একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় সেমিস্টার, দর্শনশাস্ত্রের unit-1: Introduction of logic ,Topic No : 4 ; Opposition Of proposition এই বিষয় নিয়ে আজকের আমাদের আলোচনা।
WBCHSE Class 11 Philosophy- এর ছাত্রছাত্রীদের একেবারে নুতন সিলেবাস অনুযায়ী , একাদশ শ্রেনী দর্শন | বচনের বিরোধীতা (Opposition Of Proposition ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর আজকের উপস্থাপনার বিষয়বস্তু । এই আলোচনার Opposition Of Proposition Short Question and Answer মাধ্যমে আমরা বচনের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করব । ছাত্রছাত্রীরা মনোযোগের সহিত, আমাদের এই উপস্থাপনাগুলি লক্ষ্য করলে, আশা করি খুবই উপকৃত হবে।
সুতরাং একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে, তাদের পরীক্ষার পস্তুতির সহায়তায়, আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয়-একাদশ শ্রেণী দর্শন বচনের বিরোধীতা |

একাদশ শ্রেণী | দ্বিতীয় সেমিস্টার
বচনের বিরোধীতা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর |
Marks-2
1. বিরোধীতা বলতে কী বোঝ ?
Ans: একই উদ্দেশ্য ও একই বিধেয়যুক্ত দুটি নিরপেক্ষ বচনের মধ্যে গুণগত বা পরিমাণগত পার্থক্য থাকে, তাহলে বচন দুটিকে পরস্পর বিরোধী বচন বলে এবং বচন দুটির পারস্পরিক সম্পর্ককে বিরোধীতা বলে।
যেমন – সকল কুকুর হয় বিশ্বস্ত (A) ।
কোনো কুকুর নয় বিশ্বস্ত (E) ।
2. কখন দুটি নিরপেক্ষ বচন পরস্পর বিরোধী হয় ?
Ans: দুটি নিরপেক্ষ বচন যদি একই উদ্দেশ্য বিধেয় আকারের হয় এবং বচন দুটির মধ্যে যদি গুণগত বা পরিমাণগত বা গুণগত ও পরিমাণগত পার্থক্য থাকে তাহলে বচন দুটি পরস্পর বিরোধী হয়।
3. প্রচলিত যুক্তিবিজ্ঞানে বিরোধীতা কয়প্রকার ও কী ?
Ans: প্রচলিত যুক্তিবিজ্ঞানে বিরোধীতা চার প্রকার যথা, বিপরীত বিরোধীতা, অধীন বিপরীত বিরোধীতা, অসম-বিরোধীতা ও বিরুদ্ধ-বিরোধীতা।
4. বিপরীত বিরোধীতা (contrary opposition) বলতে কী বোঝ ?
Ans: একই উদ্দেশ্য ও একই বিধেয় যুক্ত দুটি সামান্য বচনের মধ্যে যদি কেবলমাত্র গুণগত পার্থক্য থাকে তাহলে বচন দুটি হবে পরস্পর বিপরীত বচন এবং বচন দুটির মধ্যবর্তী সম্বন্ধ বলে বিপরীত বিরোধীতা।
যেমন – সকল মানুষ হয় বিদ্বান (A) ।
কোনো মানুষ নয় বিদ্বান (E) ।
5. বিরোধানুমান কাকে বলে ?
Ans: যে অমাধ্যম অনুমানে একটি বচনের সত্যত্বা বা মিথ্যাত্ব থেকে তার সাথে বিরোধীতার সম্বন্ধে আবদ্ধ অপর কোন বচনের সত্যত্বা বা মিথ্যাত্ব নির্ণয় করা যায়, তাকে বিরোধানুমান বলে। যেমন –
A সকল বাঙালী হয় ভারতীয় (সত্য)
ஃ কোন বাঙালী নয় ভারতীয় (মিথ্যা) ।
6. বিরোধানুমান কী একটি অমাধ্যাম অনুমান ?
