প্রিয় পাঠক আজকের পর্বে BA Education / Class 11 Education এর একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন আজকে আলোচনা করতে চলেছি। প্রশ্নটি হল-প্রথাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্য | Class 11 Education/ BA Education honours/ BA Education General এর যেসব ছাত্র ছাত্রী, যারা BA Education Semester-1 এর notes খুঁজছ তাদের জন্য এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। Education এর যেসব ছাত্র ছাত্রী রয়েছ তাদের উপকারে এলে আমাদের পরিশ্রম সফল হবে।
প্রথাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্য লেখ| The Characteristics of Formal Education
প্রথাগত বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা (Formal Education):
ভূমিকা:
যে শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী থাকে এবং যে পাঠক্রমকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করতে হয় তাকে প্রথাগত বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা বলে। প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার চারটি প্রধান উপাদান থাকে। যথা – শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পাঠক্রম এবং শিক্ষালয়।
এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থায় সর্বদাই একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই চলতে হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষালয়ে পৌঁছাতে হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিক্ষককে পাঠক্রম সম্পূর্ণ করতে হয়। সুতরাং নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা হল সমাজে সচেতনভাবে প্রতিষ্ঠিত একটি শিক্ষামাধ্যম, যেখানে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দিক দিয়ে নিয়মসম্মতভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রথাগত বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার বৈশিষ্ট্যঃ
প্রথাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে এই শিক্ষা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়। বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
(i) সামাজিক চাহিদা:
এই শিক্ষা সমাজের পরিবর্তনশীল চাহিদার উপর নির্ভরশীল, কারণ সমাজের প্রগতি এই শিক্ষার একমাত্র লক্ষ্য। সমাজের প্রগতি একমাত্র লক্ষ্য-এর দিকে পরিচালিত হয়ে থাকে এই শিক্ষা ব্যবস্থা ।
(ii) নির্দিষ্ট স্থান:
এই শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি নির্দিষ্ট শিক্ষালয় থাকে,যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজে এসে শিক্ষা গ্রহণ করে। যেমন- প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় , প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ব বিদ্যালয় ।
(iii) নির্দিষ্ট পাঠক্রম:
প্রতিটি শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একটি নির্দিষ্ট পূর্ব নির্ধারিত পাঠক্রম থাকে, যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে হয়।
(iv) নিয়মানুবর্তিতা:
এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থায় সর্বদাই একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই চলতে হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষালয়ে পৌঁছাতে হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিক্ষককে পাঠক্রম সম্পূর্ণ করতে হয়।
(v) জ্ঞান অর্জন:
এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থায় পূর্ব নির্ধারিত পাঠক্রম অনুযায়ী, নিয়ম মেনেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় । নিয়মিত পরীক্ষা এই শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্যে । যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে ।
(vi) শিক্ষক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক:
এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি ধনাত্মক সম্পর্ক অর্থাৎ প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকে। শিক্ষক যেমন শিক্ষার্থী সম্পর্কে সচেতন থাকে, শিক্ষার্থীরাও ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষকদের সাথে পরিচয় থাকে।
(vii) মাধ্যম:
বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় , আলোচনা সভা – এই ধরণের শিক্ষার মাধ্যমে যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা নিয়মভিত্তিক পরীক্ষা্র মাধ্যমে সফলতা অর্জন করে ।
(viii) দক্ষ শিক্ষক:
এই ধরণের শিক্ষা পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় জ্ঞান দক্ষতা সরবরাহের জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের প্রয়োজন হয় । দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের উপস্থিতি এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও সমৃধ করেছে ।
(xi) শিক্ষার্থীর নির্দিষ্ট বয়স:
প্রথাগত শিক্ষার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী নিদিষ্ট স্তরে যোগ দিতে পারে , যেমন – ৩ বছর বয়সে প্রাক প্রাথমিক, ৫ বছর বয়স হল হলে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষালয়ে যোগ দিতে পারে ।
(x) ব্যক্তি সত্তার বিকাশ:
এই শিক্ষার সাহায্যে শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ ব্যক্তি সত্তার বিকাশ সম্ভব হয়। বর্তমান জটিল পরিস্থিতিতে জ্ঞান ও দক্ষ তা সরবরাহের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে জীবনযাপনের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে ।
উপসংহার:
সুতরাং , প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থা সর্বদাই পূর্ব নির্ধারিত ও সুচিন্তিত মতবাদের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। যা শিক্ষার্থীর পরিপূরনতা, ও জ্ঞান অর্জনে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করে ।
আরো পড়ুন
- প্রকল্প প্রদ্ধতি কাকে বলে ও ধাপ গুলি কি কি
- শিশুর বিকাশে পরিবেশ বংশগতির প্রভাব আলোচনা
- সংকীর্ণ ও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার পার্থক্য
- শিক্ষা শব্দের অর্থ | শিক্ষার কার্যাবলী আলোচনা
- পাঠক্রম কী | পাঠক্রমের নির্ধারক গুলি কি কি
- সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর প্রকারভেদ
- শিক্ষাক্ষেত্রে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর গুরুত্ব
- মুক্ত শৃঙ্খলা বলতে কী বোঝ।বিশৃঙ্খলার কারণ
- অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে পরিবারের ভূমিকা
- কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য লেখ
প্রশ্ন উত্তর
১।প্রথাগত শিক্ষা কি ?
উত্তরঃ যে শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী থাকে এবং যে পাঠক্রমকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করতে হয় তাকে প্রথাগত বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা বলে।
২। প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার উপাদানগুলি কি কি ?
উত্তরঃ প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার চারটি প্রধান উপাদান থাকে। যথা – শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পাঠক্রম এবং শিক্ষালয়।
৩। প্রথাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্য লেখ ।
উত্তরঃ প্রথাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্য – i) এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থায় সর্বদাই একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই চলতে হয়
ii) শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী নিদিষ্ট স্তরে যোগ দিতে পারে ।
iii) নিয়মিত পরীক্ষা এই শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্যে ।