প্রিয় পাঠক আজকের পর্বে Class 12 Political Science- এর একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন আজকে আলোচনা করতে চলেছি। প্রশ্নটি হল- এক কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি। Class 12 Political Science Notes যারা খুঁজছ তাদের জন্য এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। Class 12 Political Science Question Answer এর মধ্যে যে প্রশ্নটি আলোচনা করা হল তা হল-এক কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি আলোচনা করো।
এক কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি।Arguments Against Unicameral Legislature
ভূমিকাঃ
আইনসভা এককক্ষ বিশিষ্ট অথবা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট হওয়া উচিৎ। এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে মত বিরোধ তৈরি হয়েছে। বেন্থাম, ল্যাস্কি, ফ্রাস্ক্লিণ প্রমুখও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার স্বপক্ষে কিছু যুক্তি দিয়েছেন।
স্বপক্ষে যুক্তিঃ
১. দায়িত্ব নির্ধারণ
এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা নিজের কার্যাবলীর জন্য একক ভাবে দায়ী থাকে বলে, দায়িত্বের সঠিক অবস্থান নির্ধারণ করা যায়। তাই জন প্রতিনিধিরা সর্বদা জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে। এর ফলে জনকল্যাণকর আইন গৃহীত হয়।
২. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ
এককক্ষ বিশিষ্ট আইন সভায় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। কারণ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা থাকলে একটি কক্ষ যে সিদ্ধান্ত নেয়, অন্য কক্ষ তা মানতে সম্মত নাও হতে পারে । এর ফলে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়।
৩. ঐক্য ইচ্ছার প্রকাশঃ
আইন হল জনগণের ইচ্ছার প্রকাশ। একই আইন সম্পর্কে জনগণের দুই ধরণের ইচ্ছা থাকতে পারে না। তাছাড়া দুই ধরণের ইচ্ছা থাকলেও তা প্রকাশের জন্য আইনসভার একটি কক্ষই যথেষ্ঠ।
৪. সুচিন্তিত আইন প্রণয়নঃ
এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভায় যেকোনো বিলকে আইনে পরিণত করতে গেলে কয়েকটি পর্যায় অতিক্রম করতে হয়। বিলটির উপর আইন সভার তর্কবিতর্ক চলে। ফলে বিলটির পক্ষে ও বিপক্ষে সহজে জনমত গঠিত পারে এবং সংখ্যা গরিষ্ঠের সমর্থন নিয়ে বিলটি সুচিন্তিত আইনে পরিণত হয়।
৫. অপচয়মূলক নয়ঃ
এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা অপচয় মূলক নয়। কারণ এই কক্ষ কেবল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই গঠিত হয়। একটি কক্ষ থাকার কারণে পক্ষের সদস্যদের বিপুল যেতনা অপচয় হয় না। এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা থাকলে এই অর্থ দেশের উন্নয়ণ ও জনগণের কল্যাণে ব্যয় হতে পারে।
বিপক্ষে যুক্তিঃ
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার সমর্থকেরা এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার বিপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন যুক্তি গুলি হল –
১.স্বৈরাচারী আইনঃ
আইনসভা এককক্ষ বিশিষ্ট হলে স্বৈ রাচারী আইন প্রণয়নের সম্ভাবনা থাকে। আইনসভার উচ্চ কক্ষ না থাকলে এককক্ষ নিজের মতো করে প্রণয়ন করতে পারে। এর ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে ।
২. সুচিন্তিত আইন প্রণয়ন অসম্ভবঃ
এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা কখনোই সুচিন্তিত ও জনকল্যাণ কর আইন প্রণয়ন করতে পারে না এইরূপ আইনসভা সাময়িক উত্তেজনা কিংবা জনমতের চাপে জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী আইন প্রণয়নে সক্ষম হয়।
৩. সংখ্যালঘু স্বার্থের পরিপন্থীঃ
এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রতক্ষ নির্বাচিত ভিত্তিক হওয়ার ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইনসভার প্রতিনিধি প্রেরণ করতে পারে না। তাই আইনসভায় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি না থাকায় তাদের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়।
৪. যুক্ত রাষ্ট্রীয় শাসনের অনুপযোগীঃ
এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভায় আঞ্চলিক স্বার্থের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয় না। তাই তাকে যুক্ত রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা অনুপযোগী বলা হয়
৫. রাজনৈতিক শিক্ষার অভাবঃ
এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভায় আইন প্রণয়নের সময় আলাপ আলোচনা ও তর্কবিতর্ক হয় না বললেই চলে। এর ফলে আইনসভার সংখ্যা গরিষ্ঠ এক একটি সদস্য এক একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে পরিগঠিত হয়। এর ফলে জনসাধারণের রাজনৈতিক জ্ঞানের বিকাশ হয় না।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায়, এককক্ষ বিশিষ্ট সভার স্বপক্ষে ও বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি থাকলেও এককথা অস্বীকার করা যায় না যে, বিশ্বের রাষ্ট্র সমূহের মধ্যে 50% এর বেশি রাষ্ট্র এককক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা রয়েছে। সেইগুলির মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল – নেপাল , বাংলাদেশ , উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক , নিউজিল্যান্ড ইত্যাদি।
Thanks for Reading-এক কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি
প্রশ্ন উত্তর
১. এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার সমর্থক কে ?
উত্তর – এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার সমর্থক লাস্কি, ফ্রাস্ক্লিণ প্রমুখও ।
আরো পড়ুন