Ans: বিরোধানুমান এমন একটি অনুমান যেখানে সিদ্ধান্তটি একটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্য ভাবে নিঃসৃত হয় এবং সিদ্ধান্তটি কখনও আশ্রয় বাক্যের থেকে ব্যাপক হয়না। তাই বিরোধানুমান একটি অসাধ্য অনুমান ।
যেমন – A সকল বাঙালী হয় ভারতীয় (T)
ஃ E কোন বাঙালী নয় ভারতীয় (F)।
7. সাধারণ বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে বিরোধীতার শর্ত কী ?
Ans: সাধারণ বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে বিরোধীতার শর্ত হল দুটি বচনের মধ্যে পরিমাণগত বা গুণগত বা পরিমাণগত ও গুণগত পার্থক্য থাকবে।
8. অ্যারিস্টটল বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে বিরোধীতার শর্ত কী ?
Ans: অ্যারিস্টটল বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে বিরোধীতা শর্ত হল – দুটি বচন একই সাথে সত্য বা মিথ্যা হতে পারবেনা।
9. অ্যারিস্টটল বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে অনুযায়ী বিরোধীতা কটি ও কী ?
Ans: অ্যারিস্টটল বর্ণিত বর্গক্ষেত্র অনুযায়ী বিরোধীতা দুটি যথা বিপরীত বিরোধীতা ও বিরুদ্ধ বিরোধীতা।
10. অ্যারিস্টটল বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে বিপরীত বিরোধীতা শক্তিশালী বিরোধীতা কেন ?
Ans: অ্যারিস্টটল বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে বিপরীত বিরোধী দুটি বচন হল Aও E। এই দুটি বচন একই সাথে কখনও সত্য হতে পারে না এবং বচন দুটি সার্বিক বলে বিপরীত বিরোধীতাকে শক্তিশালী বিরোধীতা বলে।
11. অ্যারিস্টটল বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে বিরুদ্ধ বিরোধীতা বিপরীত বিরোধীতার মত শক্তিশালী নয় কেন ?
Ans: অ্যারিস্টটল বর্ণিত বর্গক্ষেত্রে বিরুদ্ধ বিরোধীতাও বিরোধীতা হলেও বিপরীত বিরোধীতার মত শক্তিশালী নয়। কারণ এখানে দুটি বচন (A,O ও E,I) একই সাথে সত্য বা মিথ্যা হতে পারেনা বটে। কিন্ত এদের মধ্যে বচন সার্বিক ও একটি বচন বিশেষ হয়।
12. বিরোধানুমানের কাজ কী ?
Ans: বিরোধানুমানের কাজ হল একটি বচনের সত্যত্বা বা মিথ্যাত্ব থেকে বিরোধীতার সম্বন্ধে আবদ্ধ অপর আর একটি বচনের সত্যতা বা মিথ্যাত্ব নির্ণয় করা যেমন –
A সকল মানুষ হয় মরণশীল (সত্য) ।
ஃ E কোন মানুষ নয় মরণশীল (মিথ্যা) ।
13. যৌক্তিক সম্বন্ধ কাকে বলে? (Logical relation) ?
Ans: যুক্তিবিজ্ঞানে ব্যবহৃত দুটি বাক্য বা বচনের মধ্যে যে সম্বন্ধ, তাকে যৌক্তিক সম্বন্ধ বলে। যেমন – ‘Implies’, ‘is the contradictory of’, ‘is the Equivalent with’ ইত্যাদি।
14. কোন দুটি বচনের মধ্যে বিরোধীতার সম্বন্ধ থাকে ?
Ans: একই উদ্দেশ্য ও একই বিধেয় বিশিষ্ট দুটি নিরপেক্ষ বচনের মধ্যে বিরোধীতার সম্বন্ধ থাকে।
15. সাধারণ বিরোধীতায় শক্তিশালী বিরোধীতা কোনটি ও কেন ?
Ans: সাধারণ বিরোধীতায় শক্তিশালী বিরোধীতা হল বিরুদ্ধ বিরোধীতা। কারণ, বিরুদ্ধ বিরোধীতার দুটি বচনের মধ্যে গুণগত ও পরিমাণগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
16. অধীন – বিপরীত বিরোধিতা কাকে বলে ?
