একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আমরা আলোচনা করতে চলেছি তা হল- রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধি সম্পর্কে আলোচনা করো। এই প্রশ্নটির পরিপূরক হিসাবে যে প্রশ্নটি লেখা যাবে তা হল – রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু আলোচনা কর। এটি class 11 political science এর একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন উত্তর এর আলোচনা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধি সম্পর্কে আলোচনা করো।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও
রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি গতিশীল বিজ্ঞান এর সঠিক সংজ্ঞা দেওয়া কঠিন কারণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশ্বয়বস্তু নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা একমত নয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে তিনটি মতবাদ তৈরি হয়েছে – প্রাচীন মত, আধুনিক মত, মার্কসীয় মত।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শ্রেষ্ট সংজ্ঞা দিয়েছেন অধ্যাপক গার্নার তার মতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শুরু রাষ্ট্র নিয়ে এবং শেষ ও রাষ্ট্রকে নিয়ে। সিলির মতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সরকার নিয়ে আলোচনা করে।
ডেভিড ট্রু ম্যানের মতে সমাজে যাবতীয় গোষ্টীর কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অর্থাৎ ব্যাপক অর্থে রাষ্ট্রবিজ্ঞান। রাষ্ট্রবিজ্ঞান এমন একটি বিষয় ক্ষমতা, শাসন অথবা মানুষে সম্পর্কে নির্ধারনকারী রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করে।
মার্কসবাদীদের মতে সমাজের শোষক ও শোষিত শ্রেণীর মধ্যে যে শ্রেণীসংগ্রাম চলে তার বৈজ্ঞানিক বিচার বিশ্লেষন করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান। সুতরাং রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল সমাজ বিজ্ঞানের সেই শাখা যা রাষ্ট্রের তত্ত্ব সংগঠন, শাসন প্রণালী, আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।
আরো পড়ুন – বাংলা রচনা
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও পরিধি
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলচ্য বিষয় স্থিতিশীল নয় গতিশীল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গ্রিন এর মতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কোনো সুনির্দিষ্ট সীমারেখা অঙ্কন করা সম্ভব নয়। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধির মধ্যে কোন কোন বিষয় অন্তভুক্ত হবে তা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। এই মতবিরোধকে তিনভাবে আলোচনা করা হয়।
প্রাচীন মত
এই মতের সমর্থকেরা হলেন গার্নার, গ্রিবস, রবসন, প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। এদের মতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলচ্য বিষয় হল রাষ্ট্র। রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন রকম সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রবসনের মতে রাষ্ট্র বর্তমান নিয়ে কেবল আলোচনা করে না কী হওয়া উচিত তা নিয়ে আলোচনা করে।
প্রাচীন মতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয় বস্তু দুই প্রকার। যথা – তত্ত্বগত রাজনীতির বিষয় রাষ্ট্রের উৎপত্তি, আইন, স্বাধীনতা এবং ব্যবহারিক রাজনীতির বিষয় সরকারের বিভিন্ন রূপ, রাজনৈতিক প্রতিষ্টান, আন্তর্জাতিক যুক্তি।
আধুনিক মত
আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছেন তা হল সমাজ বিদ্যা ব্যক্তি ও সামাজিক মনসতত্ত্ব বিভিন্ন গবেষনা পদ্ধতি, চাপসৃষ্টি কারী গোষ্ঠী, ভোটদান পদ্ধতি প্রভৃতি এই মতবাদের প্রবক্তারা হলেন আর্থার, রবার্ট ডাল, ডেভিড ইস্টন প্রমুখ।
মার্কসবাদী মত
মার্কসবাদীরা প্রাচীন ও আধুনিক উভয় আলোচনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। মার্কসবাদীদের মতে শ্রেণী বিভক্ত সমাজে প্রভুক্তকারী শ্রেণী নিজেদের শ্রেণী শাসন অব্যহত রাখে রাষ্ট্রব্যবস্থা হল শোষণের যন্ত্র। মার্কসবাদীদের চোখে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা রাজনীতির প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় হলে তা বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দলগুলি মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।
উপসংহার
ষ্ট্রবিজ্ঞানে সীমানার ব্যাপকতা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে অধ্যাপক ল্যাস্কি বলেছেন – ‘রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলচ্য বিষয় থেকে কোনো কিছুকেই বাদ দেওয়া যায় না। যা মানব জীবনকে প্রভাবিত করে।’ তবে একথা সত্য যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সঙ্গে সমস্ত বিষয়ে ঘনিষ্ঠতা ও সহযোগিতা নির্ধারন করা সহজ সাধ্য নয়।
প্রশ্ন -উত্তর
১. রাষ্ট্রবিজ্ঞান এর সংজ্ঞা কি?
উত্তর – রাষ্ট্রবিজ্ঞান এমন একটি বিষয় ক্ষমতা, শাসন অথবা মানুষে সম্পর্কে নির্ধারনকারী রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করে।
২. রাষ্ট্র দর্শনের জনক কে?
উত্তর – রাষ্ট্র দর্শনের জনক অ্যারিস্টটল।
৩. রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি গতিশীল বিজ্ঞান কে বলেছেন?
উত্তর – রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি গতিশীল বিজ্ঞান এই মতবাদের প্রবক্তা হলেন লর্ড ব্রাইস।
Thanks For Reading: রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা -প্রকৃতি ও পরিধি
আরো পড়ুনঃ
1. রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধি সম্পর্কে আলোচনা করো।
২. চার্বাক দর্শন বড় প্রশ্ন উত্তর
৩.রাষ্ট্র কাকে বলে | উপাদান গুলো কি কি
৪.রাষ্ট্রবিজ্ঞান কি বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করো