Class 12 Political Science- এর একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন আজকে আলোচনা করতে চলেছি। প্রশ্নটি হল-জাতীয় স্বার্থ কী| জাতীয় স্বার্থের সংজ্ঞা দাও। পররাষ্ট্র নির্ধারনে জাতীয় স্বার্থের ভূমিকা আলোচনা করো। Class 12 Political Science Notes যারা খুঁজছ তাদের জন্য এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। Class 12 Political Science Question Answer এর মধ্যে যে প্রশ্নটি আলোচনা করা হল তা হল- জাতীয় স্বার্থ কী|জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উপায়
জাতীয় স্বার্থের সংজ্ঞা দাও। পররাষ্ট্র নির্ধারনে জাতীয় স্বার্থের ভূমিকা আলোচনা করো।
জাতীয় স্বার্থের সংজ্ঞাঃ
জাতীয় স্বার্থের ধারণাটি নতুন নয়। গ্রিক দার্শনিক প্লেটো ও অ্যারিস্টটল মানুষ ও সমাজের মঙ্গলের কথা লিখে চিরস্মরনীয়। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ, জাতীয় স্বার্থের বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন। সাধারণ ভাবে জাতীয় স্বার্থ বলতে বোঝায় যাবতীয় জাতীয় মূল্যবোধের সমষ্টি ।
প্লেটো ‘রিপাবলিক ’ গ্রন্থে বলেছেন, দার্শনিক রাজাও অবিভাবক শ্রেণী যাকে নগর রাষ্ট্রে পক্ষে কল্যান কর মনে করেন সেটি হল জাতীয় স্বার্থ।
অ্যারিস্টটল বলেছেন মানুষের কল্যান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রূপান্তরিত হবে। অ্যারিস্টটলের মতে যৌথ স্বার্থ কী ? সমাজের স্বার্থ কী ? তা জনগণ নিজেরা মিলিত হয়ে স্থির করবে।
পররাষ্ট্র নির্ধারনে জাতীয় স্বার্থের ভূমিকাঃ
পররাষ্ট্র নীতি ছাড়া একটি রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে না। বিদেশ নীতি নির্ধারনে জাতীয় স্বার্থের প্রভাব কতখানি সে সম্পর্কে রাষ্ট্র বিজ্ঞানীগন একমত নয়। এ সম্পর্কে দুটি গোষ্ঠী তৈরী হয়েছে – একটি হল ভাববাদী গোষ্ঠী ও অপরটি হল বস্তুবাদী গোষ্ঠী।
ভাববাদী গোষ্ঠীঃ
ভাববাদী গোষ্ঠীর মতে যেকোনো রাষ্ট্র বিদেশ নীতি নির্ধারনের ক্ষেত্রে সেই দেশে জাতীয় ঐতিহ্য এবং সেই দেশ কর্তৃক অনুসৃত মতাদর্শ ও মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার দেয়। ভাববাদী প্রবক্তাদের এই অতিমতকে উপেক্ষা করা যায়। পৃথিবীর বহু দেশের বিদেশীনীতি নির্ধারকেরা মনে করেন বিদেশ নীতি নির্ধারনে সময় দেশের ঐতিহ্যের অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবেই একটি দেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষিত হবে।
বস্তুবাদী গোষ্ঠীঃ
বস্তুবাদী গোষ্ঠী ভাববাদীদের এই বক্তব্যকে পুরোপুরি মেনে নিতে অস্বীকার করে। বস্তুবাদীদের বক্তব্য হল জাতীয় স্বার্থ বিদেশ নীতির রূপরেখা প্রণয়নে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে। জাতীয় স্বার্থেকে উপেক্ষা করে বর্তমানের কোনো বিদেশীনীতি নির্ধারণ করতে পারে না। যে রাজনৈতিক দল একটি দেশের ক্ষমতায় থাকে সে যদি কোনো বিদেশ নীতি নির্ধারন করে এবং সেই নীতি যদি জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি হয় তাহলে তা বিদেশ নীতিকে পরিণত হয়।
কিন্তু জনগণ যদি এই নীতিতে সমর্থন না করে তাহলে এই নীতির সংশোধন বা পরিবর্তন করার জন্য সরকারের কাছে চাপ সৃষ্টি করে এবং আন্দোলনের পথে পা বাড়ায়। জনগণের বিরুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছা ক্ষমতা ভোগী রাজনৈতিক দলের থাকে না। কারণ রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্য হল ভাবতে হয় যে পররাষ্ট্র দল নির্ধারিত হল তা জাতীয় স্বার্থের অনুকূল কিনা।
উপসংহারঃ
কাজেই বলা যেতে পারে যে, জাতীয় স্বার্থ বিদেশ নীতি নির্ধারনের ক্ষেত্রে তাৎপর্য পূর্ন ভূমিকা পালন করে। বর্তমান বিশ্বে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সাথে জাতীয় স্বার্থের বিকাশ আন্তরিক ভাবে সম্পর্কযুক্ত। জাতীয় স্বার্থের সাথে বিদেশ নীতির সম্পর্ক যে কেবল উন্নত দেশে বিদ্যমান তা নয়, তৃতীয় বিশ্বের বিকাশশীল দেশগুলিতেই এই ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি জাতীয় স্বার্থের কথা মনে রেখে বিদেশনীতির রূপরেখা প্রস্তুত করে।
Thanks for Reading- জাতীয় স্বার্থ কী|জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উপায়
প্রশ্ন উত্তর:
1.রিপাবলিক ’ গ্রন্থটির লেখক কে?
Ans.রিপাবলিক ’ গ্রন্থটি লিখেছেন-প্লেটো ।
২.ভাববাদী গোষ্ঠী কি?
Ans.ভাববাদী গোষ্ঠীর মতে যেকোনো রাষ্ট্র বিদেশ নীতি নির্ধারনের ক্ষেত্রে সেই দেশে জাতীয় ঐতিহ্য এবং সেই দেশ কর্তৃক অনুসৃত মতাদর্শ ও মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার দেয়।
3.জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কে অ্যারিস্টটল কি বলেছেন ?
Ans.অ্যারিস্টটল বলেছেন মানুষের কল্যান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রূপান্তরিত হবে। অ্যারিস্টটলের মতে যৌথ স্বার্থ কী ? সমাজের স্বার্থ কী ? তা জনগণ নিজেরা মিলিত হয়ে স্থির করবে।