Ans: যদি দুটি বিশেষ বচনের একই উদ্দেশ্য এবং একই বিধেয় থাকে, কিন্তু শুধুমাত্র গুণের দিক থেকে বচন দুটির মধ্যে প্রভেদ থাকে, তবে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ককে অধীন – বিরোধিতা বলে।
যেমন – কোনো কোনো লোক হয় পরিশ্রমী (I) ।
কোনো কোনো লোক নয় পরিশ্রমী (O) ।
এই দুটি বচনের পারস্পরিক সম্বন্ধকে অধীন – বিপরীত বিরোধিতা বলা হয়। কারণ, এই দুটি বচনই বিশেষ বচন এবং এদের উদ্দেশ্য (লোক) এবং বিধেয় (পরিশ্রমী) একই। কিন্তু গুণের দিক থেকে এই দুটি বচনের মধ্যে প্রভেদ আছে।
17. বিরুদ্ধ বিরোধিতা কাকে বলে ?
Ans: যদি দুটি বচনের একই উদ্দেশ্য এবং একই বিধেয় থাকে, কিন্তু ‘গুণ’ ও ‘পরিমাণ’ উভয় দিক থেকে তাদের পার্থক্য থাকে, তাহলে তাদের সম্পর্ককে বিরুদ্ধ বিরোধিতা বলে। একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত একটি A বচন (সামান্য সদর্থক) ও O বচন (বিশেষ নঞর্থক), এবং E বচন (সামান্য সদর্থক) ও I বচনের (বিশেষ সদর্থক) মধ্যে এইরূপ বিরোধিতা বর্তমান।
18. অসম – বিরোধিতা কাকে বলে ?
Ans: যদি দুটি বচনের উদ্দেশ্য, বিধেয় এবং ‘গুণ’ একই হয়, কিন্তু শুধুমাত্র পরিমাণের দিক থেকে যদি তাহলে পার্থক্য থাকে, তাহলে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ককে বলা হয় অসম – বিরোধিতা। একই উদ্দেশ্য এবং বিধেয় যুক্তি একটি ‘A’ বচন (সামান্য সদর্থক) এবং ‘I’ বচনের (বিশেষ সদর্থক) মধ্যে অথবা একটি ‘E’ বচন (সামান্য নঞর্থক) এবং ‘O’ বচনের (বিশেষ নঞর্থক) মধ্যে এইরূপ বিরোধিতা দেখা যায়।
19. অসম বিরোধিতার একটি দৃষ্টান্ত দাও।
Ans: A- সকল পুস্তক হয় মূল্যবান বস্তু।
I- কোনো কোনো পুস্তক হয় মূল্যবান বস্তু।
এই দুটি বচন পরস্পর অসম বিরোধিতা বচন , কারণ অসম বিরোধিতার নিয়ম অনুযায়ী দুটি বচনের মধ্যে পরিমাণগত দিক থেকে পার্থক্য রয়েছে। প্রথম বচনটি সামান্য এবং দ্বিতীয় বচনটি বিশেষ।
২০. “সকল মানুষ হয় বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন জীব” – বচনটির বিপরীত বিরোধী বচন কী হবে?
