মুদালিয়ার কমিশনের সুপারিশগুলি আলোচনা

উচ্চশিক্ষার ভিত্তি সুদৃঢ় করতে প্রতিষ্ঠিত হয় মুদালিয়র কমিশন। আজ আমাদের আলোচনায় মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্যে মুদালিয়ার সুপারিশগুলি (The Recommendations Of The Mudaliar Commission On Secondary Education)।সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব।

যা Class 11 Education/ B.A Education Honours/ B.A Education General এর যেসব ছাত্রছাত্রী রয়েছ তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। Education -এর প্রয়োজনীয় সব Notes তোমরা এই পেজে পাবে ।

আমরা সহজ ও সংশ্লিষ্ট ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্বরূপ বিষয়গুলি উপস্থাপন করে থাকি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি । আলোচনার এই পর্বের আলোচ্য বিষয়ঃ মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্যে মুদালিয়ার কমিশনের সুপারিশগুলি আলোচনা করো |  

মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য বিষয়ে মুদালিয়ার কমিশনের সুপারিশ গুলি আলোচনা করো |
মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য বিষয়ে মুদালিয়ার কমিশনের সুপারিশ গুলি আলোচনা করো |

 

মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্যে মুদালিয়র কমিশনের সুপারিশগুলি আলোচনা করো |  

উচ্চমানের মাধ্যমিক শিক্ষা প্রচলিত না হলে উচ্চশিক্ষার ভিত্তি সুদৃঢ় হতে পারে না। তৎকালীন মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার দুর্বলতা দূর করার জন্য ১৯৫২ সালে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ লক্ষণ স্বামী মুদালিয়রের নেতৃত্বে মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়। মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামোগত সংস্কারের জন্য মুদালিয়র কমিশন যে মূল্যবান সুপারিশগুলি করেছিলেন তা হল –

মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামোঃ

প্রথমত,

মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো প্রসঙ্গে এই কমিশনে বলা হয়, এমন একটি শিক্ষা কাঠামো গড়ে তুলতে হবে যা প্রাথমিক শিক্ষার স্তর, উচ্চশিক্ষার স্তর এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়। এই কমিশনে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার দুটি পর্যায়ের কথা বলেছেন। প্রথম পর্যায়ে থাকাবে তিন বা চার বছরের নিম্ন মাধ্যমিক এবং পরবর্তী পর্যায়ে থাকবে চার বছরের উচ্চতর মাধ্যমিক পর্যায়।

দ্বিতীয়ত,

কিছু সংখ্যক বিদ্যালয়কে অবিলম্বে উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার সুপারিশ করেছিলেন কমিশনে।

তৃতীয়ত,

কমিশনে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে শিক্ষার্থীদের সাধারণ শিক্ষা ও বৃত্তিশিক্ষা সম্পর্কীয় শিক্ষার অধিকতর সুযোগ দেবার জন্য বহুমুখী বিদ্যালয় স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। এতে শিক্ষার্থীরা নিজের যোগ্যতা ও রুচি অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে।

চতুর্থত,

বৃত্তি শিক্ষাকে উৎসাহ দেবার জন্য কমিশন বহুমুখী বিদ্যালয়ের সঙ্গে কারিগরি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার সুপারিশ করেছিলেন।

 পঞ্চমত,

এই কমিশন পিছিয়ে পড়া শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য বিশেষ ও উপযুক্ত শিক্ষার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

ষষ্ঠত,

এই শিক্ষা পরিকল্পনায় নারীদের সমান অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং বলা হয় নারীদের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পৃথক কোনো ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই।

মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রমঃ

প্রথমত,

কমিশন বলেছেন, এই স্তরের অন্তর্গত উচ্চ বুনিয়াদি এবং অবুনিয়াদী বিদ্যালয়গুলিতে একই পাঠক্রম অনুসরণ করতে হবে। এই পাঠ্যক্রমে থাকবে – (i) ভাষা সমূহ, (ii) সমাজবিদ্যা, (iii) সাধারণ বিজ্ঞান, (iv) গণিত, (v) কলা ও সঙ্গীত  (vi) হস্ত শিল্প  (vii)  শরীর শিক্ষা।

দ্বিতীয়ত,

পাঠ্যক্রমের মধ্যে অভিজ্ঞতাগুলিকে এমনভাবে রাখা হবে যাতে শিক্ষার্থীরা নিজের সামর্থ্য ও রুচি অনুযায়ী বিষয় নির্বাচনের সুযোগ পায়। এই নীতি অনুসরণ করে কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রমকে দুটি অংশে বিভক্ত করেছেন – আবশ্যিক অংশ এবং ঐচ্ছিক অংশ।

আবশ্যিক অংশঃ

  1. ভাষা এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে দুটি ভাষা শেখা আবশ্যিক মাতৃভাষা এবং আঞ্চলিক বা জাতীয় ভাষা।
  2. সমাজ বিজ্ঞান ইতিহাস, ভূগোল ।
  3.   সাধারণ বিজ্ঞান গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা।

ঐচ্ছিক অংশঃ

বহুমুখী শিক্ষা, পাঠক্রম, এক্ষেত্রে কমিশন সাতটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন যাকে ‘সপ্তপ্রবাহ’ বলা হয়। এই সাতটি প্রবাহ হল – মানবীয়বিদ্যা, বিজ্ঞান, কারিগরি বিদ্যা, বাণিজ্য, কৃষি, চারুকলা ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান।


আরো পড়ুনঃ


 প্রশ্নউত্তরঃ 

১. মুদালিয়ার কমিশন কবে গঠিত হয় ?

  উত্তরঃ মুদালিয়ার কমিশন1952 সালের 23 সেপ্টেম্বর গঠিত হয় । 

২. মুদালিয়ার কমিশন কার নেতৃত্বে গঠিত হয় ?

উত্তরঃ  মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ লক্ষণ স্বামী মুদালিয়রের নেতৃত্বে গঠিত হয় মুদালিয়ার কমিশন ।

৩. মুদালিয়ার কমিশনের অপর নাম কি ?

 উত্তরঃ মুদালিয়ার কমিশনের অপর নাম মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন ।

৪. মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশনের সভাপতি কে ছিলেন ?

 উত্তরঃ  মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশনের সভাপতি ছিলেন ডঃ লক্ষণ স্বামী মুদালিয়র  ।

৫. মুদালিয়ার কমিশনের মতে মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি ?

  উত্তরঃ মুদালিয়ার কমিশনের মতে মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য- 

i) উচ্চমানের মাধ্যমিক শিক্ষার প্রচলন করা ।

ii) শিক্ষার্থীদের সুংহত ও রুচি অনুযায়ী বিষয় নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া ।

iii) শিক্ষার্থীকে দুটি ভাষা শেখা আবশ্যিক মাতৃভাষা এবং আঞ্চলিক বা জাতীয় ভাষা।

iv) বহুমুখী বিদ্যালয়ের সঙ্গে কারিগরি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করাও ছিল কমিশনের এক লক্ষ্য ।


 

 

Leave a comment