রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর।একাদশ শ্রেণি ইতিহাস

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস Semester 2,সিলেবাসের একটি অন্যতম বিষয়- Unit:4- রাষ্ট্রের অবস্থা ও গতি (Nature of state): state and its apparatus: 4.1. nature of state, the ideal prototype, a) The Indian context , b) The European context , 4.2. Apparatus of Governance এই বিষয়টিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । পূর্বেই আমরা এই অধ্যায় থেকে কিছু 8 marks -এর প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করেছি , যা তোমরা এই পেজে পেয়ে যাবে ।

আজকের পর্বে আমরা কিছু 4 marks -এর প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করব।তোমরা যারা একাদশ শ্রেণী ইতিহাস দ্বিতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রের প্রকৃতি 4 মার্কস প্রশ্ন উত্তর। আশা করি , একাদশ শ্রেণী ইতিহাস রাষ্ট্রের প্রকৃতি, Semester 2 –এর ছাত্রছাত্রীরা , এই উপস্থাপনার মাধ্যমে খুবই উপকৃত হবে। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে আজকের আমাদের উপস্থাপনা-রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর।একাদশ শ্রেণি ইতিহাস সেমিস্টার ২ । 

আমরা সহজ ও সংশ্লিষ্ট ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্বরূপ বিষয়গুলি উপস্থাপন করে থাকি । যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খুবই সহায়ক হবে ,বলেই আশা রাখি ।পরবর্তীতে একাদশ শ্রেণীর আরও অন্যান্য বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব NOTES পেতে darsanshika.com পেজটিতে অবশ্যই Visit করুন।

রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর।একাদশ শ্রেণি ইতিহাস সেমিস্টার ২
রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর।একাদশ শ্রেণি ইতিহাস সেমিস্টার ২ | 

 

রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর।একাদশ শ্রেণি ইতিহাস সেমিস্টার ২

রাষ্ট্রের প্রকৃতি 4 marks-এর প্রশ্ন উত্তরঃ  

 

১. দাগ ও হুলিয়া কী ?

মোঘল সেনাবাহিনীতে প্রবর্তিত বিভিন্ন নিয়ম রীতির মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য রীতি হল দাগ ও হুলিয়া। মুঘল সম্রাট আকবর তার সেনাবাহিনীতে দুর্নীতি দূর করার জন্য দাগ ও হুলিয়া নামক দুটি ঋতি প্রচলন করেন।
দাগ ও হুলিয়া পদ্ধতি অনুযায়ী সম্রাটের নির্দেশে ঘোড়ার গায়ে ক্রমিক নাম্বার এবং সেনাদের দৈহিক বিবরণ লিখে দেওয়া হত। এগুলিকে দাগ ও হুলিয়া বলা হতো।

আকবর দাগ ও হুলিয়া প্রথা পুনঃপ্রবর্তন করে সেনাবাহিনীতে দক্ষ সেনা ও ঘোড়া রাখার ব্যবস্থা করেন। আকবর দাগ ও হুলিয়ার মাধ্যমে প্রধানত মনসবদারদের নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা করেন।সেনাবাহিনীতে ঘোড়ার দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য যেসব ঘোড়া যুদ্ধে খুব পারদর্শী ছিল তাদের গায়ে লোহা পুড়িয়ে দাগ দেওয়া হত। এই ব্যবস্থাকে ও বলা হত দাগ।

অপরদিকে, যেসব সৈনো যুদ্ধে যেত তারা যাতে নিজেদের জায়গায় অন্য কাউকে পাঠাতে না পারতো তার জন্য প্রত্যেক সৈন্যেক দৈহিক বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হত। এই ব্যবস্থাকে বলা হতো হুলিয়া।

 

২. কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে সপ্তাঙ্গ তত্ত্ব কী ?

কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে রাষ্ট্রকে জীবদেহের সাথে তুলনা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি অঙ্গ – প্রতঙ্গের সঙ্গে যেমন সম্পর্ক থাকে তেমনই রাষ্ট্রের সঙ্গে তার বিভিন্ন অংশের সম্পর্ক রয়েছে। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে রাষ্ট্রের যে সাতটি অঙ্গের কথা বলা হয়েছে তাকে বলা হয় সপ্তাঙ্গ। শুধু কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রেই নয় বিভিন্ন শাস্ত্র গ্রন্থ ও পুরাণে রাষ্ট্রের এই সাতটি উপাদানের কথা বলা হয়েছে।

সপ্তাঙ্গের সাতটি অঙ্গ হল –

  1. স্বামী (রাজা)
  2. অমাত্য (মন্ত্রী)
  3. জনপদ (রাষ্ট্র)
  4. দুর্গ (পুর)
  5. কোশ (অর্থ ভান্ডার)
  6. দন্ড (বল / ন্যায় বিচার)
  7. মিত্র (বন্ধু) ।

অর্থশাস্ত্র অনুযায়ী, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের এই সাতটি অঙ্গের ভিন্ন ভিন্ন কাজ ছিল। তবে, রাজা সবচেয়ে বেশি ক্ষমতার অধিকারী ছিল।

রাষ্ট্রের উপরিউক্ত সাতটি উপাদানকে অঙ্গ বলে তুলনা করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে যে, রাজা বলা হয়েছে মস্তিষ্ক এবং চক্ষু হল অমাত্য, মিত্রকে বলা হয়েছে কর্ণ, কোশকে মুখ, দন্ডকে মন, দুর্গকে বলা হয়েছে হাত, এবং জনপদকে বলা হয়েছে পদ / পা।

মানব দেহের এই সাতটি অঙ্গের একটি যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে সমগ্র মানব দেহ যেমন অচল হয়ে যায় তেমনই একটি রাষ্ট্রের উপরিউক্ত সাতটি অঙ্গের মধ্যে একটি যদি হিনবল হয়ে পড়ে তাহলে রাষ্ট্রে অবস্থা আসঙ্কা জনক হয়ে ওঠে। তাই কৌটিল্য তার রাষ্ট্র তত্ত্বে এই সাতটি উপাদানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন।

 

৩.  উলেমা বলতে কাদের বোঝায় ?

