একটি নদীর আত্মকথা- বাংলা প্রবন্ধ রচনা

আজকের পর্বে আমরা আপনাদের কাছে তুলে ধরবো একটি নদীর আত্মকথা রচনা। এই রচনাটি অর্থাৎ একটি নদীর আত্মকথা রচনা class 10 যা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উভয় ছাত্র ছাত্রীদের (একটি নদীর আত্মকথা রচনা class 12)একই ভাবে কাজে লাগবে। এই রচনাটিতে একটি নদীর আত্মকথা গঙ্গা এই বিষয়টি অতি সহজ ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সপ্তম শ্রেনী ,অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র ছাত্রীরাও এই প্রবন্ধ রচনাটি সংক্ষিপ্ত করে লিখে নিতে পারো।

 

একটি নদীর আত্মকথা- বাংলা প্রবন্ধ রচনা
একটি নদীর আত্মকথা- বাংলা প্রবন্ধ রচনা

 

একটি নদীর আত্মকথা- বাংলা প্রবন্ধ রচনা | Akti nadir antakatha rachana

“এতো বড়ো আকাশের নীচে ,

যে তোমাকে সর্বস্য মেনেছে।

মমতা , মায়ার প্রতিনিধি,

চিরকাল থাকো তুমি নদী। ”

ভূমিকা :

আমি সেই নদী যাকে ভারতবাসী দেবী জ্ঞানে পূজা করে। আমার প্রবাহিত জলকে সকলে পবিত্র বলে মনে করে। যুগ যুগ ধরে বহু সাধক, বহু কবি আমাকে নিয়ে কত স্তুতি ও কবিতা রচনা করেছে। আমি হলাম গঙ্গা । আমিই আবার দেবলোকে মন্দাকিনী, আমিই আকাশ পাতালে ভগবতী।

আমার গতিপথ :

উত্তর ভারতকে অতিক্রম করে ২৫০০ কিমি পথ পেরিয়ে গৌরবঙ্গে প্রবেশ করে আমি দুটি শাখায় বিভক্তি হয়ে সাগরে মিলিত হয়েছি। ভারতবর্ষের মধ্যে আমি এতো দীর্ঘপথ অতিক্রম করেছি। ভারতের অন্যান্য নদীর তুলনায় আমাকে নিয়ে মানুষের উৎসাহ সবথেকে বেশি।

আমার পৌরানিক পরিচয় :

স্বর্গ থেকে মর্ত ভূমিতে আমার অবতারণ প্রসঙ্গে পৌরানিক কাহিনী রয়েছে। সগর রাজার সন্তানদের উদ্ধার করার জন্য ভগীরথের অনুরোধে আমি স্বর্গ থেকে মর্তে অবতারণ করি।

আমার প্রচন্ড জলস্রোতে মর্তভূমি যাতে রক্ষা পায় তার জন্য স্বয়ং মহাদেব তার মস্তিষ্কে আমায় ধারণ করেন। ভগীরথ  আমাকে মর্তভূমিতে আমার গতিপথ দেখিয়ে নিয়ে যায়। তাই আমার অপর নাম ভাগীরথী।

আবার আমার গতিপথে জহ্নিমুনির আশ্রম থাকায় জলস্রোতে তা ভেসে যায়। তখন জহ্নিমুনি আমার সমস্ত জলধারা পান করে ফেলেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত জানু দিয়ে তিনি আমাকে আবার বাইরে নির্গত করেন। তাই আমার অপর নাম জহ্নবী।

আমার গর্ব  :

আমার দীর্ঘ মাত্রা পথে আমাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকছে কত মানুষ। তাদের কেউ মাছ ধরে, কেউ খেয়া পারাপার করে। কেউ বা আবার কৃষিকাজ করে। আমার তীরে গড়ে উঠেছে অনেক স্নানের ঘাট। তীরে তীরে দেখা যায় অনেক গাছপালা অরণ্য ও তীর্থস্থান। আমার ঘাটে দলে দলে পুন্যথীরা ছুটে আসে পূর্ন অর্জনের জন্য। আমাকে কেন্দ্র করে কত সাহিত্যি সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের জীবনের পরিসমাপ্ত হয় মৃত্যুতে, সেই মৃত্যুর পর আমার তীরে মৃতদেহ দাহ করে আত্মার সদগতি লাভ হয় । কবি সংকরাচার্য -এর লেখনীতে ফুটে উডেছে-

“রোগং শোকং তাপং পাপং হর মে ভগবতি কুমতিকলাপম |
ত্রিভুবনসারে বসুধাহারে ত্বমসি গতির্মম খলু সংসারে ||”

আমার দুঃখ :

আধুনিক কালে শিল্প কারখানার নোংরা জল, শহরাঞ্চলের নোংরা আবর্জনা আমার জলে এসে মিশছে তাতে আমার জল দূষিত হচ্ছে। তাছাড়া পলি পড়ে আমার স্বচ্ছন্দ জলস্রোত আজ অনেকটাই গতিহীন। কোনো কোনো জায়গায় আমার প্রবাহ ধারা অতি ক্ষীন হয়ে গেছে। আমার দুঃখ হল এই যে পবিত্রতাকে এই ভাবে অপবিত্র করা কি ঠিক ?

উপসংহার :

মৃদুমন্দ বাতাসকে বক্ষে নিয়ে , দু – পাশের জনজীবনের চিত্রকে সঙ্গে নিয়ে আজও আমি বয়ে চলেছি অনন্ত চলা আমার। আজও আমাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্তোত্র পাঠ , মঙ্গল শঙ্খ প্রভৃতি ধ্বনীত হচ্ছে । আজও আমি মানুষের মনের মনি কোঠায় স্থান করে আছি। কবি সংকরাচার্য -এর লেখনীতে ফুটে উডেছে পরম পার্থনা-

“দেবি! সুরেশ্বরি! ভগবতি   গঙ্গে ত্রিভুবনতারিণি তরলতরংঙ্গে |
শংকরমৌলিবিহারিণি বিমলে মম মতিরাস্তাং তব পদকমলে ||”

Thanks For Reading: একটি নদীর আত্মকথা রচনা class 9/একটি নদীর আত্মকথা রচনা pdf download

আন্যান্য রচনা পড়ুনঃ 

১. বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা ৪০০ শব্দের

২. ছাত্র জীবনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রচনা

৩.মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চা প্রবন্ধ রচনা

Leave a comment