ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস ছাত্রছাত্রীদের জন্য আমাদের বিশেষ উপস্থাপনা – ইতিহাসের ধারণা প্রশ্ন উত্তর । পাঠ্য থেকে ১ ও ২ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আজকের এই উপস্থাপনা । আশা করি , ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের ছাত্রছাত্রীরা খুবই উপকৃত হবে।

ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারণা
ইতিহাসের ধারণা ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
১. ইতিহাস কি ?
উত্তরঃ ইতিহাস হল পুরনো দিনের মানুষের কথা ।
২. মরুভূমির জাহাজ কাকে বলে ?
উত্তরঃ উটকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয় ।
৩. সমতল অঞ্চলের কীসের চাষ বেশী হয় ?
উত্তরঃ সমতল অঞ্চলে ধানের চাষ বেশী হয় ।
৪. রাজস্থানের লোকেরা কি ধরনের খাবার খায় ?
উত্তরঃ রাজস্থানের লোকেরা রুটি জাতীয় খাবার খায় ।
৫. পশ্চিমবঙ্গের যানবাহনের ইতিহাসে কীসের কথা আছে ?
উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গের যানবাহনের ইতিহাসে নৌকার কথা আছে ।
৬. মানুষের ইতিহাস ও ঐতিহাসিক কাজকর্ম কীসের উপর নির্ভর করে ?
উত্তরঃ মানুষের ইতিহাস ও ঐতিহাসিক কাজকর্ম তার ভূগোলিক পরিবেশের উপর নির্ভর করে ।
৭. অতীতে ভারতীয় উপমহাদেশকে কি বলা হত ?
উত্তরঃ অতীতে ভারতীয় উপমহাদেশকে ভারতবর্ষ বলা হত ।
৮. ভরত শব্দের অর্থ কি ?
উত্তরঃ ভরত শব্দের অর্থ ভরতের বংশধর ।
৯. প্রথম মানুষ কোথায় বাসস্থান গড়ে তুলেছিল ?
উত্তরঃ প্রথম মানুষ নদীর ধারে বাসস্থান গড়ে তুলেছিল ।
১০. যুগ বলতে কি বোঝ ?
উত্তরঃ হাজার হাজার বছর বলতে মানুষ যুগ শব্দটির ব্যবহার করত । সাধারণত অনেক লম্বা একটা সময়কে যুগ বলা হয় ।
১১. ধাতুর ব্যবহার অনুসারে যুগ কয় প্রকার কি কি ?
উত্তরঃ ধাতুর ব্যবহার অনুসারে যুগ তিন প্রকার – (i) তাম্র যুগ (ii) ব্রোঞ্জ যুগ (iii) লৌহ যুগ ।
১২. ধাতুর যুগ কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ যে সময় মানুষ তামা, ব্রোঞ্জ , লোহা এইসব ধাতুর ব্যবহার শিখল । সেই সময়টাকে ধাতুর যুগ বলা হয় ।
১৩. লৌহ যুগ কাকে বলে ?
উত্তরঃ ইতিহাসের যে সময় মানুষ লোহার ব্যবহার শিখল, লোহার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে শিখল তাকেই বলে লৌহ যুগ ।
১৪. আর্যবর্ত কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ সাধারণত ভারতবর্ষের উত্তর অংশে আর্যরা বসবাস করত । তাই ভারতবর্ষের উত্তরাঞ্চলে বলা হয় আর্যবর্ত ।
১৫. দাক্ষিণাত্য বলতে কোন অঞ্চলকে বোঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ ভারতবর্ষের দক্ষিণভাগ যেখানে আর্যদের কোন প্রভাব ছিল না , বিন্ধ পর্বত থেকে কন্যাকুমারী অঞ্চল ছিল দাক্ষিণাত্য অঞ্চল ।
১৬. ভারতবর্ষের কোন অঞ্চলকে দ্রাবিড় দেশ বলা হয় ?
উত্তরঃ কাবেরী নদীর দক্ষিণে দ্রাবিড় জাতির বসবাস ছিল তাই ওই অংশকে দ্রাবিড় দেশ বলা হয় ।
১৭. ইতিহাসের সময়কালকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয় ?
উত্তরঃ ইতিহাসের সময়কালকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয় ।
১৮. ঐতিহাসিক যুগ কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে সময়ের লেখা পাওয়া যায় ও পড়া যায় তাকে ঐতিহাসিক যুগ বলে ।
১৯. কনিষ্কাব্দ কি ?
উত্তরঃ কুষান সম্রাট কনিষ্ক নতুন অব্দ গোনার প্রচলন করেন তাই সেই অব্দকে কনিষ্ক অব্দ বলে ।
২০. কোন সময় থেকে হর্ষাব্দ গণনা চালু হয় ?
উত্তরঃ ৬০৬ খ্রিস্টাব্দ হর্ষবর্ধন রাজা হওয়ার সময় থেকে হর্ষাব্দ গণনা চালু হয় ।
২১. খ্রিস্টাব্দ বলতে কি বোঝ ?