Ans: উক্ত বচনটির বিপরীত বিরোধী বচন হবে –
‘E – কোনো মানুষ নয় বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন জীব’।
21 . ‘কোনো কোনো মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন’ – বচনটির অধীন বিপরীত বিরোধী উল্লেখ করো।
Ans: উক্ত বচনটির অধীন বিপরীত বিরোধী বচন হবে –
O- কোনো কোনো মানুষ নয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী।
22. অধীন বিপরীত বিরোধিতার একটি দৃষ্টান্ত দাও।
Ans: কোনো কোনো মানুষ হয় দয়ালু। (অধীন বিপরীত বিরোধী)
O- কোনো কোনো মানুষ নয় দয়ালু।
23. বিরুদ্ধ বিরোধিতার একটি দৃষ্টান্ত দাও।
Ans: A- সকল কবি হয় দার্শনিক।
O- কোনো কোনো কবি নয় দার্শনিক।
24. বিরুদ্ধ বিরোধিতার মূল শর্তদুটি উল্লেখ করো।
Ans: (i) দুটি নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্যপদ ও বিধেয়পদ অভিন্ন হবে।
(ii) দুটি বচনের মধ্যে অবশ্যই গুণ ও পরিমাণ উভয়ের পার্থক্য থাকতে হবে এবং দুটি বচন একসঙ্গে সত্য বা মিথ্যা হতে পারবে না।
25. অসম বিরোধিতার সত্যতার নিয়মটি লেখো।
Ans: (i) সামান্য বচনটি সত্য হলে বিশেষ বচনটি সত্য হবে কিন্তু সামান্য বচনটি মিথ্যা হলে বিশেষ বচনটি অনিশ্চিত হবে।
(ii) বিশেষ বচনটি মিথ্যা হলে সামান্য বচনটি মিথ্যা হবে কিন্তু বিশেষ বচনটি সত্য হলে সামান্য বচনটি অনিশ্চিত হবে।
26. বচনের বিরোধিতার দুটি শর্ত কী কী?
Ans: (a) দুটি বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয়পদ অভিন্ন হবে।
(b) বচনদুটির মধ্যে গুণগত অথবা পরিমাণগত অথবা গুণ ও পরিমাণ উভয়ের প্রভেদ থাকবে।
27. অধীন বিপরীত বিরোধিতার সত্যতার নিয়মটি লেখো।
Ans: অধীন বিপরীত বিরোধিতায় আবদ্ধ দুটি বচন একসঙ্গে মিথ্যা হতে পারে না, কিন্তু একসঙ্গে সত্য হতে পারে।
28. অসম বিরোধিতার একটি দৃষ্টান্ত দাও।
Ans: A- সকল সাধু হয় ধার্মিক।
I- কোনো কোনো সাধু হয় ধার্মিক।
29. “কোনো কোনো মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব।” বচনটির বিরুদ্ধ বচন উল্লেখ করো।
Ans: E- কোনো মানুষ হয় বুদ্ধি বৃত্তিসম্পন্ন জীব। (বিরুদ্ধ বচন)
30. “কোনো কোনো মানুষ হয় সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তি।” বচনটির অধীন বিপরীত বচন উল্লেখ করো।
Ans: O- কোনো কোনো মানুষ হয় সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তি – এই বচনটির অধীন বিপরীত বচন হবে –
I- কোনো কোনো মানুষ হয় সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তি।
বচনের বিরোধীতা থেকে ৩ Marks প্রশ্ন -উত্তর
১. বচনের বিরোধীতা কী ? উদাহরণের সাহায্যে বিপরীত বিরোধীতা ও অধীন বিপরীত বিরোধীতার মধ্যে পার্থক্য লেখ ?
