অষ্টম শ্রেণীর ভূগোল অস্থিত পৃথিবী প্রশ্ন উত্তর

অষ্টম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হল । geography class 8 chapter 2 থেকে 1 ও 2 নম্বরের কিছু প্রশ্ন উত্তর , শূন্যস্থান পূরণ নিয়ে আজকের আমাদের উপস্থাপনা । আশা করি, ছাত্রছাত্রীরা খুবই উপকৃত হবে ।

অষ্টম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় অস্থিত পৃথিবী প্রশ্ন উত্তর
অষ্টম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় অস্থিত পৃথিবী প্রশ্ন উত্তর

 

অষ্টম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় অস্থিত পৃথিবী প্রশ্ন উত্তর

 

শূন্যস্থান পূরণ :

 

১. মহিসঞ্চরণ তত্ত্বের অন্যতম প্রবক্তা __________।

উত্তরঃ  আলফ্রেড ওয়েগনার

২. পাত গুলোর পৃষ্ঠ তলের ক্ষেত্রফলের তুলনায় বেধ ______ ।

উত্তরঃ কম ।

৩. পাত গুলির সঞ্চরণ ঘটে __________ এর ফলে ।

উত্তরঃ পরিচলন স্রোতের ফলে ।

৪. পাতগুলি বিস্তৃত ____________  স্তরে।

উত্তরঃ  অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার ।

৫. পাতের চলন সম্পর্কিত তত্ত্বকে বলে ___________ ।

উত্তরঃ পাত সংস্থান তত্ত্ব ।

৬.ভূ-অভ্যন্তরের ম্যাগমা শীতল ও কঠিন হয়ে __________  সৃষ্টি  করে ।

উত্তরঃ  নতুন ভূত্বক ।

৭. পাতের চলনের ফলে সৃষ্টি হয় _________ , _________ , _________ ।

উত্তরঃ ভুমিকম্প, অগ্নুৎপাত , ধ্বস ।

৮. পাতের ধ্বংস বা সৃষ্টি কিছুই হয় না ___________ ।

উত্তরঃ নিরেপেক্ষ  পাত সীমানায় ।

৯. অভিসারী পাত সীমানার ফলে ভারী পাত _________ পাতের নীচে প্রবেশ করে ।

উত্তরঃ হালকা ।

১০. ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয় ____________।

উত্তরঃ  অভিসারী পাত সীমানায় ।

১১.হিমালয় পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে _________ ও __________  দুই মহাদেশীয় পাত সীমানায় ।

উত্তরঃ ইউরশিয় ও ভারতীয় ।

১২. আরাবল্লী একটি _________ পর্বত ।

উত্তরঃ প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত ।

১৩. __________ হল একটি নবীন ভঙ্গিল পর্বত ।

উত্তরঃ হিমালয় ।

১৪. অগ্ন্যুৎপাতের উৎস হল ___________।

উত্তরঃ আগ্নেয়গিরি।

১৫. ভারতের ব্যরেন  হল একটি ___________ পর্বত ।

উত্তরঃ আগ্নেয় ।         

১৬. বিদার অগ্ন্যুৎপাত ঘটে _________ ভাবে ।

উত্তরঃ শান্ত।

১৭. লাভা মালভূমি বা লাভা সমভূমির সৃষ্টি হয় _______ সঞ্চিত হয়ে ।

উত্তরঃ লাভা ।

১৮. ___________ হল একটি লাভা মালভূমি ।

উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য মালভূমি ।

১৯.____________ এক প্রকার ভূগাঠনিক প্রক্রিয়া ।

উত্তরঃ অগ্ন্যুৎগম ।

২০. ভূআলোড়নের বহিঃ প্রকাশ হল ________ ও ________ ।

উত্তরঃ  অগ্ন্যুৎগম , ও ভূমিকম্প । 

২১. কম সময় ব্যাপী আকস্মিক প্রক্রিয়া অন্তর্জাত শক্তি __________________ ।

উত্তরঃ অগ্ন্যুৎপাত ।

২২. ম্যাগমা যত ওপরে উঠে চাপ ও গলনাঙ্ক  তত _________ যায় ।

উত্তরঃ কমে ।

২৩. ভূ-অভ্যন্তরের গলিত, সান্দ্র পদার্থকে __________ বলে ।

উত্তরঃ লাভা

২৪. হাওয়ায়া দ্বীপের মৌনালোয়া হল একটি _________ ।

উত্তরঃ সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ।

২৫. যে আগ্নেয়গিরি গুলি সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে অবিরাম অগ্ন্যুৎপাত ঘটিয়ে চলেছে তাকে বলে ________ আগ্নেয়গিরি ।

