প্রিয় পাঠক আজকের বাংলা রচনা পর্বে যে রচনাটি আমরা উপস্থাপন করতে চলেছি তা হল-বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম । মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যামিক শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বাংলা প্রবন্ধ রচনা নিয়ে আমাদের আজকের উপস্থাপনা । এছাড়াও পঞ্চম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীর রচনা তোমরা পেয়ে যাবে এই পেজে।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচনা
ভূমিকা :
“দ্রোহের ঝংকারে ভাঙে গোলামির জিঞ্জির
বুকের পিঞ্জর খুলে উড়ে যায় মুক্ত পাখি
অনুভব থেকে অনুভবে আছি চির মহিমায়
হে বিদ্রোহী কবি
কালের উদিত রবি ” -জহিরুল হক।
বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে জগতে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টিকারী ,দৃপ্ত কণ্ঠধারী এমন এক সাহিত্যিকের অভ্যুত্থান ঘটে । যিনি শান্ত, স্থির, সুমধুর ছন্দের আবরণে আবৃত কাব্য সাহিত্যের ধারাকে বাঁধা বন্ধনহারা , উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় উচ্ছাসিত প্রাণে উজ্জীবিত করে , বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহের বাণী বিকশিত করলেন ।
সামাজিক অন্যায় অবিচার সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের বাণী প্রথম তারই কণ্ঠে উচ্চারিত হয়, বলিষ্ঠ কণ্ঠে তিনিই উচ্চারণ করেছিলেন, ‘যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস, যেন লেখা হয় আমার রক্তলেখায় তাদের সর্বনাশ ?’ যার অগ্নিক্ষরা চোখে ছিল বিপ্লবের অশনি সংকেত , যিনি ছিলেন গণজাগরণের ঋত্বিক, যার কবিতায় ফুটে উঠেছে স্বার্থলোভী মানুষের প্রতি তীব্র তাচ্ছিল্য ও প্রতিবাদ ,নিপীড়িত মানুষের নব উত্থানমন্ত্র , যার সঙ্গীতে ছিল মহাবেদনার ,মহাবিলাপের সুর। তিনি হলেন বাংলার বিদ্রোহী কবি, একজন আদর্শ দেশপ্রেমিক কাজী নজরুল ইসলাম।
জন্ম ও পারিবারিক জীবন :
১৮৯৯ সালের ২৪শে মে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি । তাঁর পিতা ধর্মপ্রাণ ফকির আহমদ, মাতা জাহেদা খাতুন। তিন ভাই, এক বোনসহ তাঁদের অসচ্ছল দরিদ্র পরিবার। তাঁর ডাক নাম দুখু মিঞা। শৈশবেই তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। পিতার মৃত্যুর পর সীমাহীন দারিদ্র্য আর অনিশ্চয়তা তাঁকে ঘিরে ধরেছিল। সেই বিপর্যস্ত মুহূর্তেও পিতার উদার, উন্নত আদর্শই হলো তাঁর আশ্রয়। তাঁর জীবন-সংগ্রামের হাতিয়ার।
চরিত্র :
পিতার আদর্শে মানবতার মহামন্ত্রে তিনি দীক্ষিত। তৎকালীন সমাজে ধর্মীয় গোঁড়ামি, সাম্প্রদায়িকতা তাঁর ওপর খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি ,বরং ধর্মবিষয়ে পিতার উদারতা তাঁর মনকে পরিশীলিত করেছিল। বাংলা ও ফারসী সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ, তাঁর উত্তরাধিকারসূত্রেই পাওয়া। পারিবারিক পরিবেশই তাঁকে দিয়েছিল দুঃখ জয়ের মহৎ উত্তরাধিকার , তাঁর সুগঠিত দেহ , অপিরিমিত স্বাথ্য , ও প্রাণ খোলা হাসির জন্য তিনি ছিলেন সকলের প্রিয়।