একই উদ্দেশ্য এবং একই বিধেয় যুক্ত দুটি বচনের মধ্যে যদি গুণগত বা পরিমাণগত বা গুণগত ও পরিমাণগত এই উভয়ের পার্থক্য থাকে তাহলে বচনদুটি পরস্পরের বিরোধী বচন হবে। এবং এদের পারস্পরিক সম্মন্ধকে বচনের বিরোধীতা বলে। যেমন –
A – সকল মানুষ হয় মরণশীল।
B – কোনো মানুষ নয় মরণশীল।
এই দুটি বচনের উদ্দেশ্য বিধেয় এবং পরিমান এক, কিন্তু গুণগত পার্থক্য আছে বলে বচন দুটির পরস্পরের বিরোধী বচন। এবং এদের পারস্পরিক সম্মন্ধ হল বিরোধীতার সম্পর্ক।
বিপরীত ও অধীন বিপরীত বিরোধীতার মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
১. দুটি সামান্য বচনের মধ্যে বিপরীত বিরোধীতার সম্পর্ক বর্তমান। যেমন A ও E বচনের মধ্যে বিপরীত বিরোধীতার সম্পর্ক আছে, কিন্তু অধীন বিপরীত বিরোধীতার সম্পর্ক দুটি বিশেষ বচনের মধ্যে বর্তমান। যেমন – I ও O বচনের মধ্যে বিপরীত বিরোধীতার সম্পর্ক বর্তমান।
২. বিপরীত বিরোধীতার ক্ষেত্রে বচন দুটি একই সাথে সত্য হতে পারে না। অর্থাৎ প্রথম বচনটি সত্য হলে দ্বিতীয় বচনটি মিথ্যা হবে এবং প্রথম বচনটি মিথ্যা হলে দ্বিতীয় বচনটি সত্য হবে। যেমন –
A – সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব (সত্য)
E – কোনো মানুষ নয় মরণশীল জীব (মিথ্যা)
কিন্তু অধীন বিপরীত বিরোধীতার ক্ষেত্রে বচন দুটি একই সাথে সত্য হতে পারে। যেমন
I – কোনো কোনো মানুষ হয় সৎ ব্যক্তি (সত্য)
O – কোনো কোনো মানুষ নয় সৎ ব্যক্তি (সত্য)
৩. বিপরীত বিরোধীতার ক্ষেত্রে বচন দুটি একই সাথে মিথ্যা হতে পারে। অর্থাৎ প্রথম বচনটি মিথ্যা হলে অপর বচনটি সত্যও হতে পারে, মিথ্যাও হতে পারে। অর্থাৎ সংশায়াত্মক যেমন –
A – সকল মানুষ হয় সৎ ব্যক্তি (মিথ্যা)
E – কোনো মানুষ নয় সৎ ব্যক্তি (মিথ্যা)
কিন্তু, অধীন বিপরীত বিরোধীতার ক্ষেত্রে দুটি বচন একই সাথে মিথ্যা হতে পারে না। অর্থাৎ একটি মিথ্যা হলে অপরটি সত্য হবে। যেমন –
I – কোনো কোনো মানুষ হয় অমর জীব (মিথ্যা)
O – কোনো কোনো মানুষ নয় অমর জীব (সত্য)
২. বচনের বিপরীত বিরোধীতা ও বিরুদ্ধ বিরোধীতার মধ্যে পার্থক্য লেখ ?
বচনের বিপরীত বিরোধীতা ও বিরুদ্ধ বিরোধীতার মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
১. বিপরীত বিরোধীতা দুটি সামান্য বচনের মধ্যে বর্তমান যেমন – A ও E বচন। কিন্তু বিরুদ্ধ বিরোধীতা একটি সামান্য ও একটি বিশেষ বচনের মধ্যে বর্তমান। যেমন – A ও O, E ও I বচন।
২. বিপরীত বিরোধীতার ক্ষেত্রে বচন দুটির মধ্যে গুণগত পার্থক্য থাকে। যেমন – A বচন হল সদর্থক বচন এবং E বচন হল নঞর্থক বচন। অর্থাৎ এই দুটি বচনের মধ্যে গুণগত পার্থক্য বর্তমান।
কিন্তু, বিরুদ্ধ বিরোধীতার ক্ষেত্রে বচন দুটির মধ্যে গুণগত ও পরিমানগত পার্থক্য বর্তমান। যেমন – A বচন হল সামান্য সদর্থক বচন ও O বচন হল বিশেষ নঞর্থক বচন তাই এদের মধ্যে বিরুদ্ধ বিরোধীতার সম্পর্ক বর্তমান। আবার E বচন হল সামান্য নঞর্থক বচন ও I বচন হল বিশেষ সদর্থক বচন তাই এই দুটি বচনের মধ্যেও বিরোধিতার সম্পর্ক বর্তমান।
৩. বিপরীত বিরোধী দুটি বচন একই সাথে সত্য হতে পারে না কিন্তু একটি বচন মিথ্যা হলে অপরটি সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে। অর্থাৎ দুটি বচন একই সাথে মিথ্যা হতে পারে। যেমন – যদি A সত্য হয় তাহলে E মিথ্যা হবে। এবং যদি A মিথ্যা তাহলে E সংশায়াত্মক হবে।
অপরদিকে, বিরুদ্ধ বিরোধীতার ক্ষেত্রে দুটি বচন একই সাথে সত্যও হতে পারে না, আবার একই সাথে মিথ্যাও হতে পারে না। অর্থাৎ একটি বচন সত্য হলে অপর বচনটি মিথ্যা হবে এবং একটি বচন মিথ্যা হলে অপর বচনটি সত্য হবে। যেমন – যদি A সত্য হয় তাহলে O মিথ্যা হবে। এবং যদি E সত্য হয় তাহলে I মিথ্যা হবে।
৩. অসম বিরোধীতা ও বিরুদ্ধ বিরোধীতার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো ?