উত্তরঃ সক্রিয় ।

২৬. জাপানের ফুজিয়ামা হল _________ আগ্নেয় গিরির উদাহরণ ।

উত্তরঃ  সুপ্ত আগ্নেয়গিরি ।

২৭. দুশো বছর পর হটাৎ সক্রিয় উঠেছে _________।

উত্তরঃ  ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরি ।

২৮. একটি মৃত আগ্নেয়গিরি হল ______________ ।

উত্তরঃ  মায়ানমারের পোপো ।

 ২৯. হাওয়ায় দ্বীপের ভাষায় আগ্নেয় গিরি থেকে নির্গত গাঢ় , সান্দ্র লাভাকে বলে __________ ।

উত্তরঃ ‘আ,আ’ ।

৩০. ___________ লাভা প্রবাহের স্তর দ্রুত ঠাণ্ডা হয়ে কুঁচকে গিয়ে পাকানো  দড়ির মতো দেখতে হয় ।

উত্তরঃ  ‘পা হো হো’

৩১. পৃথিবী বিখ্যাত মনোরম জলবায়ুর শহর হল ______________ ।

উত্তরঃ ক্যালিফোর্নিয়ার  সানফ্রান্সিসকো ।

৩২. _________ সালে শক্তিশালী ভুমিকম্পে সানফ্রান্সিসকো শহর প্রায় সম্পূর্ণ  ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ।

উত্তরঃ ১৯০৬ সালে ।

৩৩. পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা __________ অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ ।

উত্তরঃ  পাত সীমানা ।

৩৪. পৃথিবীর স্থিতিস্থাপক অভ্যন্তরে কোন সঞ্চিত শক্তি হটাৎ মুক্ত হলে ______________ সৃষ্টি হয় ।

উত্তরঃ ভূমিকম্পের ।

৩৫. অধিকাংশ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূ-পৃষ্ঠ থেকে _____________ কিমি গভীরে হয়ে থাকে ।

উত্তরঃ ৫০-১০০ কিমি ।

৩৬. ভূপৃষ্ঠের যে বিন্দুতে প্রথম কম্পন পৌঁছায় সেটা হল ____________।

উত্তরঃ ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ।

৩৭. পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে তরঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে ____________ ।

উত্তরঃ  ভূকম্পন তরঙ্গ ।

৩৮. তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে না শুধুমাত্র গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে প্রবাহিত হয় ____________  তরঙ্গ ।

উত্তরঃ ‘S’ তরঙ্গ ।

৩৯. সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয় ___________ তরঙ্গের প্রভাবে ।

উত্তরঃ ‘L’ তরঙ্গ ।

৪০. ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ও তীব্রতা পরিমাপ করা হয় __________ ।

উত্তরঃ রিখটার স্কেলে ।

৪১. রিখটার স্কেলের উদ্ভাবক হলেন ______________ ।

উত্তরঃ চার্লস রিখটার ।

৪২. রিখটার স্কেলের মাত্রা __________ এর বেশি হলে ভূমিকম্পের বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয় ।

উত্তরঃ ‘৬’ এর ।

৪৩.পৃথিবীর সমস্ত ___________ ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চল ভূমিকম্প প্রবণ ।

উত্তরঃ নবীন ভঙ্গিল ।

৪৪. প্রশান্ত মহাসাগরের দুদিকের উপকূলের আগ্নেয়গিরি বলয়কে _______________ ।

উত্তরঃ ‘প্রাশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নিবলয় ’।

৪৫.  ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরি অবস্থিত ____________ ।

উত্তরঃ ইতালি ।

৪৬. পৃথিবীর __________ শতাংশ ভূমিকম্প হয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় বলয়ে ।

উত্তরঃ ৭০  শতাংশ ।

৪৭. পৃথিবীর ২০ শতাংশ ভূমিকম্প ঘটে ______________ ।

উত্তরঃ মধ্য মহাদেশীয় বলয়ে ।

৪৮. ভারতের ভূমিকম্প বলয় প্রধানত _____________এবং_____________ অঞ্চলে বিস্তৃত ।

উত্তরঃ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এবং গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকায় ।

