বৈদিক সাহিত্য | অথর্ববেদ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর

একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টারের  সিলেবাস অনুযায়ী  সংস্কৃতের গুরুত্বপূর্ণ  অংশগুলির একটি হল- বৈদিক সাহিত্য । বৈদিক সাহিত্যের ঋক , সাম, যজুঃ, অথর্ব , এই চারটি বেদ থেকে আমরা বৈদিক যুগের নানা সভ্যতা , সংস্কৃতির তথ্য জানতে পারি ।

একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য আজকের এই পর্বে বৈদিক সাহিত্যের ইতিহাসে অথর্ববেদের  সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি । এই  অধ্যায় থেকে ছাত্রছাত্রীদের  ২ নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে ।

আগত পরীক্ষার জন্য আলোচ্য এই সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর গুলি তোমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । বৈদিক সাহিত্য SAQ প্রশ্নউত্তর , class 11 WBHSE ।   

  class 11 Sanskrit –এর ছাত্রছাত্রীদের  সুবিধার্থে  আজকের এই  উপস্থাপনার আলোচ্য বিষয়-বৈদিক সাহিত্য | অথর্ববেদ | 2 নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর | একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত | 

বৈদিক সাহিত্য | অথর্ববেদ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর।
বৈদিক সাহিত্য | অথর্ববেদ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর |

একাদশ শ্রেণী | দ্বিতীয় সেমিস্টার 

বৈদিক সাহিত্য | অথর্ববেদ 

 সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

Short question marks 2:-   

১. অথর্ববেদের প্রাচীন নাম  কি ?

উত্তরঃ  অথর্ববেদের প্রাচীন নাম অথর্বাঙ্গিরস। অথর্ব+ আঙ্গিরস= অর্থবাঙ্গিরস। অথর্ব-ভেষজবিদ্যা, শান্তি ও পৌষ্টিক প্রভৃতি মাজ্ঞলিক  ক্রিয়া ।

২. অথর্ববেদের অপর দুটি নাম লেখ ?

উত্তরঃ অথর্ববেদের অপর দুটি নাম –

(১) ভূথাঙ্গিরস (ভৃগু খঋষিগণ অগ্নিদেবতার উপাসক)।

(২) ব্রহ্মবেদ (ব্রহ্মা নামক পুরোহিতদের মন্ত্র)।

৩.অথর্ববেদের কটি শাখা ও কি কি ?

উত্তরঃ সাধারণত ৯টি শাখার উল্লেখ পেলেও বর্তমানে দুটি শাখা পাওয়া যায় যেমন- (১) শৌনকীয় (২) পৈপ্পলাদ।

৪. অথর্ববেদের গঠন বিন্যাস উল্লেখ করো ।

উত্তরঃ অথর্ববেদে ২০টি কান্ড, ৩৮টি প্রপাঠক, ৯০টি অনুবাক, ৭৩১টি সূক্ত এবং প্রায় ৬০০০ মন্ত্র আছে।

৫. ত্রয়ী বা ত্রয়ীবিদ্যা কাকে বলে এবং কেন বলে ?

উত্তরঃ ঋক্, সাম ও যজুঃ এই তিন বেদকে ত্রয়ী বা ত্রয়ীবিদ্যা বলা হয়। কারণ-

(i) এই তিনটি বেদ যজ্ঞের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

(ii) অথর্ববেদ তিন বেদ থেকে অর্বাচীন। কৌটিল্য ত্রয়ী বলতে তিন বেদকে বুঝিয়েছেন।

(iii) অপর মতে-ত্রয়ী বলতে ঋক্, সাম, যজুঃ- ত্রিবিধ মন্ত্রের কথা বলা হয়েছে।


আরো পড়ুন – 

Related Post :  একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত | বৈদিক সাহিত্য | যজুর্বেদের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর  


৬. অথর্ববেদ কবে রচিত হয় ?

উত্তরঃ ঋগ্বেদের অনেক মন্ত্র, ভাষা, ছন্দ অথর্ববেদে গৃহীত হয়েছে। অতএব ঋগ্বেদের পরই অথর্ববেদ রচিত হয়। অনেকে বলেন অথর্ববেদের রচনাকাল ১৯০০- ৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।

৭. অর্থববেদের কল্পসূত্রগুলিকে কটি ভাগে ভাগ করা যায় কি কি ?

উত্তরঃ অর্থববেদের কল্পসূত্রগুলিকে চারভাগে ভাগ করা যায়-

(১) শ্রৌতসূত্র- বৈতান

(২) গৃহ্যসূত্র – কৌশিক

(৩) ধর্মসূত্র- পঠিনসী

(৪) শৃঙ্খসূত্র- নেই।

৮. অথর্ববেদের বিষয়বস্তু কি ?

উত্তরঃ বিষয়বস্তুর দিক থেকে অথর্ববেদের মন্ত্রগুলিকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়-

(১) ভৈষজ্য মন্ত্র, (২) আয়ুষ্যমন্ত্র, (৩) পৌষ্টিকমন্ত্র, (৪) প্রায়শ্চিত্ত মন্ত্র,

(৫) স্ত্রীকর্মজনিত মন্ত্র, (৬) অভিচারমন্ত্র, (৭) সৃষ্টিতত্ত্ব বিষয়ক মন্ত্র,

(৮) পিশাচাদির প্রভাব নিবারণমূলক মন্ত্র, (৯) অশান্তি নিরোধক মন্ত্র,

(১০) কামনাপূর্তির মন্ত্র, (১১) রাজকর্ম বিষয়ক, (১২) যাজ্ঞিক মন্ত্র, (১৩) কুন্তাপ মন্ত্র এবং (১৪) দার্শনিক মন্ত্র।

৯. বিষ্ণুপুরাণে অথর্ববেদকে কটি খণ্ডে ভাগ করা হয়েছে কি কি ?