উত্তরঃযিশু খ্রিস্টের জন্মকে ধরে যে অব্দ গণনা শুরু হয় তাকেই খ্রিস্টাব্দ (খ্রিস্ত+অব্দ) ।
২২. খ্রিস্টপূর্বাব্দ কাকে বলে ?
উত্তরঃ যিশুর জন্মের আগের সময়কে বলা হয় খ্রিস্ট-পূর্বাব্দ ।
২৩. প্রথম শতক বলতে কি বোঝ ?
উত্তরঃ যিশুর জন্ম থেকে প্রথম ১০০ বছরকে বলে খ্রিস্টীয় প্রথম শতক ।
২৪. দশক কথাটি কখন ব্যবহার করা হয় ?
উত্তরঃ দশ বছর একসঙ্গে বোঝাতে দশক কথাটি ব্যবহার করা হয় ।
২৫. সহস্রাব্দ বলতে কি বোঝ ?
উত্তরঃ হাজার অব্দকে একসঙ্গে সহস্রাব্দ বলা হয় (সহস্র+অব্দ) ।
২৬. প্রত্নতাত্ত্বিক কথার অর্থ কি ?
উত্তরঃ প্রত্নতাত্ত্বিক কথার অর্থ পুরোনো দিনের মানুষ নয় ।
২৭. প্রত্নবস্তু বলতে কি বোঝ ?
উত্তরঃ মাটির নীচ থেকে পুরোনো দিনের যে সমস্ত উপাদান পাওয়া যায়।
২৮. প্রশস্তি কথার অর্থ কি ?
উত্তরঃ প্রশস্তি কথার অর্থ গুনগান করা ।
২৯. শিল্প বস্তু কয় ধরনের কি কি ?
উত্তরঃ শিল্প বস্তু তিন ধরনের – (i)স্থাপত্য (ii) ভাস্কর্য (iii) চিত্রকলা ।
৩০. কোথায় প্রাচীন চিত্রকলার নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে ?
উত্তরঃ ভীমবেটকা ও অজন্তা গুহার দেওয়ালগুলিতে প্রাচীন চিত্রকলার নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে ।
৩১. কয়েকটি স্থাপত্যের উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ প্রাচীন যুগের বাড়িঘর, প্রসাদ, মন্দির , এইসব স্থাপত্যের উদাহরণ ।
৩২. ভারতীয় উপমহাদেশে ইতিহাসের উপাদানকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয় কি কি ?
উত্তরঃ ভারতীয় উপমহাদেশে ইতিহাসের উপাদানকে ছয়টি ভাগে ভাগ হয় ।
৩৩. বৈদিক সাহিত্য কি ?
উত্তরঃ ধর্মভিত্তিক সাহিত্যের মধ্যে প্রধান হল বৈদিক সাহিত্য বলে ।
৩৪. হর্ষচরিত কার লেখা ?
উত্তরঃ বানভট্টের লেখা হর্ষচরিত ।
ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্নউত্তর
১. ইতিহাস বলতে কি বোঝ ?
উত্তরঃ ইতিহাস বলতে বোঝায় পুরনো দিনের কথা, যেখানে বেশিরভাগ মানুষের কথা রয়েছে, কীভাবে মানুষ পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে জীবন জীবিকা গড়ে তুলেছে । কিভাবে আদিম যুগ থেকে মানুষ ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটিয়েছে । তাকেই বলে ইতিহাস ।
২. ভারতীয় উপমহাদেশের ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও ।
উত্তরঃ পাহাড় , নদী, সমুদ্র, মরুভূমি সব মিলিয়ে উপমহাদেশের পরিবেশ ,ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর দিকে পাহাড়ি অঞ্চল । সিন্ধু ও গঙ্গা নদীর দুপাশে বিরাট সমভুমি অঞ্চল। বিন্ধ পর্বতের দক্ষিণদিকে ত্রিকণা অঞ্চল নিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশ ।
৩.কোন অঞ্চলকে ভারতবর্ষ বলা হত ?
উত্তরঃ ভরত ছিল পুরনো এক জনগোষ্ঠী । ঐ জনগোষ্ঠী যে অঞ্চলে থাকত তাকে বলা হত ভারতবর্ষ।
৪. নদী মাতৃক সভ্যতা বলা হয় ?
উত্তরঃ নদীকে ভিত্তি করেই সর্ব প্রথম সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। অতীত সভ্যতার কাছে নদী ছিল মায়ের মতো নদীকে ঘিরেই তাঁদের রোজকার কাজ চলত , মানুষের কাজকর্মে নদীর গুরুত্ব সব থকে বেশী ছিল । তাই সেই সব সভ্যতাকে নদী মাতৃক সভ্যতা বলে।
৫. প্রাক ঐতিহাসিক যুগ কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে সময় মানুষ লিখতে পড়তে পারত না সে সময়ের বিভিন্ন রকমের তথ্যাদি থেকে আমাদের সে সময়ের কথা অনুমান করে নিতে হয়। এই সময়কে প্রাক ঐতিহাসিক যুগ বলে ।
৬. প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে সময় মানুষ লিখতে শিখেছিল, সেই সময়কে প্রায় ঐতিহাসিক যুগ বলা হয়। এই সময়ের লেখাগুলি পড়া যায় না।
৭. অব্দ বলতে কি বোঝ ?