ইসলাম ধর্মের পন্ডিতদের উলেমা বলা হয়। উলেমা শব্দটির উৎপত্তি ‘অলম’ শব্দ থেকে। অলম শব্দটির অর্থ হল জ্ঞান। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি জ্ঞানের অধিকারী তাদের আলিম বলা হয়। উলেমা হল আলিম শব্দের বহুবচন। সুতরাং, উলেমা শব্দটির দ্বারা মুসলিম ধর্মীয় পন্ডিতদের গোষ্ঠীকে বোঝানো হয়েছে।

দিল্লির সুলতানি প্রশাসনের উলেমা শ্রেনীর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সুলতানরা ছিল আইন সরিয়তের ব্যখ্যা কর্তা। ব্যাখ্যা অনুসারে সুলতানগণ তাদের আইন পরিচালনা করতেন। সুলতানরা মনে করতেন যে, এই সরিয়তের ব্যাখ্যা কর্তারা তাদের আইনের মাধ্যমে / বিধান মেনে ইসলামীয় ধর্মে পবিত্র করে তোলা হত।

 

৪. রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কে লকের ধারণা দাও। 

জন লক হলেন আধুনিক উদারনৈতিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রচিন্তার জনক। তাঁর লেখা “টু ট্রিটিজ অফ গভারমেন্ট” গ্রন্থে আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে। লক – এর রাষ্ট্রচিন্তার গুরুত্বপূর্ন দিকগুলি হল –

i) প্রকৃতির রাজ্য ও প্রাকৃতিক আইন

লক – এর মতে, রাষ্ট্রসৃষ্টির পূর্বে মানুষ যে প্রকৃতির রাজ্যে বসবাস করত তা ছিল প্রাক্‌ রাজনৈতিক অবস্থা, যেখানে মানুষ প্রকৃতির আইন মেনে চলত। এই অবস্থায় মানুষের জীবন ছিল সহজ সরল ও স্বাভাবিক। কিন্তু ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক সম্পদকে কেন্দ্র করে মানব সমাজে বৈষম্য দেখা দেয়। এর ফলে প্রকৃতির রাজ্যে অসাম্য ও জটিলতা বৃদ্ধি পায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে।

ii) সার্বভৌম শক্তির উৎস জনগণ

লকের মতে, রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস হল জনগণ। তাই চুক্তির মাধ্যমে জনগণ রাষ্ট্রের কাছে তাদের ক্ষমতা অর্পণ করে। প্রয়োজনে শাসক যদি অযোগ্য হত তাহলে তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা জনগণের হাতে ছিল।

iii)  সম্পত্তির অধিকার

লকের মতে, ঈশ্বর সকলের জন্য সমান ভাবে সম্পত্তি ভোগ করার অধিকার দিয়েছে। রাষ্ট্র ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর কোন রকম হস্তক্ষেপ করবে না।

বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ লকের মতবাদে বিভিন্ন সমালোচনা করলেও প্রতিনিধিত্ব মূলক গণতন্ত্রের ভিত্তি হিসাবে লকের রাষ্ট্রনৈতিক তত্ত্বের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া উদার নীতিবাদ, ব্যক্তি স্বাধীনতা প্রভৃতির প্রচারে লক আধুনিক মানুষিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

 

৫. টমাস হবস্‌ -এর রাষ্ট্রচিন্তা সংক্ষেপে লেখ।

আধুনিক বৃহৎায়তন রাষ্ট্রের ভিত্তি রচনায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রচিন্তাবিদ হলেন টমাস হবস। তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থ “লোভিয়াথান” গ্রন্থে তিনি সর্বশক্তিমান রাষ্ট্রের কথা বলেছেন। হবস -এর রাষ্ট্র নীতির মূল প্রতিপাদ্য বিষয়গুলি হল –

  1. হবস -এর মতে প্রকৃতির রাজ্যে মানুষের জীবন ছিল নিঃশঙ্খ ও প্রাসবিক। এই রাজ্যে প্রত্যেকটি মানুষ একে অপরের সাথে সংঘাত ও যুদ্ধে লিপ্ত থাকত। হবস – এর মতে এই অরাজকতা থেকে মানুষ মুক্তি থেকে চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করেছিল।
  2. হবস -এর মতে মানুষ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কোনো কতৃত্বের উপর ক্ষমতা আরোপ করে। এই ভাবে রাজনৈতিক শক্তির সৃষ্টি হয়।
  3. হবস -এর মতে রাজতন্ত্রকেই শ্রেষ্ঠ শাসন ব্যবস্থা বলে মনে করা হয়েছে। সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্যই রাজতন্ত্রই কার্যকারী ব্যবস্থা বলে গণ্য করা হয়।

More Update Coming Soon

 

Thanks for reading: রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর।একাদশ শ্রেণি ইতিহাস সেমিস্টার ২


একাদশ শ্রেণি ইতিহাস | রাষ্ট্রের প্রকৃতিঃ এই অধ্যায়ের আরও প্রশ্ন উত্তরঃ  

 

Leave a comment