অসম বিরোধীতা ও বিরুদ্ধ বিরোধীতার মধ্যে পার্থক্যগুলোর নিম্নরূপ –
১. যে দুটি বচনের মধ্যে অসম বিরোধীতার সম্পর্ক বর্তমান তাদের মধ্যে পরিমাণগত পার্থক্য থাকে। যেমন – A ও I বচন এবং E ও O বচন।
অপরদিকে,যে দুটি বচনের মধ্যে বিরুদ্ধ বিরোধীতার সম্পর্ক বর্তমান তাদের মধ্যে পরিমাণগত ও গুণগত পার্থক্য থাকে। যেমন – A ও O বচন এবং E ও I বচন।
২. অসম বিরোধী দুটি বচনের মধ্যে সামান্য বচন সত্য হলে বিশেষ বচন সত্য হয়, সামান্য বচন মিথ্যা হলে বিশেষ বচন সংশায়াত্মক হয়। আবার বিশেষ বচন সত্য হলে সামান্য বচন সংশায়াত্মক হবে, বিশেষ বচন মিথ্যা হলে সামান্য বচন মিথ্যা হবে। যেমন –
যদি A সত্য হয় তাহলে I সত্য হবে।
যদি E সত্য হয় তাহলে O সত্য হবে।
যদি O সত্য হয় তাহলে A সংশায়াত্মক হবে।
যদি O সত্য হয় তাহলে E সত্য হবে।
অপরদিকে, বিরুদ্ধ বিরোধী দুটি বচনের মধ্যে একটি বচন সত্য অপর বচনটি অবশ্যই মিথ্যা হবে। এবং একটি মিথ্যা হলে অপরটি অবশ্যই সত্য হবে। অর্থাৎ বিরুদ্ধ বিরোধী দুটি বচন কখনই একই সাথে সত্য বা মিথ্যা হতে পারে না। যেমন যদি A সত্য হয় তাহলে O মিথ্যা হবে, যদি E সত্য হয় তাহলে I মিথ্যা হবে।
৪. বচনের বিরোধীতা কাকে বলে ? বিভিন্ন প্রকার বচনের বিরোধীতা উদাহরণের সঙ্গে ব্যাখ্যা করো। একটি চতুকোণের সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার বচনের বিরোধীতা ব্যাখ্যা করো। বুলীয় চতুকোণটি অঙ্কন করো ?
