শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকা

প্রিয় পাঠক আজকের পর্বে  BA Education / Class 11 Education এর একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন আজকে আলোচনা করতে চলেছি। প্রশ্নটি হলনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকা ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা করো | 

Class 11 Education/  B.A Education Honours/ BA Education General এর যেসব ছাত্র ছাত্রী, যারা  B.A Education Semester-1 এর notes খুঁজছ তাদের জন্য এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। Education এর যেসব ছাত্র ছাত্রী রয়েছ তাদের উপকারে এলে আমাদের পরিশ্রম সফল হবে।

নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকা ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা করো |
নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকা ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা করো |

 

নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকা ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা করো | 

Discuss the role and limitations of school as a medium of  informal education |

নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকাঃ

বিদ্যালয় হল শিক্ষার একটি প্রত্যক্ষ মাধ্যম। তাই মানব শিক্ষায় কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ  প্রয়োজন মেটাবার জন্যই বিদ্যালয় সৃষ্টি হয়। আধুনিক বিদ্যালয়ে বিচিত্র কাজের মধ্যে নীচে কয়েকটি প্রধান কাজের উল্লেখ করা হল –

(i) অতীত অভিজ্ঞতার সংরক্ষণঃ

সমাজে বয়স্ক ব্যক্তিরা জীবনের প্রত্যক্ষ পরিস্থিতিতে যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করছে বা যেসব অভিজ্ঞতা উত্তরাধিকারী সূত্রে পিতৃ পুরুষের কাছ থেকে অর্জন করেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান কর্তব্য হবে সেই অভিজ্ঞতা সংরক্ষণ করা । এই সংরক্ষণ পুঁথির মাধ্যমে হতে পারে, শিক্ষকের আচরণের মাধ্যমে হতে পারে, দৈনন্দিন কার্যপরিচালনার মাধ্যমে হতে পারে।

(ii)  অতীত সংরক্ষনের সঞ্চালনঃ

বিদ্যালয় যে শুধুমাত্র অতীত অভিজ্ঞতার সংরক্ষন করবে তাই নয়, ওইসব অভিজ্ঞতার যথাযথ সঞ্চালনের ভারও বিদ্যালয়কে নিতে হবে। সমাজের অগ্রগতিকে বজায় রাখার জন্য বিদ্যালয়ের কাজ হবে শিশুদের মধ্যে অনুশীলনের মাধ্যমে সমাজের অভিজ্ঞতাকে সঞ্চালন করা।

(iii) সামাজিকীকরণঃ

বিদ্যালয় যেমন শিশুর ব্যক্তি স্বতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করবে, তেমনি তাকে সমাজের উপযোগী করে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করবে। যার দ্বারা শিশু নিজেকে সেই সমাজের সদস্য বলে মনে করে এবং সমাজের মূল্য বোধগুলিকে আয়ত্ত্ব করে।

(iv) ব্যক্তি স্বতন্ত্রের বিকাশঃ

শিশু প্রকৃতি প্রদত্ত শক্তি ও সম্ভবনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই শক্তি বা সম্ভাবনাগুলি শিশুর ভবিষ্যৎ ব্যক্তি সত্ত্বার মৌলিক উপাদান। বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল এই শক্তি ও সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে শিশুর ভবিষ্যৎকে সার্থক করে তোলা।

(v) বৃত্তি শিক্ষাদানঃ

আধুনিক বিদ্যালয় কেবলমাত্র জ্ঞানমূলক শিক্ষা প্রদানই করবে না, শিশুর বিশেষধর্মী সার্মথ্য অনুযায়ী ভবিষ্যৎ বৃত্তির জন্য শিক্ষাদান করবে, যাতে শিশু ভবিষ্যতে স্বনির্ভর হতে পারে।

(vi) গণতান্ত্রিক আদর্শঃ

আধুনিক বিদ্যালয় শিশুকে গণতান্ত্রিক আদর্শ পালন করতে উদবুদ্ধ করবে এবং আদর্শকে বাস্তবে রূপায়িত করতে সাহায্য করবে। এর জন্য শিক্ষার্থীকে গণতান্ত্রিক আদর্শের আচার আচরণ অভ্যাসের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

(vii) জীবন দর্শন গঠনঃ

প্রত্যেক শিক্ষার্থীর তৃপ্তিকর জীবন যাপনের জন্য একটি অর্থপূর্ণ জীবন গঠন করা আবশ্যক। বিদ্যালয়ের ভূমিকা হল শিক্ষার্থীকে উন্নত অভিজ্ঞতার দ্বারা পুষ্ট করে প্রগতিশীল জীবন দর্শন গঠনে সহায়তা করা।

 

সীমাবদ্ধতাঃ 

শিক্ষালয় যদিও প্রাচীন কাল থেকে তার কাজ করে চলেছে, কিন্তু আধুনিক সমাজে সেই কাজগুলিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সেগুলি কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে। যেমন –

(i)  শিক্ষালয় সর্বদাই সমাজের উপর ভিত্তি করেই তার পাঠক্রম ও প্দ্ধতি তৈরি করতে সক্ষম হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে বিদ্যালয় পরিবর্তনের গতির কোন সংগতি নেই।

(ii)  শিক্ষালয় শিশুর সর্বাঙ্গীন বিকাশে বাধাদান করছে। কারণ আধুনিককালে লেখাপড়ার প্রবল চাপ শিশুর সর্বাঙ্গীন বিকাশ বাধাদান করছে।  

(iii)  শিক্ষা ব্যবস্থার চরম সীমাবদ্ধতা , কঠোরতা, পরীক্ষা প্দ্ধতি সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থাকে কৃত্রিম করে তুলেছে।

(iv) বর্তমান শিক্ষালয়ের পাঠক্রম ব্যক্তি বৈষম্যের নীতিকে মেনে চলে না। ফলে শিক্ষালয় শিক্ষার্থীদের জ্ঞান লাভের কৃত্রিম উপায় মাত্র।

(v)  সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীকে কখনও কখনও দক্ষ নাগরিক তৈরি করার পরিবর্তে স্বার্থপর অসুস্থ নাগরিক করে তুলেছে।


আরো পড়ুনঃ 

 


 

 প্রশ্ন উত্তরঃ

১. নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা বা প্রথাগত শিক্ষা কাকে বলে ? 

উত্তরঃ  যে শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী থাকে এবং যে পাঠক্রমকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করতে হয় তাকে প্রথাগত বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা বলে

২. নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা বা প্রথাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্য লেখ ।

উত্তরঃ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা বা প্রথাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্য-

(ক) প্রতিটি শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একটি নির্দিষ্ট পূর্ব নির্ধারিত পাঠক্রম থাকে, যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে হয়।

(খ) এই ধরণের শিক্ষা পদ্ধতিতে  প্রয়োজনীয় জ্ঞান দক্ষতা সরবরাহের জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের প্রয়োজন হয় ।


 

Leave a comment