কালিদাসের মেঘদূত কাব্যের বিষয়বস্তু বর্ণনা করো

সংস্কৃত সাহিত্যের অন্যতম এক কবি ,নাট্যকার হলেন মহাকবি কালিদাস । যিনি সংস্কৃত কাব্যসাহিত্যে নিজস্ব প্রতিভা, ও দক্ষতার পরিচয় রেখে গেছেন।  আজকের পর্বের আলোচনায় এই কিংবদন্তি মহাকবি কালিদাসের রচিত খ্যাতনামা একটি গীতিকাব্য, মেঘদূত কাব্যের বিষয়বস্তু বর্ণনা করতে চলেছি ।

class 11 WBHSE | class 11 Sanskrit –এর ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে আজকের এই উপস্থাপনার আলোচ্য বিষয়-কালিদাসের মেঘদূত কাব্যের বিষয়বস্তু বর্ণনা করো । Class 11 Sanskrit Semester 2 তে সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস থেকে  4 marks এর একটি ব্যাখ্যামূলক উত্তর লিখতে হবে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় মহাকবি কালিদাসের মেঘদূত।

কালিদাসের মেঘদূত কাব্যের বিষয়বস্তু বর্ণনা করো |
কালিদাসের মেঘদূত কাব্যের বিষয়বস্তু বর্ণনা করো |

 

কালিদাসের মেঘদূত কাব্যের বিষয়বস্তু বর্ণনা করো |

 

‘শৃঙ্গরাত্মক’ গীতিকাব্যের শ্রেষ্ট উদাহরণ হল মহাকবি কালিদাসের ‘মেঘদূত’। ‘মেঘদূত’ দুটি খন্ডে বিভক্ত ‘পূর্বমেঘ’ এবং ‘উত্তরমেঘ’ পূর্বমেঘে আছে ৬৩ টি শ্লোক এবং উত্তরমেঘে আছে ৫৪ টি শ্লোক।

পূর্বমেঘঃ  

স্বঅধিকার প্রদত্ত যক্ষ প্রভু কুবেরের অভিশাপে রাম সীতার স্মৃতি বিজরিত রামগিরি পর্বতে নির্বাসিত হন। বর্ষার আগমনে আকাশে মেঘ দেখে তাঁর মনে জেগে ওঠে প্রিয়ার কাছে বার্তা পাঠাবার বাসনা, অর্থাৎ প্রিয়া বিরহে কাতর যক্ষ তাই আষাঢ়ের প্রথম দিবসে একখন্ড মেঘকে দূত হিসাবে পাঠান অলকায়। পূর্বমেঘে আছে শুধু মেঘের বর্ণনা।

মেঘকে যে পথ দিয়ে যেতে হবে সে পথে ছড়িয়ে আছে রূপ রস গন্ধের কামনা বাসনার কল্পধারা। তাই তিনি বলেছেন – “হে মেঘ, আগে তুমি তোমার উপযুক্ত প্রয়াণপথের কথা শোনো তাহারই পরে শুনিবে কর্ণ রসায়ন বার্তা।” সিদ্ধাঙ্গদের চকিত চাহনি, উজ্জয়িনীর পুরাঙ্গদের চঞ্চল কটাক্ষ বেত্রবর্তী প্রভৃতি মেঘের যাত্রাপথকে ক্লান্তিকর করে তুলবে না। এভাবে পথের সৌন্দর্য সুধায় অগহন করতে করতে মেঘ পৌঁছে যাবে কৈলাসে, কামনা বাসনার মোক্ষধাম   অলকাপুরীতে।

উত্তরমেঘঃ 

উত্তরমেঘ আছে অলকাপুরীর ঐশ্বর্য সৌন্দর্য, আর আছে ললনাদের রূপ বর্ণনা। অলকাপুরীর বর্ণনায় কবি এমনই কল্পনার মায়াজাল সৃষ্টি করেছেন, মনে হয় যেন সেখানে অনন্তসুখ, অনন্ত ঐশ্বর্য, অনন্ত সৌন্দর্য, অনন্ত যৌবন নিত্য বিরাতমান। লোলিত ললনাগনের অনুপম অপরূপ ফুলশয্যা, কর্ণে শিরীষ ফুলের ঝুমকো, কুন্তলে সদ্য প্রস্ফুটিত কুন্দকুসুম, হন্তে লীলা কমল প্রভৃতি পুরুষের মনকে কামার্থ করে তুলত।

মূল্যায়নঃ

গীতিকাব্য হিসাবে মেঘদূতের প্রশংসা যেমন ভারতীয় পন্ডিতেরা করেছেন তেমনি পাশ্চাত্য মনিষীরাও এর প্রশংসায় এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কাব্যের রস বিচারের দিক থেকে বলা চলে যে মেঘদূত একেবারে গীতিকাব্য ও খন্ডকাব্য।

অধ্যাপক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী একে খন্ড খাদ্যের ও ক্ষারজাতীয় মিষ্টের মতো পরম অস্বাদ্য বলেছেন। নায়ক – নায়িকার মনের ভাব বর্ণনায় এবং পাঠকের অনুভূতিতে আব্যোস্পর্শী করে তোলার ক্ষেত্রে কালিদাসের সমকক্ষ নেই। মল্লিনাথ যথার্থই বলেছেন –  “মেঘে মেঘে গতং বয়ঃ ” অর্থাৎ মেঘের ব্যাখা কার্যেই কবির বয়স চলে গেল। মেঘদূতের ভাষা সাবলীন ও লালিত মধুর তাতে সমাসের গুরুত্ব আছে বটে কিন্তু অভিসহ্যের ভারে পীড়িত নয়।


        আরো পড়ুন – 


প্রশ্ন উত্তরঃ

১. মেঘদূতম কে রচনা করেছেন ?

উত্তরঃ মেঘদূতম রচনা করেছেন মহাকবি কালিদাসের ।

২. মেঘদূত বাংলা অনুবাদ কে করেছিলেন ?

উত্তরঃ বাঙালি কবি বুদ্ধদেব বসু 1957 সালে প্রথম মেঘদূতকে বাংলায় অনুবাদ করেন।

৩. মেঘদূত কাব্যের কয়টি বিভাগ ও কি কি ? 

উত্তরঃ মেঘদূত কাব্যের  ২ টি বিভাগ – ‘পূর্বমেঘ’ এবং ‘উত্তরমেঘ’ ।

৪. মেঘদূত কোন ছন্দে রচিত ?

উত্তরঃ মেঘদূত মন্দাক্রান্তা ছন্দে রচিত ।

৫. মেঘদূত কাব্যের নায়ক  কে ?

উত্তরঃ মেঘদূত কাব্যের নায়ক যক্ষ।

৬. যক্ষ কোথায় নির্বাসিত হয়েছিল ?

উত্তরঃ যক্ষ রামগিরি পর্বতে নির্বাসিত হয়েছিল ।


  

 

Leave a comment