নিপীড়িত মানুষের প্রতি তিনি ছিলেন দয়াশীল , শৈশব থেকেই তিনি মানুষের প্রতি অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন , সমাজের জাতপাত , বর্ণ বৈষ্যমের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার হয়েছেন তিনি । তাঁর কবিতা , গান , নাটক, উপান্যাসে তাঁর এই প্রতিবাদী সত্তা বারংবার প্রস্ফটিত হয়েছে ।
শিক্ষাজীবন :
নজরুলের প্রাথমিক শিক্ষার আরম্ভ গ্রামের বিশিষ্ট মৌলবী কাজী ফজলে আহমদের কাছে । পড়াশোনায় ছিল তাঁর বিশেষ আগ্রহ ,জ্ঞান আহরণের তীব্র ক্ষুধা , তিনি ছিলেন প্রখর মেধাবী ।শৈশবে তাঁর পিতার মৃত্যু, পারিবারিক দায় দায়িত্ব ফলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠে। বেঁচে থাকার তাগিদে তিনি জীবিকার সন্ধানে বেড়িয়ে পড়েন ।
কিন্তু জানা ও শেখার আগ্রহ তাঁর কখনই থেমে থাকেনি , জানার তীব্র তৃষ্ণা নিয়ে তিনি পাঠ করেছেন কোরান, রামায়ণ, মহাভারত, ভাগবত,পুরাণ, কথকতা, যাত্রাগান। শিখেছেন উর্দু আরবী ফারসী সংস্কৃতর মতো একাধিক ভাষা। এছাড়াও বাউল ,সুফি সাধকদের সান্নিধ্যে তিনি লোকসংগীত চর্চা শুরু করেন । এর ফলে তাঁর সংগীতের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয় , বেশ কিছু নাটকের জন্য তিনি গান রচনা করেছিলেন ।
রানীগঞ্জের সিয়ারসোল বিদ্যালয় ছেড়ে , বর্ধমানের মাথরুন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি সেখানে প্রধান শিক্ষক কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক নজরুলকে তাঁর স্নেহবন্ধনে আবদ্ধ করেন । পড়াশোনার পাশাপাশি, উপার্জনের চেষ্টায় তিনি নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ালেন । মাথরুন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন ময়মনসিংহ জেলার দরিয়াপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানেও বেশিদিন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। তাঁর জীবনতরী এমনি করেই ভেসে চলেছিল এক বন্দর থেকে আরেক বন্দরে।পুনরায় তিনি সেই সিয়ারসোল বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন অষ্টম শ্রেণীতে।সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হল শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের।
সৈনিক নজরুল :
শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের উত্থান পতন , একেরপর এক সংঘর্ষ, চরম দারিদ্রতার তাড়নায় তিনি দিশা হীনের মতো ছুটে চললেন এদিক ওদিক। এর মাঝেই উঠল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের রণদুন্দুভি। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি বেঙ্গলী রেজিমেন্টে যোগ দিলেন। প্রথমে প্রশিক্ষণের জন্য ফ্রোট উইলিয়াম ও পরে সীমান্ত প্রদেশের নোশেরায় যান।
সেখানেও তিনি তাঁর সাহিত্য চর্চা অব্যাহত রাখেন , কিছু কবিতা , গান , উপন্যাসও লেখেন । সেখানেই তাঁর সাহিত্য চর্চা অন্য এক পর্যায়ে উন্নীত হয় । তাঁর লেখনীর মাধ্যমে তিনিই প্রথম ব্রিটিশ সরকারের অধীনতা থেকে মুক্তি চান । ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে যুদ্ধ শেষ হলে বেঙ্গলী রেজিমেন্টের বিলোপ ঘটে এবং তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন।
