইতিবাচক অর্থে সাম্যের অর্থ হল সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। নেতিবাচক অর্থে সাম্যের অর্থ হল বৈষম্যের অবসান।

সাম্যের বিভিন্ন রূপঃ

সাজ্যকে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা –

 (i) স্বাভাবিক সাম্যঃ

এটি সাম্যের সবচেয়ে পুরাতন ধারণা। প্রকৃতির রাজ্যে রুশো এই স্বাভাবিক সাম্যের কথা বলেছেন। এই তত্ত্বের মূল কথা হল জন্মগত ভাবে সব মানুষ সমান। প্রাচীন গ্রিসে শিশের স্টোইক প্রমুখ এই মতবাদের সমর্থক।

 (ii) সামাজিক সাম্যঃ

সামাজিক ক্ষেত্রে স্ত্রী – পুরুষ, জাত -পাত, শিক্ষাগত ভেদাভেদ দূর করে যে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে সামাজিক সাম্য বলে। অধ্যাপক বার্কার সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠাকে সামাজিক সাম্য বলে অভিহিত করেছেন।

 (iii) অর্থনৈতিক সাম্যঃ 

অর্থনৈতিক সাম্য হল আয়ও সম্পত্তির অধিকারের মধ্যে সমতা। আয়ের সমতা হল একই ধরনের কাজের জন্য সকলের আয় সমান হবে। একই ভাবে সম্পত্তির অধিকারের সমতা হল সম্পত্তি অর্জন ভোগ ও বিক্রয়ের স্বাধীনতা।

 (iv)  আইনগত সাম্যঃ 

আইনগত সাম্য হল আইনের চোখে সবাই সমান । এর অর্থ দু রকম। –

(ক)  আইনের ব্যক্তিতে ব্যক্তির কোনো ভেদাভেদ করবে না।

(খ)  আইন সবার অধিকার সমান ভাবে সংরক্ষিত করবে। কোনো ব্যক্তি আইনের উর্ধ্বে নয়, তাই প্রত্যেকটি ব্যক্তি সাধারণ আইনের অধীনে থাকবে।


৫. ক্ষমতার স্বতন্ত্রী করণ নীতির পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দাও।

 

সাধারণ অর্থে সরকারের তিনটি বিভাগ, যখন সম্পূর্ন স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তখন তাকে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ বলা হয়। ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সপক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি আছে।

ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সপক্ষে যুক্তিঃ

 (i) স্বৈরাচারীতা রোধঃ 

সরকারের তিনটি বিভাগ যদি স্বাধীনভাবে পৃথক পৃথক কাজ করতে পারে অর্থাৎ, কোনো বিভাগ যদি অন্য কোনো বিভাগের ক্ষমতা হস্তক্ষেপ না করে তাহলে কেউ স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারবে না।

 (ii) কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিঃ 

ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মাধ্যমে সরকারের তিনটি বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পায় তাহলে সামগ্রিক ভাবে একটি সরকারের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

 (iii) ন্যায় প্রতিষ্ঠাঃ 

বিচার বিভাগ যদি স্বাধীন ভাবে নিজের দায়িত্ব সম্পাদন করতে পারে তাহলে দেশের জনগণের ন্যায় প্রাপ্তী সুনিশ্চিত হয়।

 (iv) গণতন্ত্র রক্ষাঃ  

ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি থাকলে দেশের গণতন্ত্র রক্ষিত হয়। কারণ এই নীতির দ্বারা গণতন্ত্র বিরোধী কার্যকলাপকে রোধ করা যায়।

ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বিপক্ষেঃ  

19 শতকের প্রথম দিকে ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচনাগুলি হল –

 (i) বাস্তবে প্রয়োগ অসম্ভব 

সমালোচকদের মতে,ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বাস্তবে পূর্ণ প্রয়োগ করা যায় না কারণ আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের 3 টি বিভাগ। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সরকার পরিচালিত হয়।

 (ii) স্বাধীনতার রক্ষা কবচ নয়ঃ 

গিলক্রিস্ট, স্যাবাইন প্রমুখ আধুনিক রাষ্ট্র বিজ্ঞানী জন ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিকে স্বাধীনতার রক্ষা কবচ বলে স্বীকার করেননি কারণ আইন বিভাগ যদি স্বৈরাচারী হয় তার দ্বারা প্রনীত আইন কার্যকর করতে শাসন বিভাগ যেমন বাধ্য থাকে, তেমনই বিচার বিভাগও বাধ্য থাকে।

 (iii) সমাজতন্ত্রবাদীদের সমালোচনাঃ 

সমাজতন্ত্রবাদীদের মতে প্রতিটি সরকার একটি বিশেষ শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করে। তাই বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে স্বতন্ত্রীকরণ নীতি থাকলে প্রতিটি বিভাগ প্রভুত্বকারী হয়ে ওঠে।

 (iv) মাকস্‌বাদীদের সমালোচনা 

মাকস্‌বাদীদের মতে, অসমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকার যেহেতু বিশেষ শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করে তাই সরকারের প্রত্যেকটি বিভাগ শ্রেণী স্বার্থ অবশ্যই সংরক্ষণ করবে। তাই এই নীতি গ্রহণ যোগ্য নয়।

পরিশেষে বলা যায়, আধুনিক কালে ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির গুরুত্ব পূর্বের তুলনায় অনেক কমে গেছে। এর সত্ত্বেও এই তত্ত্বকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা যায় না। তাহলে সরকার স্বৈরাচারী হয়ে পড়ে।

 


 একাদশ শ্রেণীর আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পড়ুনঃ


 

Leave a comment