স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ গুলি অলোচনা করো।

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি, ভবিষ্যৎ ও সমস্যা সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান ও পর্যালোচনার জন্য তৈরি করা হয় স্যাডলার কমিশন । B.A Education-এর আজকের পর্বে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি ।

Class 11 Education/  B.A Education Honours/ B.A Education General এর যেসব ছাত্রছাত্রী রয়েছ তাদের জন্য  এই পোস্টগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন।Education -এর প্রয়োজনীয় সব Notes তোমরা এই পেজে পাবে ।

ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ গুলি অলোচনা করো | আমরা সহজ ও সংশ্লিষ্ট ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্বরূপ বিষয়গুলি উপস্থাপন করে থাকি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি । আলোচনার এই পর্বের আলোচ্য বিষয়ঃ স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ গুলি অলোচনা করো। 

স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ গুলি অলোচনা করো।
স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ গুলি অলোচনা করো।

 

স্যাডলার কমিশনে (1917) বা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সুপারিশগুলি অলোচনা করো।

স্যাডলার কমিশন বা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনঃ

1917 খ্রিঃ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি, ভবিষ্যৎ ও সমস্যা সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান ও পর্যালোচনার জন্যে লীডস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ মাইকেল স্যাডলারের নেতৃত্বে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠিত হয়। এই কমিশনটি    স্যাডলার কমিশন নামে পরিচিত।

স্যাডলার কমিশনের সুপারিশগুলিঃ  

স্যাডলার কমিশনের রির্পোটে উল্লেখিত প্রস্তাবগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল –

(i) মাধ্যমিক শিক্ষাঃ 

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষার সমস্যাগুলিকে অধ্যায়ণ করা হয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণের উন্নয়নের জন্য ভিত্তি হল মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি পুর্নগঠনের জন্য সুপারিশ পেশা করেছিলেন সেগুলি হল –

(ক) মাধ্যমিক ও ইন্টার মিডিয়েট শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব ও ক্ষমতা একটি মাধ্যমিক ও ইন্টার মিডিয়েট বোর্ডের হাতে অর্পণ করা উচিত। এই বোর্ডে সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চ স্কুল ও ইন্টার মিডিয়েট কলেজগুলির প্রতিনিধিরা থাকবেন।

(খ) ইন্টার মিডিয়েট কলেজের পাঠ্যক্রমে থাকবে বিজ্ঞান, কলা, শিক্ষা, কৃষি, বাণিজ্য, চিকিৎসাবিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং, শিল্প ইত্যাদি।

(গ) ইন্টার মিডিয়েট পর্যায়ের পাঠ শেষ করার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ লাভের যোগ্যতা অর্জন করা যাবে।

(ii) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাঃ

বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিশনের সুপারিশগুলি হল –

(ক) ঢাকায় একটি শিক্ষণধর্মী আবশ্যিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।

(খ) কলিকাতার বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রকৃত শিক্ষণধর্মী বিশ্ববিদ্যালয় রূপে গড়ে তুলতে হবে এবং এটাই হবে কলিকাতা শহরের শিক্ষণ সম্পদ।

(গ) মফঃসল এলাকার কলেজগুলিকে উন্নত করে তুলতে হবে।

(iii) পরিচালনাঃ

(ক) বিশ্ববিদ্যালয় গুলিকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করে কলেজের শিক্ষকদের হাতে শিক্ষাদান সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে অধিকত্বর ক্ষমতা অর্পণ করতে হবে।

(খ) অন্যান্য বিষয়ের পরিচালনার ব্যাপারে সেনেট এবং একটি ক্ষুদ্র কার্যকর পরিষদ গঠন করতে হবে।

(গ) পাঠ্যক্রম নির্ধারণ, পরীক্ষা গ্রহণ, ডিগ্রি দান প্রভৃতি পরিচালনার জন্য একাডেমিক কাউন্সিল, বিভিন্ন বিষয়ের ফলাফলটি থাকবে।

(ঘ) পূর্ণকালীন বেতন ভুক্ত উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে।

(iv) শিক্ষা দানঃ

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সংক্রান্ত ত্রুটি দূর করার উদ্দেশ্য কমিশন সুপারিশ করেন যে সাহিত্যধর্মী পাঠ্যক্রম ছাড়াও বিভিন্ন প্রকারের কারিগরি শিক্ষার আয়োজন করতে হবে। ব্যক্তিগত পাঠ্যপ্রস্তুতি, উন্নত গবেষণা পরিচালনা এবং ভারতীয় ভাষায় চর্চার ব্যবস্থা করতে হবে।

(v) শিক্ষক শিক্ষণঃ

কমিশন পরামর্শ দেন যে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পৃথক শিক্ষা বিভাগ স্থাপন করতে হবে এবং B. A. (পাশ) ও ইন্টার মিডিয়েট পাঠ্যক্রমে শিক্ষাতত্ত্ব নামে একটি নতুন বিষয় শুরু করতে হবে। দেশের শিল্পমূলক উন্নয়নের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়া ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গুলির মধ্যে সমন্বয় ও যোগাযোগ রক্ষার জন্য আন্তবিশ্ববিদ্যালয়  পর্ষদ গঠনের পরামর্শ দেয় কমিশন।

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য স্যাটলার কমিশনের নির্দেশগুলি বিশেষ প্রগতিশীল ছিল। এ প্রসঙ্গে Mr. A. N. Basu বলেছেন – “ভারতবর্ষের শিক্ষার ইতিহাসে এই ধরণের গুরুত্বপূর্ণ বিকৃতি পূর্বে লিখিত হয়নি। পরবর্তীকালে শিক্ষামূলক উন্নয়ন এর দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।

যার অবশিষ্টাংশ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়। ” স্বাভাবিক ভাবেই বলা যায় যে দেশে তথা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে চিহ্ন আমরা দেখতে পাই তার পটোভূমিকায় স্যাডলার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।


আরো পড়ুনঃ


প্রশ্ন উত্তরঃ 

১. স্যাডলার কমিশন কবে গঠিত হয় ?

উত্তরঃ স্যাডলার কমিশন 1917 খ্রিঃ গঠিত হয় ।

২. স্যাডলার কমিশনের অপর নাম কি ?

উত্তরঃ  স্যাডলার কমিশনের অপর নাম কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন  ।

৩. স্যাডলার কমিশনের সভাপতি কে ছিলেন ?

উত্তরঃ  স্যাডলার কমিশনের সভাপতি  ছিলেন ডঃ মাইকেল স্যাডলার ।

৪. স্যাডলার কমিশনের সুপারিশগুলি লেখ ।

উত্তরঃ স্যাডলার কমিশনের সুপারিশগুলি হলঃ-

(i) ঢাকায় একটি শিক্ষণধর্মী আবশ্যিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।

(ii) দেশের শিল্পমূলক উন্নয়নের জন্য বৃত্তি মূলক প্রশিক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে।

(iii) ব্যক্তিগত পাঠ্যপ্রস্তুতি, উন্নত গবেষণা পরিচালনা এবং ভারতীয় ভাষায় চর্চার ব্যবস্থা করতে হবে।

(iv) অন্যান্য বিষয়ের পরিচালনার ব্যাপারে সেনেট এবং একটি ক্ষুদ্র কার্যকর পরিষদ গঠন করতে হবে।

৫. স্যাডলার কমিশনের দুজন ভারতীয় সদস্যের নাম কি ? 

উত্তরঃ স্যাডলার কমিশনের দুজন ভারতীয় সদস্যের নাম  হলঃ-

স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়  এবং ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ।


 

Leave a comment