উত্তরঃ বিষ্ণুপুরাণে অথর্ববেদকে ৫টি খণ্ডে ৫ প্রকার বিষয় আলোচনা করেছেন, যেমন-

(১) নক্ষত্রকল্প- নক্ষত্রাদি পূজা আলোচনা।

(২) বেদকল্প -বৈতানিক ব্রহ্মত্বাদির বিবরণ ।

(৩) শান্তিকল্প- আঠারো প্রকারের মহাশান্তির নিয়ম।

(৪) সংহিতাকল্প- সাধারণ বেদমন্ত্র সংকলন ।

(৫) আঙ্গিরসকল্প- নানারকম অভিচারের নিয়মকানুন।

১০. অথর্ববেদে ভারতীয় সমাজব্যবস্থার চিত্র কি রূপ ছিল ?

উত্তরঃ পরিবার প্রথাই ছিল অথর্ববেদকালীন ভারতীয় সমাজব্যবস্থার ভিত্তিস্বরূপ। যেমন-

(১) পিতা বা পারিবারিক প্রধানের ক্ষমতা ছিল স্বৈরাচারীর মতো। গৃহপতিরা ব্যস্ত থাকতেন কৃষিকাজে।

(২) বাড়ির কাজে সর্বময় কর্ত্রী ছিলেন গৃহপত্নী।

(৩) বিবাহ ছিল সমাজজীবনের এক পবিত্রতম অনুষ্ঠান।

(৪) নারীর বহুবিবাহের প্রমাণ পাই ।

(৫) সতীদাহের প্রচলন ছিল ।

১১. অথর্ববেদের যুগে প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসাবিদ্যা কি রূপ ছিল ?

উত্তরঃ প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসাবিদ চরক ও সুশ্রুত অথর্ববেদের নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়ে ভৈষজ মন্ত্রগুলির উল্লেখ করা যায়। অথর্ববেদের সমাজ রসায়নবিদ্যা, শারীরবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যার পারদর্শিতা দেখিয়েছে।আর্যবান পুরোহিত ভারতীয়  চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক। শারীরবিদ্যার অঙ্গরূপে অস্থি ও শল্যচিকিৎসা এবং ঔষধরূপে নানাবিধ রসায়নও লতাগুল্মের ব্যবহার ছিল।

১২. কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রের জনক কাকে বলে, কেন বলে ?

উত্তরঃ অথর্ববেদকে বলা হয় কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রের জনক। কারণ এই বেদে   রাজা ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় বিষয়, রাজস্ব আদায়, জনগণের দ্বারা রাজা নির্বাচন, রাজ্যবিস্তার, শত্রুবিনাশ প্রভৃতির পরিচয় পাওয়া যায়।

১৩. ব্রাতশব্দের অর্থ কি ? ব্রাত্যকাণ্ড‘ কি ?

উত্তরঃ ‘ব্রাত’ শব্দের অর্থ যাযাবর গোষ্ঠী। এঁরা শিবের উপাসক। শুধু হই -এঁরা বিদ্বান, মহাধিকারী, পুণ্যবান, সকল বিশ্বের মান্য এবং সন্ন্যাসী। ব্রাত্যকাণ্ড অথর্ববেদের একটি উল্লেখযোগ্য কাণ্ড । অথর্ববেদের ১৫ কাণ্ডটি ‘ব্রাত্যকাণ্ড’ নামে খ্যাত।

১৪. অথর্ববেদের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ ।

উত্তরঃ অথর্ববেদের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়-

যেমন- (১) অথর্ববেদ গৃহ্যসূত্রগুলির জনক।

(২) ভারতী জাদু বিদ্যার মূল এখানে খুঁজে পাওয়া  যায় ।

(৩) সাধারণ জনগণের সরল ও কুসংস্কারপূর্ণ  বিশ্বাস প্রতিফলিত ।

(৪) প্রাচীন আর্যদেররঐতিহ্য ও রীতিনীতি ও ভাবধারা বোঝার পক্ষে অথর্ববেদ অপরিহার্য।

(৫) ১৫ ও ১৬ কান্ডের ভাষা ব্রাহ্মণের মতো গদ্যময়।

১৫. অথর্ববেদের গুরুত্বগুলি লেখ ।

উত্তরঃ অথর্ববেদের উপযোগিতা বা প্রয়োজনীয়তা অনেক রয়েছে, যেমন-

(১) ভারতীয় ভৈষজ্য ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসে অথর্ববেদের স্থান গুরুত্বপূর্ণ।

(২)মানবজীবনের বাস্তব ও ধর্মীয় চেতনার অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে।

(৩) আর্য ও অনার্য সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র।

(৪) ঋগ্বেদের পরবর্তীযুগ থেকে ব্রাহ্মণসমূহের পূর্বকাল পর্যন্ত ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির দলিল হল অথর্ববেদ।

(৫) ভাষা ও ব্যাকরণের দিক থেকে বিশেষত শব্দভাণ্ডারের দিক থেকে অথর্ববেদের গুরুত্ব অপরিসীম।


অন্যান্য বিষয় আরো পড়ুন:  


 

Leave a comment