আমরা আজকে এই অংশে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন উত্তর এর আলোচনা করব। বিশেষ করে এটি class 12 political science এর ছাত্রছাত্রীদের জন্য। প্রশ্নটি হল –রাষ্ট্রবিজ্ঞান কি বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করো। উচ্চমাধ্যমিকের যেসব ছাত্রছাত্রী class 12 political science notes অনুসন্ধান করছো তাদের জন্য উপযুক্ত একটি ক্লাস নোটস। class 12 political science
রাষ্ট্রবিজ্ঞান কি বিজ্ঞান পদবাচ্য ব্যাখ্যা করো
রাষ্ট্রবিজ্ঞাকে বিজ্ঞান বলা যায় কিনা এই প্রশ্নটির সমাধান হওয়া দরকার । কারণ এর উপরে ভিত্তি করেই রাষ্ট্রবিজ্ঞান নামের সার্থকতা। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান কিনা এই প্রশ্ন নিয়ে রাষ্টবিজ্ঞানীরা দ্বিবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক অ্যারিস্টটল সর্ব প্রথম রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে সর্বোচ্চ বিজ্ঞান বলে অভিহিত করেছিলেন।
সপক্ষে যুক্তি
ইংরেজ দার্শনিক টমাস হবস, ফরাসিচিন্তা নায়ক ভ্লতেয়ার, ইংরেজ চিন্তাবিদ বেন্থাম ও হার্বাট স্পেনসার প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের পর্যায়ে উন্নিত করেছেন। এদের যুক্তি গুলি হল –
১. সুসংবদ্ধ জ্ঞান অর্জন
অন্যান্য বিজ্ঞানের মতো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পর্যবেক্ষন অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে নাগরিকদের আচার-আচরন সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা যায়।
২. ধারাবাহিকতা
রাষ্ট্রবিজ্ঞান জন্মলগ্ন থেকে অনেক স্তর অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে। বিষয়বস্তুর এই ধারাবাহিকতার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ম্যাকিয়াভেলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলেছেন।
৩. বিজ্ঞান বিশ্লেষণ মূলক
বিজ্ঞানের অনেক কিছুই বিশ্লেষণ মূলক অর্থাৎ যুক্তি নির্ভর। রাষ্ট্রবিজ্ঞানকেও বিশ্লেষণ করা যায় তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলতে বাধা নেই।
৪. সাধারণ সূত্র প্রতিষ্ঠা
যে নিয়ম বা সূত্রগুলি রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে প্রযুক্ত হতে পারে তা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জ্ঞান থেকেই প্রতিষ্ঠা করা যায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লর্ড ব্রাইস বলেছেন – “মানুষের আচার-আচরণ জটিল হলেও তার মধ্যে একটা সামঞ্জস্য লক্ষ করা যায়”।
৫. তত্ত্ব ও তথ্যের গুরুত্ব
সমাজ বিজ্ঞানের একটি বিশেষ স্তরে রাষ্ট্র কেন জন্মলাভ করেছিল তা শুধু তত্ত্বের সাহায্যে গ্রহণ করা হয়নি, ঐতিহাসিক সাক্ষ প্রামানের ও সাহায্য গ্রহণ করা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে কার্ল মার্কস ও এঙ্গেলস-এর ঐতিহাসিক চিন্তা ভাবনা গুরুত্বপূর্ন।
বিপক্ষে যুক্তি
আচরণবাদী বিজ্ঞানী কোঁৎ প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলতে সম্মত নন। এদের যুক্তি গুলি গুলি হল –
১. বিষয়বস্তুর ব্যাপকতা
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ব্যাপক, জটিল ও অনিশ্চিত। পদার্থবিদ্যা বা রসায়ন বিদ্যায় যেভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষন চলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তা সম্ভব নয়।
২. ধারাবাহিকতার অভাব
বিজ্ঞানের আলোচনায় যে ধারাবাহিকতা লক্ষ করা যায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তার অভাব রয়েছে।
৩. অনেক বেশি তত্ত্ব নির্ভর
বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা তত্ত্ব ও তথ্যকে সমান গুরুত্ব দেয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক অনুশীলন অপেক্ষা দার্শনিক চিন্তা ভাবনাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
৪. বৈজ্ঞানীক পদ্ধতি নির্ভর নয়
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পক্ষে পরীক্ষামূলক পদ্ধতি অনুসরণ করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞানে যেমন একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি দিয়ে গবেষনা করা যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তেমন নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই।
উপসংহার
এইসব যুক্তি দিয়ে অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলতে সম্মত নয়। তবে আধুনিক কালে মানুষের সমাজজীবন সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক আলোচনা রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের পক্ষে সহজতর হয়েছে। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে একটি প্রগতিশীল বিজ্ঞান বলা যায়।
Thanks For Reading: রাষ্ট্রবিজ্ঞান কি বিজ্ঞান পদবাচ্য ব্যাখ্যা করো।class 12 political science question answer
আরো পড়ুনঃ
1. রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধি সম্পর্কে আলোচনা করো।
২. চার্বাক দর্শন বড় প্রশ্ন উত্তর
৩. আইনের সংজ্ঞা দাও | এর বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী