ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণী বাংলা

একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টারের একেবারে নতুন সিলেবাস অনুযায়ী বাংলা বিষয়ের দুটি গল্প রয়েছে – প্রেমেন্দ্র মিত্রের তেলেনাপতা আবিষ্কার  ও অন্যটি হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছুটি গল্প । ফটিকের চরিত্র অবলম্বনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছুটি গল্পের বিষয়বস্তু । এই গল্পের মধ্যে দিয়ে এক সরল সহজ গ্রাম্য বালকের চরিত্র ফুটে উঠেছে ।  এই  হৃদয় বিদারক , ও মর্মস্পর্শী গল্পটি পাঠকদের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে ।

 WBCHSE Class 11 ছাত্রছাত্রীদের জন্য ছুটি গল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ । class 11 বাংলা syllabus অনুযায়ী এই গল্প থেকে 5 marks-এর প্রশ্ন প্ত্র থাকবে । তাই এই পর্বে আমরা  ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর class 11 নিয়ে আলোচনা করব । আলোচ্য অংশে আমরা গুরুত্বপূর্ণ 5marks-এর প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করেছি । যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর খুঁজে চলেছ আশা করি  তাঁরা খুবই উপকৃত হবে । আমরা সহজ ও সংশ্লিষ্ট ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্বরূপ বিষয়গুলি উপস্থাপন করে থাকি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি । class 11 bengali 2nd semester –এর আজকের আলোচ্য বিষয়-ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণী বাংলা ।  

ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণী বাংলা
ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণী বাংলা

 

Contents hide
1 একাদশ শ্রেণী বাংলা | দ্বিতীয় সেমিস্টার
1.1 ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর
1.1.1 5 marks-এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণী বাংলা | দ্বিতীয় সেমিস্টার 

ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর

 

5 marks-এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর 

1. “বালকদিগের সর্দ্দার ফটিক চক্রবর্তীর মাথায় চট করিয়া একটা নতুন  ভাবোদয় হইল”- ফটিক চক্রবর্তী কে ছিল ? তার নতুন ভাবোদয় কী ছিল ? 
ফটিক চক্রবর্তী কী তার নতুন ভাবোদয়টি সম্পূর্ণ করতে পেরেছিল ?

উত্তরঃ  

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পের প্রধান চরিত্র হল তেরো বৎসর বয়সী ফটিক চক্রবর্তী। বয়স তার অল্প হলেও তাঁর উপস্থিত বুদ্ধি ও মনের অর্ন্তদ্বন্দ্ব গল্পের প্রধান অলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে ।

নতুন  ভাবোদয়ঃ 

ফটিক চক্রবর্তীর ভাইয়ের নাম মাখনলাল। ফটিক একদিন নদীর ধারে তার বন্ধু ও তার ছোটো ভাই মাখন লালের সঙ্গে খেলা করছিল। ফটিক ছিল সেই দলের সর্দ্দার, নদীর তীরে শাল কাঠের তৈরি একটি মাস্তুল/ গুঁড়ি গড়াচ্ছিল, তা দেখে ফটিকের মনে একটি নতুন ভাবের উদয় হলো যে তারা সবাই মিলে ওই গুঁড়িটাকে ঠেলে গড়িয়ে নিয়ে যাবে।

সকল ছেলেরা মিলে যখন সেই গুঁড়িটিকে মনোযোগ সহকারে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল তখন ফটিকের ভাই মাখনলাল গম্ভীর ভাবে সেই গুঁড়িটির উপর বসে পড়ে। ছেলেরা মাখনের এইরূপ উদার ও উদাসীন্ন্য দেখে বিমর্ষ হয়ে গেল। ছেলেদের মধ্যে একজন তখন ভয়ে-ভয়ে গুঁড়িটিকে একটু-আধটু ঠেলতে লাগল, কিন্তু তাতে কিছুই কাজ হলো না। শুধুমাত্র একটু-আধটু নড়াচড়া করে মাখনলাল গুঁড়ির উপর স্থায়ী আসন করে নিলো, ভাইয়ের এই উদারতা দেখে ফটিকের ইচ্ছা করছিলো এক চড় কষাতে , কিন্তু সে তা না করে প্রস্তাব দিলো মাখনকে সুদ্ধু এই গুঁড়িটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে  ।

ফটিক মনে করল দলের সর্দার হিসেবে এমন খেলায় তার গৌরব হবে, একবারও মনে হলো না এই খেলায় বিপদেরও সম্ভাবনা আছে । ছেলেরা কোমড় বেঁধে ঠেলা দিতেই। মাখন কাঠের গুঁড়ি থেকে পড়ে গেল, এবং ভূমি থেকে উঠে অন্ধভাবে ফটিকের নাকে-মুখে আঁচড় কেটে বাড়ির দিকে ফিরে গেল।

 

2. “তুই আমার গায়ে হাত তুলিস”- কে, কাকে এই উক্তিটি করেছিল ? বক্তার চরিত্রের কোন দিকটি এখানে প্রকাশ পেয়েছে ?

উত্তরঃ  

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ছুটি গল্পে আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটির বক্তা হল ফটিকের মা । তিনি ফটিককে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য উক্তিটি করেছন ।

নদীর তীরে খেলার সময় মাখন লালকে শাল কাঠের গুঁড়িসহ গড়িয়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। তখন সে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে এসে তার দাদা ফটিকের বিরুদ্ধে মায়ের কাছে নালিশ জানায়, এই বলে যে, ফটিক দাদা তাকে আবার মেরেছে। কিন্তু ফটিক তার মাকে বলে ভাই তার বিরূদ্ধে মিথ্যা নালিশ করছে। তার মা মাখনের পক্ষ নিয়ে ফটিকের কথা বিশ্বাস না করে ফটিককে দুটো তিনটে চড় মারে। তখন ফটিক মাকে ঠেলা দিলে তার মা চিৎকার করে, আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

আলোচ্য উক্তিটির মধ্য দিয়ে ফটিকের মায়ের বিচারহীন, বিবেকহীন এক মাতৃ সুলভ চরিত্র ফুটে উঠেছে। ফটিকের স্বভাব ছিল অত্যন্ত দুরন্ত। সেই তুলনায় তার ভাই মাখন লাল শান্ত । দুরন্ত স্বভাবের জন্য ফটিকের প্রতি তার মায়ের বিরক্তির প্রকাশ ঘটত। শান্ত স্বভাবের জন্য তার মা ফটিকের তুলানায় ছোট ছেলেকে বেশী স্নেহ করত । একজন মা হিসাবে দুই ছেলের প্রতি এমন বিপরীতমুখী ভালোবাসা কখনই কাম্য নয়।

এক ছেলে যতই দুরন্ত হোক সমানভাবে দুই ছেলেকে ভালোবাসা একজন আদর্শ মায়ের কর্তব্য। কিন্তু ফটিকের মা মায়ের এই আদর্শ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে। মাখনের প্রতি অধিক ভালোবাসা মাখনের মিথ্যা নালিশকে বিনা-বিচারেই মেনে নিয়েছে। ফটিক সত্য কথা বললেও মাতা তা মানতে রাজি হয়নি, উপরন্তু ফটিককেই দুটো-তিনটে চড় মারে।

এই আলোচ্য উক্তিটির মধ্যে ফটিকের মায়ের চরিত্রটি মা হিসাবে এক পক্ষ দোষে দুষ্ট এবং একজন বিচার-বিবেচনাহীন, বিবেক হীন মাতৃস্নেহে পরিণত হয়েছে ।

3. “ফঠিক তাঁর মাকে আনতে পাঠিয়েছিল” – বক্তা কে ? উক্তিটির আলোকে বক্তার চরিত্র বিশ্লেষণ কর। 

উত্তরঃ  

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি ‘ গল্পে আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন ফটিকের মামা বিশ্বম্ভর বাবু। পড়াশোনার জন্য ফটিক মামার সাথে কলকাতায় যায়। মামার বাড়ি গিয়ে চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে , ফটিক মানসিক দিক থেকে ভেঙে পড়ে।  একদিন ফটিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। নিজের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার আন্তরিক টানে কেবল মা,মা ধ্বনি তোলে। তখন বিশ্বাস দেওয়ায়, তার মামা তাকে আশ্বাস দেওয়ার জন্য আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

ফটিকের মামা বিশ্বম্ভর বাবুর ভগ্নী প্রীতি অত্যন্ত প্রবল ছিল। ফটিকের মামা কর্মসূত্রে পশ্চিমে থাকতেন, অনেকদিন পর বাড়ি ফিরেই সে বোনের বাড়ি দৌড়ে এসেছে বোনের খবর নিতে। বোনের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা না থাকলে কাজ থেকে ফিরেই কলকাতা থেকে এমন একটি গ্রামে কেউ ছুটে আসে না।

বিশ্বম্ভর বাবুর চরিত্রের অপর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো স্বার্থহীনতা, বিশ্বম্ভরের তিন সন্তান ছিল। তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার দায়িত্ব তাদের পিতারই ছিল, কিন্তু বিশ্বম্ভর তার বোনের ছেলে অর্থাৎ ফটিকের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। বিশ্বম্ভর বাবু যদি স্বার্থপর হতেন তাহলে সে নিজের সন্তানদের ভালোমন্দ, নিয়ে চিন্তা করতেন, কিন্তু তিনি তা না করে ফটিকের দায়িত্ব নেন – এটি একজন মামা হিসাবে নিঃস্বার্থ চরিত্রের পরিচয় বহন করে ।

বিশ্বম্ভর বাবু একজন বাস্তব ও বোধহীন একজন মানুষ । কারণ তার নিজের তিনটি  সন্তান থাকার সত্ত্বেও ফটিকের শিক্ষার দায়িত্ব নিয়ে, তিনি নিজের সাংসারে এক সংকট ডেকে আনে । ফটিক তার গ্রামে মুক্ত পরিবেশে স্বাধীনভাবে, খেলাধূলার মধ্য দিয়ে দিন কাটাতো , তা বিশ্বম্ভর বাবু ফটিকের এই মুক্ত জীবন থেকে তুলে এনে,, এক পরাধীন জীবনে নিয়ে এসে তার বাস্তব- হীনতার পরিচয় দিয়েছেন । মামার এই বাস্তব হীনতার জন্যই ফটিককে জীবন থেকে ছুটি গ্রহণ করতে হয়।

বিশ্বম্ভর বাবুর চরিত্রে অপর আরেকটি গুন হল  তিনি ছিলেন মানবদরদী। ফটিক যখন বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় তখন মামাই তার অনুসন্ধান চালায়।  ফটিকের অসুখে ডাক্তার আনা থেকে শুরু করে সবকিছুতেই তিনি কর্তব্য পরায়ণতার পরিচয় দিয়েছেন, মানবদরদী না হলে এমনটা কখনও হতো না, তিনি নিজের সন্তানের মতো ফটিককেও সমান স্নেহ করতেন ।

সর্বশেষে বলা যায় ফটিকের মামা বিশ্বম্ভরবাবু , স্নেহপরায়ণ, ভগ্নীপ্রীতি, স্বার্থহীনতা, বোধহীন , মানবিক গুণসম্পন্ন, কর্তব্যপরায়ণ প্রভৃতি গুণসম্পন্ন হলেও একজন শিশুর ভবিষ্যৎ গঠনের কারিগর হিসাবে তিনি ব্যার্থ ছিলেন।

 

4.  “দাও ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দাও”- কে, কাকে এবং কেন বাড়ি পাঠিয়ে দেবার কথা বলেছিলেন ?

উত্তরঃ  

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত “ছুটি ” গল্প থেকে আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত হয়েছে । ছুটি গল্পে আলোচ্য উক্তিটির ফটিকের মামি তার মামাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে ।

মামার বাড়ি থাকাকালীন ফটিক অল্পদিনের মধ্যেই মামির কাছে বোঝা ও অসহ্যের কারণ হয়ে উঠেছিল। তাই যেদিন জ্বরে আক্রান্ত হয় সেদিন রাতে সেদিন রাতে সে মামার বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে আসে। পরিস্থিতি বুঝে, বাধ্য হয়ে বিশ্বম্ভর পুলিশের আশ্রয় নেন, সমস্ত দিনের পর সন্ধ্যার সময় অবিশ্রান্ত বৃষ্টির মধ্যে পুলিশের গাড়ি এসে দাঁড়ায় । গাড়ি থেকে দুজন পুলিশ ফটিককে নামায় । তখন তার আপাত মস্তক ভিজে, সর্বাঙ্গে কাদা,  মুখেচোখে লোহিত বর্ণ এবং থর থর করে কাঁপছে । বিশ্বম্ভর বাবু তখন ফটিককে কোলে তুলে নিয়ে ঘরে আসে, সেই সময় ফটিকের মামি আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

মামার বাড়িতে আসার সময়তেই ফটিক মামির অপছন্দের কারণ ছিল। এই জন্য ফটিকের মামি ফটিকের শারিরীক অসুস্থতা দেখে বলেন পরের ছেলেকে নিয়ে এমন কর্মভোগ করার কোনো অর্থই হয় না । তাছাড়াও সারাদিন ‘নানা দুশ্চিন্তা হতো, এই কারণে ভালো করে আহারাদি পর্যন্ত করতে পারতো না। অনেক সময় এমন আচরণও দেখা গেছে যে, সে নিজের ছেলেদেরও প্রতিও খিটখিটে হয়ে উঠেছিল। এইসব মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে ফটিকের মামি  আলোচ্য উক্তিটি করেছেন ।

 

5. মা এখন আমার ছুটি হয়েছে , মা এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি “ – বক্তা কে ? কাকে উদ্দেশ্য করে কখন একথা বলা হয়েছে ? অলোচ্য অংশের তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ  

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত দুটি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ফটিক আলোচ্য অংশটির বক্তা ।

আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি ফটিক তার মাকে কেন্দ্র করে কথাটি বলেছে। ফটিককে তার মামা কলকাতায় পড়াশোনার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়, এবং তারপর ফটিক গুরুতর অসুখে আক্রান্ত হয় ও মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে এসে উপস্থিত হয় । তার মনে তার মাকে দেখার প্রবল ইচ্ছে জন্মায়। তার সাথে সাথে গ্রামের কথা তার খুব মনে পড়ে। কখন এই গুরুতর অসুস্থতার সময় ফটিক তার মাকে উদ্দেশ্য করে এই কথা বলেছে, “মা এখন আমার ছুটি হয়েছে, মা এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি”।

আলোচ্য অংশে, ছুটি শব্দটি প্রতীক হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে । এখানে ছুটি বলতে মামার বাড়ি থেকে পড়াশোনা শেষ করে বাড়ি ফিরে যাবার কথা বলা হইনি বরং ছুটি বলতে বোঝানো মুক্তি লাভের পথ । মানুষের জীবনের দুঃখ, যন্ত্রনা থেকে মুক্তি লাভের পথ । মানুষের জীবনের সমস্ত দুঃখ, বেদনার মুক্তি  ঘটে মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে।

ফটিক যখন গ্রামে ছিল সে ডানা মেলে ঘুড়ে বেড়াতো স্বাধীন পাখির মতো, শহরের যে পরাধীনতার যন্ত্রণা সে অনুভব করে। ফটিক শারীরিক মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে । তার মায়ের স্নেহ ও ভাইয়ের সাথে খুনসুটি সবকিছু তাঁর মনে পড়ে । তাঁকে শৈশবের স্মৃতি মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে পৌছায় । তাঁর যন্ত্রনাময় জীবন থেকে সে  মুক্তি পেতে চায়। সে এখন এমন এক বাড়ি চায় যেখানে সে চিরশান্তি খুঁজে পাবে।

 

6. ছুটি গল্পে ফটিক চরিত্রটি আলোচনা করো ।

উত্তরঃ  

কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছুটি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল ফটিক । তাঁকে কেন্দ্র করেই গল্পের কাহিনীর বিস্তার ঘটেছে । একজন গ্রাম্য শিশু চরিত্র হিসাবে ফটিকের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় ।

গল্পেতে দেখা যায় যে,  ফটিক একজন গ্রামের দুরন্ত বালক এবং সে বালকদের মধ্যে নেতার ভূমিকা পালন করে । ফটিকের কথা মতো বাকী বালকেরা কাজ করে । গল্পে দেখা যায় , প্রকাণ্ড শাল গাছের গুঁড়ি গড়িয়ে খেলা করা । অথবা তাঁর ছোট ভাই মাখনকে গুঁড়ির উপর বসিয়ে গুঁড়ি সুদ্ধ গড়িয়ে দেওয়া -এই সকল খেলায় ফটিক হল একজন নেতৃত্ব স্থানীয় । অর্থাৎ , ফটিকের চরিত্রের শিশু সুলভ নেতৃত্ব বোধের পরিচয় পাওয়া যায় ।

ফটিকের মধ্যে আত্মমর্যাদার বোধ ছিল অতি প্রবল ।স্কুলে বই হারিয়ে ফেলার পর তাঁর মামি যখন তাঁকে তিরস্কার করে তখন সে নিজেকে হীন বলে মনে করে । ফটিক এর বিবেক বোধ জাগ্রত ছিল বলেই সে মামার বাড়ি ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসার উদ্যোগ নেয় এবং কাউকে না জানিয়ে সে মামার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় ।

দুরন্ত ও  অমনোযোগিতার কারণে ফটিকের মা তাঁকে অনেক সময় কটু কথা শোনায় । কিন্তু ফটিক তাঁর মাকে খুব ভালবাসত । তাই মামার বাড়িতে সে যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন বার বার সে মায়ের কথাই  বলতে  থাকে  । এ থেকে বোঝা যায় মায়ের প্রতি ফটিকের আন্তরিক টান ছিল । ফটিক তাঁর ছোট ভাই মাখন লালের সাথে লড়াই করলেও ভাইয়ের প্রতি আর ভালোবাসা ছিল ।

কলকাতায়  যাওয়ার সময়  ফটিক তাঁর ভাইকে মাছ ধরার ছিপ , ঘুড়ি ,লেটায় সবকিছু দিয়ে যায় । এই সব দৃষ্টান্ত একজন ভাইয়ের প্রতি এক দাদার ভালোবাসার ঈঙ্গীত বহন করে । সুতরাং ফটিকের মধ্যে নেতৃত্ব বোধ মা ও ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা , স্বাধীন  সত্ত্বা ও আত্মসম্মান বোধের সম্বন্ধয়ে এক আদর্শ কিশোর চরিত্র হয়ে উঠে ।

More updates coming soon

 

Thanks For Reading : ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণী বাংলা |  


Read More Subject:


 

 

Leave a comment