উত্তরঃ সাল বোঝাতে অব্দ কথাটির ব্যবহার করা হত । তৎকালীন সময়ে রাজাদের শাসন ধরে অব্দ গোনা হত ।
৮. খ্রিস্টপূর্বাব্দ কোন দিক থেকে কোন দিকে গোনা হয় ?
উত্তরঃ বড়ো থেকে ছোটোর দিকে গোনা হয় খ্রিস্টাব্দ । যেমন- ২০১৪ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের আগের বছর হবে ২০১৫ এবং পরের বছর হবে ২০১৩ ।
৯. ইতিহাসের উপাদান কাকে বলে ?
উত্তরঃ বহু বছর ধরে মাটির নীচে চাপা পরে থাকা পুরনো দিনের বাসনপত্র, পোশাক, মুদ্রা, গয়না, মূর্তি যেগুলি থেকে ইতিহাসের কথা জানা যায় তাকেই বলে ইতিহাস ।
১০. প্রত্নতাত্ত্বিক কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ মাটির নীচে চাপা পড়ে যাওয়া উপাদানগুলি খুঁজে বের করেন যারা তাঁদের প্রত্ন তাত্ত্বিক বলা হয় ।
১১. মিউজিয়াম বা জাদুঘর কাকে বলে ?
উত্তরঃ পুরোনো দিনের রাজা রানিদের পোশাক, অলংকার,অস্ত্রশস্ত্র, নানান রকম মূর্তি, ছবি, বইপত্র ইত্যাদি উপাদানগুলি যে ঘরে রাখা হয় তাকেই মিউজিয়াম বা জাদুঘর বলে ।
১২. কোন অঞ্চলকে প্রত্নক্ষেত্র বলা হয় ?
উত্তরঃ প্রত্নবস্তু সংগ্রহের জন্য প্রত্নতাত্ত্বিকরা অনেক সময় বিরাট অঞ্চল জুড়ে খোঁড়ার কাজ করেন এই অঞ্চলকে প্রত্নক্ষেত্রে বলে ।
১৩. প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কোনগুলি ?
উত্তরঃ প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল প্রত্ন বস্তু ও লেখমালা , মুদ্রা ।
১৪. শিলালেখ কি ?
উত্তরঃ প্রাচীনকালের মানুষেরা পাথর বা ধাতুর পাতে লিপি খোদাই করে নানান জিনিস লিখে রাখত এই সমস্ত লেখাকে শিলালেখ বলে ।
১৫. প্রশস্তি কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রাচীনকালে পাথরের গায়ে শাসকের গুনগান লেখ হিসাবে খোদাই করা হত। সেগুলিকে বলে প্রশস্তি । যেমন-গুপ্ত সম্রাট সমুদ্র গুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তি ।
১৬. প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে প্রচলিত মুদ্রায় কার নাম খোদায় করা হত ?
উত্তরঃ প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে প্রচলিত মুদ্রায় শাসকের নাম ,মুর্তি, ও অব্দ খোদায় করা হত ।
১৭. ভাস্কর্য কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রাচীনকালে পোড়ামাটি , পাথর, ধাতু খোদায় করে নানান রকমের জিনিস বানানো হত তাকেই বলা হয় ভাস্কর্য । যেমন- দেবদেবী, মানুষ ও পশুর মূর্তি।
১৮. লিখিত সাহিত্যের উপাদানকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় কি কি ?
উত্তরঃ লিখিত সাহিত্যের উপাদানকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় – (i)দেশি রচনা (ii)বিদেশি রচনা ।
১৯. দেশীয় সাহিত্যকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় কি কি ?
উত্তরঃ দেশীয় সাহিত্যকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় –(i) ধর্মভিত্তিক সাহিত্য (ii) ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য ।
২০. ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্যগুলি থেকে আমরা কি কি জানতে পারি ?
উত্তরঃ ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য থেকে আমরা প্রাচীন ভারতের রাজনীতি, ব্যাকরণ, সমাজ, অর্থনীতি প্রভৃতির কথা জানতে পারি ।
২১. প্রাচীন ভারতের ইতিহাস জানতে কয় প্রকার বিদেশি বিবরণ গ্রহণ করা হয়েছে কি কি ?
উত্তরঃ প্রাচীন ভারতের ইতিহাস জানতে তিন প্রকার বিদেশি বিবরণ গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলি হল – গ্রিক পর্যটকদের বিবরণ । (ii) রোমান পর্যটকদের বিবরণ । (iii) চিনা পর্যটকদের বিবরণ ।
Thanks For Reading : ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারণা |
■ আরো পড়ুনঃ