নজরুলের প্রতিভা :
দেশে ফিরে শুরু হল অন্য আরেক জীবন সংগ্রাম । কালবৈশাখীর ন্যায় উন্মত্তা নিয়ে তিনি পরাধীনতার দুঃসহ বেদনা দূর করতে অবতীর্ণ হলেন সাহিত্যের আসরে । তিনি ছিলেন উদাত্ত কণ্ঠের অধিকারী, রাগ-রাগিণী চর্চার অনায়াস দক্ষতা ছিল তাঁর। তাঁরই কণ্ঠে সুর পেল শিকল পরার গান –
“এই শিকল পরা ছল মোদের এ শিকল পরা ছল
এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল। “
১৯২৪ সালে আগস্ট মাসে এই ভাঙ্গার গান নামক কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় । ব্রিটিশ সরকার ১৯২৪ সালের নভেম্বর মাসেই তা বাজেয়াপ্ত করেছিল , এই গ্রন্থ ব্রিটিশ আমলে কখনই এই গ্রন্থের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হইনি ।
বিদ্রোহী কবি নজরুল :
প্রতি মানুষের জীবনার্দশন ভিন্ন ভিন্ন , প্রত্যকটি মানুষ তাঁর জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকেন । নজরুল এই বিষয়ে অগ্রগামী । দারিদ্রতা , হতাশা কবির জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে , কিন্তু তিনি কখনই তিনি হার মানেনি। জীবনে চলার পথে তিনিই সকলের আদর্শ উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনিই মানুষের মনে বিদ্রোহের বীজ বপন করেছেন ।
কিন্তু কার বিরুদ্ধে তাঁর এই বিদ্রোহ ? আসলে তিনি দেখেছেন মানবতার লাঞ্ছনা, দেখেছেন ধর্মের ছদ্মবেশে মানবিক অধিকারহরণ, শোষণ-শাসন-ত্রাসের নির্বাধ বিস্তার, দেখেছেন অসাম্যের নির্লজ্জ উদ্ধত আস্ফালন, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির উল্লাসমত্ততা, পরাধীনতার নাগপাশ-বন্ধন, ও কৃত্রিমতা কবির হৃদয়কে বারংবার ক্ষত বিক্ষত করেছে। তাঁর একমাত্র উপলব্ধি, ‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’।
সমাজের এই লাঞ্ছিত মানবতা তাঁর কবি কল্পনাকে করেছে আলোড়িত করেছে। এই জড় সমাজের বুকে প্রাণ সঞ্চারের জন্য তাঁর কবি-কন্ঠ সোচ্চার হয়েছেন তিনিই প্রতিবাদী বানীর সষ্ট্রা, অভয় মন্ত্রের রচয়িতা-
” বল নাহি ভয় নাহি ভয়
বল মাভৈঃ মাভৈঃ , জয় সত্যের জয়
বল মাভৈঃ মাভৈঃ পুরুষোত্তম জয়
তুই নির্ভর কর আপনার পর।”
তিনি পান করেছেন সমাজ-মথিত গরল। তাঁর বুকে বিষজ্বালা। কিন্তু সাধনায় মেতেছেন অমৃতের। তিনি বলেছেন ‘সুন্দরের ধ্যান, তাঁর স্তবগানই আমার উপাসনা, ধর্ম।“ সেই ধর্ম পালনে তিনি সার্থক।পরাধীনতার অন্ধকার ঘুচাতে ,স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে দেশবাসীকে দীক্ষিত করেছেন যিনি তিনি হলেন নজরুল ইসলাম। পরাধীনতার প্রতি তীব্র বিদ্বেষে, তিনি গর্জিত কণ্ঠে বলে উঠলেন –
” কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট
রক্ত জমাট , শিকল পূজার পাষাণ বেদী।”
তাঁর এই অগ্নিমন্ত্রের দ্বারা দেশবাসীর অন্তরে জ্বালালেন বিদ্রোহের মশাল । দেশবাসী হয়ে উঠেছিল চঞ্চল, আবেগ-অস্থির , ও বিদ্রোহী। তরুণ প্রজন্মকে তিনি প্রজ্বলিত করেছেন তাঁর গান, ও কবিতার হুতাশনে।
তাঁর সাহিত্যে বিদ্রোহের পাশাপাশি মানবিক বেদনা, প্রেমপ্রীতি,আনন্দ দুঃখ , আবেগ , অনুভূতি সমমর্যাদায় স্থান লাভ করেছে । নজরুলের সাহিত্যকৃতির কোন বিকল্প নেই তিনি এক ও অন্যন্য । তাঁর সাহিত্যকৃতি বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনায়, অপার সৌন্দর্যে সুশোভিত, অভিনব অলংকণে সুসজ্জিত। তিনি সর্বকালের সেরা। তাঁর কবি-প্রকৃতি সম্বন্ধে তাঁরই স্বীকারোক্তি, ‘আমি সুন্দরের হাতে বীণা, পায়ে পদ্মফুলই দেখিনি, তাঁর চোখ ভরা জলও দেখেছি।
নজরুলের কর্মময় জীবন :
সাহিত্য ও সঙ্গীতের সেবায় নজরুল নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন । বিভিন্ন পত্র প্ত্রিকার সঙ্গে তিনি যুক্ত হলেন ‘মহম্মদী’ ‘মোসলেম ভারত’ প্রভৃতি। মোসলেম ভারতেই প্রথম তাঁর ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি প্রকাশিত হয় । তাঁর এই কবিতার বিজয় রথ ছুটে চলল দিক বেদিক । তিনি লিখলেন যুগবাণী প্রবন্ধ যা ব্রিটিশ সরকারের দ্বারা বাজেয়াপ্ত করা হল । ১৯২২ সালে তিনি ধূমকেতু পত্রিকার সম্পাদকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হন । একে একে প্রকাশিত হল তাঁর কালজয়ী সব সাহিত্য সম্ভার । অগ্নিবীণা, দোলনচাঁপা, বিষের বাঁশি , ভাঙার গান , সর্বহারা ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ অজস্র সঙ্গীত ,নাটক।
রাজদ্রোহিতার অপরাধে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে কারারুদ্ধ করলেন । কিছু দিন কারান্তলে কাটানোর পর তিনি মুক্তি পেলেন । ‘ধূমকেতু’ ছাড়াও তিনি সম্পাদনা করেছিলেন ‘দৈনিক নবযুগ’, সাপ্তাহিক ‘লাঙল’, মাসিক ‘নওরোজ’।
উপসংহার :
১৯৪২ সালে কবি আক্রান্ত হলেন এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে। এই ব্যাধি-কবলিত হয়ে তিনি বহুদিন জীবন্মত হয়ে রইলেন। ‘পদ্মভূষণ’, ‘ডি-লিট’ ইত্যাদি বহু সম্মানে ভূষিত হলেন কবি। কিন্তু তখন বিস্মৃতি তাঁকে গ্রাস করেছে ,ইতি মধ্যে তিনি মানসিক ভারসম্য হারিয়েছেন। হারিয়েছেন তাঁর বাকশক্তি । শেখ মুজিবর তাঁকে আমন্ত্রণ জানালেন , তাঁকে দিলেন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। অবশেষে এলো সেই ১৯৭৬ সাল, ২৯শে আগস্ট কবির জীবন-দীপ চিরতরে নিবে গেল। মহাবিদ্রোহী রণক্লান্ত কবি এতদিনে চিরশান্তির কোলে ঘুমিয়ে পড়লেন।
জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতায় অভিজ্ঞ নজরুল ছিলেন পরম জ্ঞানী , দুঃসাহসিক , বিদ্রোহী , ও এক আদর্শ দেশপ্রেমিক। যিনি বিদ্রোহের দ্যুতি ছড়িয়ে দিয়েছেন ভারতবাসীর অন্তরে , প্রলয় হেনে ছিলেন , মুক্তির কেতন উড়িয়েছিলেন ,যার রক্ত লেখা ভারতবাসীকে পরাধীনতার নাগপাশ বন্ধন থেকে মুক্ত করেছে তিনি সকলের বিদ্রোহী কবি , কালজয়ী কাজী নজরুল ইসলাম ।
“ভুল হয়ে গেছে বিলকুল আর সব কিছু
ভাগ হয়ে গেছে ভাগ হয়নিকো নজরুল।”–অন্নদাশঙ্কর রায় ।
Thanks For Reading : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম
■ অনুসরণে লেখা যায় :
আমার প্রিয় কবি
নজরুল প্রতিভা
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী
আরো পড়ুনঃ