৪৯. আগ্নেয় ভস্ম, লাভা থেকে যে উর্বর মাটি তৈরি হয় তাকে বলে ____________ ।

উত্তরঃ কৃষ্ণ মৃত্তিকা

৫০. ______________ হিরের খনি অঞ্চল ।

উত্তরঃ দক্ষিণ আফ্রিকার কিম্বারলি ।

৫১. সাম্প্রতিক করাচির কাছে জেগে উঠেছে ___________ ।

উত্তরঃ ‘কাদার দ্বীপ’ ।

৫২. ভূমিকম্প মাপা হয় ______________ যন্ত্রে ।

উত্তরঃ সিসমোগ্রাফ বা ভূকম্প লিখ ।

৫৩. ভূকম্প তরঙ্গ _________ প্রকার, যথা  _______তরঙ্গ , _______ তরঙ্গ , _________ তরঙ্গ ।

উত্তরঃ তিন প্রকার ,  ‘P’ তরঙ্গ , ‘S’ তরঙ্গ , ‘L’ তরঙ্গ ।     

৫৪. সানফ্রান্সিসকো এবং লস এঞ্জেলস শহর দুটি _________ এর প্রায় ওপরেই অবস্থিত ।

উত্তরঃ San Andreas fault .

৫৫. __________ অঞ্চল থেকে মূল্যবান রত্ন ও খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় ।

উত্তরঃ আগ্নেয়গিরি অধ্যুষিত অঞ্চল ।

 

 ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর

 

১. মহীসঞ্চরণ তত্ত্বের প্রবক্তা কে ?

উত্তরঃ মহীসঞ্চরণ তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন আলফ্রেড ওয়েগনার ।

২. প্যানজিয়া কি ?

উত্তরঃ প্রায় ৩০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সমস্ত স্থলভাগ একটা বিশাল ভূখণ্ড রূপে অবস্থান করত এই বিশাল ভূখণ্ডকে প্যানজিয়া বলে ।

৩. পৃথিবীতে মোট কটি বড়ো পাত রয়েছে ?

উত্তরঃ পৃথিবীতে মোট ছয়টি বড়ো পাত রয়েছে ।

৪.  নিরেপেক্ষ পাত সীমানায় কি কি সৃষ্টি হয় ?

উত্তরঃ নিরেপেক্ষ পাত সীমানায় ভুমিকম্প, চ্যুতি প্রভৃতির সৃষ্টি হয় ।

৫. দুটি নবীন ভঙ্গিল পর্বত মালার উদাহরণ দাও ।

উত্তরঃ নবীন ভঙ্গিল পর্বতমালা হল –(i) রকি (ii) আন্দিজ ।

৬. নবীন ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলে ?

উত্তরঃ ১ থেকে ২.৫ কোটি বছর আগে যে ভঙ্গিল পর্বতগুলি সৃষ্টি হয়েছে সেই পর্বত গুলিকেই বলে নবীন ভঙ্গিল পর্বত ।

৭. দুটি প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ দাও ।

উত্তরঃ প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত-(i) উরাল (ii) আরাবল্লী ।

 ৮. প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলে ?

উত্তরঃ ২০ কোটি বছর আগে সৃষ্টি ভঙ্গিল পর্বতগুলিকে বলা হয় প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত । যেমন- অ্যাপেলেশিয়ান , উরাল।

৯. ম্যাগমা কি ?

উত্তরঃ ভূ-অভ্যন্তরের গলিত, সান্দ্র  পদার্থকে বলে ম্যাগমা ।

১০. সক্রিয়তার ভিত্তিতে আগ্নেয়গিরিকে কটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ?

উত্তরঃ সক্রিয়তার ভিত্তিতে আগ্নেয়গিরিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

(i) সক্রিয় আগ্নেয়গিরি । (ii) সুপ্ত আগ্নেয়গিরি । (iii) মৃত আগ্নেয়গিরি ।

১১. একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি উদাহরণ দাও ।

উত্তরঃ একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির উদাহরণ হল- হাওয়াই দ্বীপের মৌনালোয়া।

১২. একটি মৃত আগ্নেয় গিরির নাম লেখ ?

উত্তরঃ একটি মৃত আগ্নেয়গিরি হল – মেক্সিকোর পারকুটিন ।

 ১৩.  লাভা কি ?

উত্তরঃ ভূ- অভ্যন্তরের গলিত ম্যাগমা কোন ফাটল বরাবর ভূ-পৃষ্টের বাইরে নির্গত হলে তাকে বলে লাভা ।

১৪.  ‘আ, আ’ কি ?

উত্তরঃ আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত গাঢ়, সান্দ্র লাভাকে হাওয়ায় দ্বীপের ভাষায় বলা হয় ‘আ, আ’।

১৫. ‘পা হো হো’ কি ?

উত্তরঃ আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত বহুদুর প্রবাহিত পাতলা লাভাকে হাওয়ায় দ্বীপের ভাষায় বলা হয় ‘পা হো হো’।

১৬. ভূমিকম্পের কেন্দ্র কাকে বলে ?

উত্তরঃ ভূ-অভ্যন্তরে যে স্থানে ভূমিকম্পের উদ্ভব হয় তাকেই বলে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ।

 ১৭. ভূ-পৃষ্টের যে স্থানে প্রথম কম্পন পৌঁছায় তাকে কি বলে ?

উত্তরঃ ভূ-পৃষ্টের যে স্থানে প্রথম কম্পন পৌঁছায় তাকে বলে ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ।

১৮. ভূমিকম্প তরঙ্গ কয়প্রকার ও কি কি ?

উত্তরঃ ভূমিকম্পের তরঙ্গ তিন প্রকার –

(i) ‘p’ তরঙ্গ , (ii) ‘s’ তরঙ্গ   (iii) ‘l’ তরঙ্গ ।

১৯. কোন যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্প পরিমাপ করা হয় ?

উত্তরঃ সিসমোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্প পরিমাপ করা হয় ।

২০. কোন যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি তীব্রতার পরিমাপ করা হয় ?

উত্তরঃ রিখটার স্কেলের সাহায্যে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি তীব্রতার পরিমাপ করা হয় ।

২১. রিখটার স্কেলের  সূচক মাত্রা কত ?

উত্তরঃ রিখটার স্কেলের সূচক মাত্রা ০-১০ ।

২২. ভূমিকম্প প্রবণতার বিচারে ভারতকে কটি ভাগে ভাগ করা হয় ?

উত্তরঃ ভূমিকম্প প্রবণতার বিচারে ভারতকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ।

২৩. ভারতের ভূমিকম্প বলয়ের অন্তর্গত দুটি অঞ্চলের নাম লেখ ।

উত্তরঃ ভারতের ভূমিকম্প বলয়ের অন্তর্গত দুটি অঞ্চল হল- (i) হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল । (ii) গঙ্গা- ব্রাহ্মপুত্র অঞ্চল ।

২৪. কোন অঞ্চলে তীব্র ভূমিকম্প হয়ে থাকে ?

উত্তরঃ অভিসারী পাত সীমানায় তীব্র ভূমিকম্প হয় ।

২৫. প্রাকৃতিক বন্দর কীভাবে সৃষ্টি হয় ?

উত্তরঃ ভূমিকম্পের ফলে কখনও কখনও উপকূল অঞ্চলে ভূভাগ নিমজ্জিত হয়ে প্রাকৃতিক বন্দরের সৃষ্টি হয় ।

 

২ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর

 

১. পাত কি ? পাতের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ ।  

উত্তরঃ ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর ভূত্বক কতকগুলো শক্ত ও কঠিন খণ্ডে বিভক্ত এই খণ্ডগুলিকেই বলে পাত ।

পাতের  বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

(i) পাতগুলোর পৃষ্ঠস্থলের ক্ষেত্রফলের  তুলনায় বেধ খুবই কম।

(ii) পাতগুলো গড়ে ৭০-১৫০ কিমি পুরু ।

(iii) গুরু মণ্ডলের অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার স্তরে পাতগুলি বিস্তৃত।

(iv) পাতগুলি ধীর গতিতে সঞ্চালন করে ।

২. পৃথিবীতে মোট কতগুলি বড়ো পাত রয়েছে ও কি কি ?

উত্তরঃ পৃথিবীতে মোট ছয়টি বড়ো পাত রয়েছে –(i) ইউরেশিয় পাত  (ii) ইন্দ্র-অস্ট্রেলিয় পাত  (iii) আমেরিকা পাত  (iv) প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত  (v) আফ্রিকা পাত  (vi) আন্টার্কটিকা পাত ।

 ৩.  গঠনকারী পাত সীমানা কাকে বলে ?

উত্তরঃ ভূত্বকের পাতগুলো সর্বদা ধীর গতিতে সঞ্চরণ করে, অনেক সময় দেখা যায় সমুদ্র তলদেশে পাতের সীমানা বরাবর দুটি পাত পরস্পরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে । এই পরস্পর বিপরীতমুখী পাত সীমানাকেই অপসারী ও গঠনকারী পাত সীমানা বলে ।

৪. অভিসারী পাত সীমানা কাকে বলে ?

উত্তরঃ  পিচ্ছিল অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের উপর ধীর গতিতে সঞ্ছারণশীল দুটি পাত কখনও কখনও পরস্পরের দিকে অগ্রসর হয়, এর ফলে পাতের সংঘর্ষ ঘটে , ভারী পাত ,হালকা পাতের নীচে প্রবেশ করলে পাতটির গলন ঘটে ও ভূত্বকের বিনাশ ঘটে । এই ধরনের পরস্পরমুখী পাত সীমানাকে অভিসারী বা বিনাশকারী পাত সীমানা বলে।

৫. দ্বীপপুঞ্জ কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে ?

উত্তরঃ  দুটি পরস্পরমুখী সামুদ্রিক পাতের সংঘর্ষ ঘটলে তাদের ওপরের পলি ভাঁজ খেয়ে দ্বীপ ও দীপপুঞ্জের সৃষ্টি হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূল বরাবর জাপান ও সন্নিহিত দ্বীপপুঞ্জ এভাবে গড়ে উঠেছে ।

৬. নিরেপেক্ষ পাত সীমানা কাকে ?

উত্তরঃ ভূত্বকের পাতের সঞ্চারণের ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুটি পাত পরস্পর ঘর্ষণ করে পাশাপাশি অগ্রসর হয়। এই ধরনের পাত সীমান্তে পাতের ধ্বংস বা সৃষ্টি কিছুই হয় না। একে  নিরেপেক্ষ পাত সীমানা বলে ।

৭. ভঙ্গিল পর্বত কিভাবে সৃষ্টি হয় ?

উত্তরঃ  অভিসারী পাত সীমানায় একটি সামুদ্রিক ও একটি মহাদেশীয় পাতের সংঘর্ষের  ফলে মাঝের পলি  ভাঁজ খেয়ে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে। আমেরিকার পশ্চিম ভাগের রকি ও আন্দিজ পর্বত মালা এই অভিসারি পাত সীমানার ফলে সৃষ্টি হয়েছে।

৮. অপসারী ও অভিসারী পাত সীমানার মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ ।

উত্তরঃ  অপসারী ও অভিসারী পাত সীমানার মধ্যে দুটি পার্থক্যগুলি হল –

(i) পাতের চলন :

অপসারী পাত সীমানায় পাতগুলি পরস্পরের বিপরীতমুখে অগ্রসর হয় ।

অভিসারী পাত সীমানায় পাত গুলি পরস্পরের দিকে অগ্রসর হয় ।

(ii) প্রভাব :

অপসারী পাত সীমানায় নতুন ভূমিরূপ ঘটিত হয়।

অভিসারী পাত সীমানায় সমুদ্র তলের বিনাশ ঘটে ।

(iii) ভুমিরুপ সৃষ্টি : 

অপসারী পাত সীমানায় মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা গঠিত হয় ।

অভিসারী পাত সীমানায় সমুদ্র খাতের সৃষ্টি হয় ।

৯. অগ্ন্যুৎগম কি ?

উত্তরঃ ভূ-অভ্যন্তরের গলিত সান্দ্র ম্যাগমা , গ্যাস , জলীয় বাষ্প ,  যে প্রক্রিয়ায় কোন ফাটল বা গহ্বরের মধ্য দিয়ে  বিস্ফোরণসহ প্রচণ্ড জোরে বা ধীর গতিতে শান্ত ভাবে ভুপৃষ্টের বাইরে আসে , সেই প্রক্রিয়াকেই বলা হয় অগ্ন্যুৎগম ।

১১. আগ্নেয় পর্বত কাকে বলে ?

উত্তরঃ অগ্ন্যুৎগমের সময় আগ্নেয় পদার্থ ফালটের চারিদিকে জমা হয়ে শঙ্কু আকৃতির পর্বতের আকার ধারণ করে সঞ্চয় কার্যের ফলে সৃষ্ট এই পর্বতকে বলে আগ্নেয় পর্বত। যেমন – ভারতের ব্যরেন , ইতালির ভিসুভিয়াস ।

 ১২. বিদার অগ্ন্যুৎগম কাকে বলে ?

উত্তরঃ অপসারী ও নিরেপেক্ষ পাত সীমানায় বিস্ফোরণ ছাড়া শান্ত ভাবে অগ্ন্যুৎগম ঘটে এইধরনের অগ্ন্যুৎগমকে বলে বিদার অগ্ন্যুৎগম ।

১৩. ভূগাঠনিক প্রক্রিয়া বলে ?

উত্তরঃ ভূ-অভ্যন্তরে ও ভূ-পৃষ্টে ক্রিয়াশীল যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভুমিরুপের সৃষ্টি হয়, তাকেই বলে ভূগাঠনিক প্রক্রিয়া। যেমন- অগ্ন্যুৎপাত একটি ভূগাঠনিক প্রক্রিয়া ।

১৪.  ভূগাঠনিক প্রক্রিয়াকে কটি ভাগে ভাগ করা যায় কি কি ?

উত্তরঃ ভূগাঠনিক প্রক্রিয়াকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-

(i) অন্তর্জাত প্রক্রিয়া   (ii) বহির্জাত প্রক্রিয়া ।

১৫. প্রশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নিবলয় বলা হয় ?

উত্তরঃ পৃথিবীর অধিকাংশ জীবন্ত আগ্নেয়গিরি প্রশান্ত মহাসাগরের বলয়ের মতো ঘিরে রয়েছে । প্রশান্ত মহাসাগরের দুদিকের উপকূলের এই আগ্নেয়গিরি বলয়কে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নিবলয় বলে। এই  বলয়ের মধ্যে রয়েছে , ফুজিয়ামা, পিনাতুবা , ক্রাকাতোয়া , সেন্ট হেলেন্স, পোপোক্যাটিপেটল , কোটোপ্যাক্সি  প্রভৃতি আগ্নেয়গিরি রয়েছে ।

১৬. ভূমিকম্প সৃষ্টির কারণগুলি কি কি ?

উত্তরঃ  ভূমিকম্পের প্রাকৃতিক কারণ:

(i) পাত সঞ্চারণের ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় ।

(ii) অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্টি হয় ভূমিকম্প ।

(iii) ভূআলোড়ন, পৃথিবীর অভ্যন্তরের কোন সঞ্চিত শক্তি হঠাৎ মুক্ত হলে   ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।

ভূমিকম্পের অপ্রাকৃতিক কারণ :

(i) ভূগর্ভের গহ্বর , খনি ও সুরঙ্গ খননের কারণে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় ।

(ii) মানুষের প্রয়োজনে কৃত্রিম উপায়ে জলাধার নির্মাণের কারণে জলাধার নির্মাণ ।

(iii)  ধ্বস , বোমা বিস্ফোরণ ইত্যাদি কারণেও ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় ।

১৭. ভূমিকম্প কি ?

উত্তরঃ পৃথিবীর স্থিতিস্থাপক অভ্যন্তরে কোন সঞ্চিত শক্তি হঠাৎ মুক্ত হলে ভূত্বক কম্পিত হয় একে বলে ভূমিকম্প (Earthquake)। প্রতি মুহূর্তে  কোথাও কম্পিত হচ্ছে ।

১৮. বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য কি কি ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে ?

উত্তরঃ বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য গৃহীত ব্যবস্থাপনা-

(i) বাড়ির ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলি চিহ্নিতকরণ

(ii) দুর্যোগ মোকাবিলার পরিকল্পনা

(iii) জরুরিকালীন জিনিস পত্র গুছিয়ে রাখা

(iv)  ভূমিকম্প চলাকালীন কোন শক্ত আসবাবের তলায় আশ্রয় নেওয়া ।

(v) কম্পন থেমে গেলে আঘাত ও ক্ষয়ক্ষতির অনুসন্ধান করা ।

১৯. পৃষ্ঠ তরঙ্গ কি ? পৃষ্ঠ তরঙ্গ কয় প্রকার কি কি ?

উত্তরঃ  ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র থেকে ভূ-পৃষ্ঠ বরাবর যে তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে (3-4 কিমি/ সে.) তাকে পৃষ্ঠ তরঙ্গ বলে।

পৃষ্ঠ তরঙ্গ দুই প্রকার –

(i) লাভা তরঙ্গ

(ii) র‍্যালে তরঙ্গ ।

২০. মৃত আগ্নেয় গিরি কাকে বলে ?

উত্তরঃ  যে সব আগ্নেয় গিরি গুলি প্রাচীন কালে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে , ভবিষ্যতে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভবনা নেই সেই সব আগ্নেয়গিরিকে বলা হয় মৃত আগ্নেয়গিরি ।

যেমন-  মেক্সিকোর পারকুটিন , মায়ানমারের পোপো ।

 

Thanks For Reading : অষ্টম শ্রেণীর ভূগোল অস্থিত পৃথিবী দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর ।

 


■  আরো পড়ুনঃ   


 

Leave a comment