কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস প্রণীত শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা এটি সংস্কৃত মহাকাব্য মহাভারত-এর অংশ। হিন্দুরা গীতাকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণী মনে করেন। আজকের এই পর্বে আমরা শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার বিষয়বস্তু সম্বন্ধে আলোচনা করব ।
আশা রাখি , আমাদের এই উপ স্থাপনা B.A Sanskrit –এর ছাত্রছাত্রীদের এবং WBBSC class -11 এর ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে খুবই উপযোগী হতে চলেছে।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার বিষয়বস্তু সম্বন্ধে আলোচনা করো |
কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস প্রণীত ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা’ মহাভারতের ভীস্ম পর্বের একটি বিখ্যাত অংশ। ভীস্ম পর্বের ২৫ – ৪২ এই অষ্টাদশ অধ্যায় গীতা নামে পরিচিত। এহা ভারতীয় আধ্যাত্মবাদের মর্মবাণী। ভারতীয় নানা দার্শনিক মতবাদের কী অপূর্ব সমন্বয়। শাস্ত্র সমুদ্র মন্থন হয়ে গীতামৃতের উদ্ভব। তাই বলা যায় “গীতা সুগীতা কর্তব্যা কিমন্যৈঃ শাস্ত্রবিস্তরৈঃ। ”
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সমরাঙ্গনে উপস্থিত সম্মুখস্থ আত্মীয় পরিজনকে দেখে অর্জুন বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং যুদ্ধ পরিত্যাগের বাসনা জানালে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে স্বধর্ম পালনের যে উপদেশ বাণী শুনিয়েছিল তাই ‘গীতা ’ নামে পরিচিত। মোক্ষ লাভের তিন পথ – কর্ম , জ্ঞান ও ভক্তির সমন্বয় দেখানো হয়েছে ।
গীতার মর্মবাণী তিনটি – আত্মা অবিনশ্বরত্ব, নিস্কাম কর্মযোগ, পরিপূর্ণভাবে ঈশ্বরের সমর্পণ। ধর্মে উদারতা , কর্মে নিস্কামতা, জ্ঞানে ভগবদভাব , ও ভক্তির দ্বারা ভগবৎ শরনাগতি এই উদার, সর্বজনীন ধর্মোপদেশই শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার শিক্ষা। তাই বলা হয়েছে –“কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন”।
অর্থাৎ কর্মেই তোমার অধিকার ফলে নয়। গীতায় আঠারো অধ্যায়ব্যাপি উপদেশের সার কথা হল “সর্বধর্ম পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ”।
এইভাবে গীতা সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে বিশ্বধর্ম, বিশ্বপ্রেম ও বিশ্বমানবতার মর্মবাণী শোনায়। তাই গীতা সকল সম্প্রদায়ের অবশ্য পাঠ্য।
প্রশ্ন উত্তরঃ
১. গীতার রচয়িতা কে ?
উত্তরঃ ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা’ মহাভারতের ভীস্ম পর্বের একটি বিখ্যাত অংশ। মহাভারত যেহেতু কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের লেখা সুতরাং ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা’ কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের রচনা ।
২. গীতায় শ্রীকৃষ্ণের কয়টি শ্লোক আছে ?
উত্তরঃ গীতায় শ্রীকৃষ্ণের ৭০০ টি শ্লোক আছে ।
৩. গীতার কয়টি অধ্যায় আছে ?
উত্তরঃ গীতার ১৮ টি অধ্যায় আছে ।
৪. গীতার অপর নাম কি ?
উত্তরঃ গীতা ৭০০ টি শ্লোকের সমন্বয়ে ধর্মগ্রন্থ । তাই তাকে সপ্তশতী বলে ।
৫. গীতার বিষয়বস্তু কি ?
উত্তরঃ কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সমরাঙ্গনে উপস্থিত সম্মুখস্থ আত্মীয় পরিজনকে দেখে অর্জুন বিষাদ গ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং যুদ্ধ পরিত্যাগের বাসনা জানালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে স্বধর্ম পালনের যে উপদেশ বাণী শুনিয়েছিল , সেই বাণী নিয়েই গঠিত গীতা ।
আরো পড়ুন –
- ভারতীয় সমাজ ও সাহিত্যে রামায়ণের প্রভাব আলোচনা করো । B.A Sanskrit |
- মহাভারতের রচনাকাল সম্পর্কে আলোচনা করো । B.A Sanskrit
- রামায়ণের রচনাকাল সম্বন্ধে আলোচনা | B.A Sanskrit
- অধিবিদ্যার সম্ভাব্যতা হিউম ও কান্টের মতবাদ | B.A Philosophy
- শিক্ষাক্ষেত্রে অভ্যাস গঠনের নিয়মাবলী ও গুরুত্ব | B.A Education
- ফ্রয়েডের ব্যক্তিত্ব বিকাশের তত্ত্ব |
- মনোযোগ কাকে বলে মনোযোগের শর্তগুলি লেখ |