একই উদ্দেশ্য ও বিধেয় যুক্ত দুটি বচনের মধ্যে যদি গুণগত বা পরিমানগত বা গুণগত গুণগত ও পরিমাণগত এই উভয়ের পার্থক্য থাকে তাহলে বচন দুটি পরস্পরের বিরোধী বচন হবে। এবং এদের পারস্পরিক সম্মন্ধকে বচনের বিরোধীতা বলে।
গতানুগতিক বা প্রচলিত যুক্তি বিজ্ঞানীদের মতানুসারে বচনের বিরোধীতা চার প্রকার। –
১. বিপরীত বিরোধীতা
একই উদ্দেশ্য ও একই বিধেয়যুক্ত দুটি বিশেষ বচনের মধ্যে কেবলমাত্র গুণগত পার্থক্য থাকলে ওই দুটি বচন পরস্পরের বিপরীত বিরোধী হবে, এবং তাদের পারস্পরিক সম্মন্ধকে বিপরীত বিরোধীতা বলা হয়। যেমন – A – সকলমানুষ হয় ধার্মীক এই বচনের বিপরীত বিরোধী বচন হল E – কোনো মানুষ নয় ধার্মীক। যেহেতু এই দুটি বচন সামান্য এবং দুটি বচনের মধ্যে গুণগত পার্থক্য আছে।
২. অধীন বিপরীত বিরোধীতা
একই উদ্দেশ্য ও একই বিধেয় যুক্ত দুটি বিশেষ বচনের মধ্যে কেবল মাত্র গুণগত পার্থক্য থাকলে ওই বচন দুটি হবে পরস্পরের অধীন বিপরীত বচন এবং এদের পারস্পরিক সম্পর্ককে অধীন বিপরীত বিরোধীতা বলা হয়। যেমন – I – কোনো কোনো কবি হয় দার্শনিক এই বচনটির অধীন বিপরীত বিরোধী বচন হল O – কোনো কোনো কবি নয় দার্শনিক। এখানে দুটি বচন বিশেষ এবং বচন দুটির মধ্যে গুণগত পার্থক্য বৃত্তমান।
৩. বিরুদ্ধ বিরোধীতা
একই উদ্দেশ্য ও একই বিধেয় যুক্ত দুটি বচনের মধ্যে গুণগত ও পরিমানগত উভয়েরই পার্থক্য থাকে। তাহলে ওই দুটি বচন হবে পরস্পরের বিরুদ্ধ বচন এবং ওই দুটি বচনের মধ্যে গুণগত ও পরিমাণগত উভয়েরই পার্থক্য থাকে। তাহলে ওই দুটি বচন হবে পরস্পরের বিরুদ্ধ বচন এবং ওই দুটি বচনের মধ্যে পারস্পরিক সম্মন্ধকে বিরুদ্ধ বিরোধীতা বলে। যেমন – A – সকল মানুষ হয় স্বার্থপর ব্যক্তি এই বচনটির বিরুদ্ধ বিরোধী বচন হল O – কোনো কোনো মানুষ নয় স্বার্থপর ব্যক্তি। আর E – কোনো মানুষ নয় স্বার্থপর ব্যক্তি। এই বচনটির বিরুদ্ধ বিরোধী বচন হল I – কোনো কোনো মানুষ হয় স্বার্থপর ব্যক্তি।
৪. অসম বিরোধীতা
একই উদ্দেশ্য ও একই বিধেয়যুক্ত দুটি বচনের মধ্যে যদি কেবলমাত্র পরিমাণগত পার্থক্য থাকে তাহলে ওই দুটি বচন হবে পরস্পরের অসম বিরোধী বচন এবং ওই দুটি বচনের পারস্পরিক সম্মন্ধকে অসম বিরোধীতা বলা হয়। যেমন – A – সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব এই বচনটির অসম বিরোধী বচনটি হল I – কোনো কোনো মানুষ হয় মরণশীল জীব। আবার E – কোনো মানুষ নয় চতুঃপদ জীব এই বচনটির অসম বিরোধী বচন হল O – কোনো কোনো মানুষ নয় চতুঃপদ জীব।
Thanks For Reading : বচনের বিরোধীতা | একাদশ শ্রেণীর দর্শন
আরো পড়ুনঃ
- দানবীর কর্ণ নাট্যংশের শব্দার্থ ও বঙ্গানুবাদ | Class 11 Sanskrit
- দানবীর কর্ণ পাঠ্যাংশের 2 নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর | Sanskrit class 11
- দানবীর কর্ণ পাঠ্যাংশের ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নউত্তর । Sanskrit class 11
- একাদশ শ্রেণী দর্শন | যুক্তি বিজ্ঞানের প্রকৃতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর ।
- একাদশ শ্রেণী দর্শন | বচন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর |