গভীর ও অগভীর বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য

পরিবেশ নীতিবিদ্যা দর্শনশাস্ত্রের নীতিবিদ্যার একটি অন্যতম শাখা।  বর্তমানে  Man And  Nature হল দর্শনশাস্ত্রের SEC Paper ( Skill Enhancement Course) এর অন্তর্গত। প্রিয় শিক্ষার্থীদের SEC Paper এর উপর পাঠ গ্রহণ করতে গিয়ে অনেক সমস্যার সন্মুখীন হতে হছে , সেই কথা মাথায় রেখে সম্পূর্ন বাংলায় Man And  Nature থেকে প্রতিটা অংশ অলোচনা করা হল। আজকের আলোচনায় পরিবেশ নীতিবিদ্যা থেকে- গভীর ও অগভীর বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য |Difference between deep and shallow ecosystems .

গভীর ও অগভীর বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য
গভীর ও অগভীর বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য

 

গভীর ও অগভীর বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য |Difference between deep and shallow ecosystems  

পরিবেশ নীতিবিদ্যা একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল পরিবেশ সংরক্ষণ । পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পরিবেশে নীতিবিদ্যায় দার্শনিক Arne Naes দুটি দৃষ্টিভঙ্গির উল্লেখ করেছেন অগভীর বাস্তুতন্ত্র ও গভীর বাস্তুতন্ত্র।  এই দুটি দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –

প্রথমত, অগভীর বাস্তুতন্ত্র অনুসারে আমাদের স্বার্থচিন্তা হবে পরিবেশ ব্যবহারের সূত্র।  আমাদের চিন্তা করতে হবে কীভাবে পরিবেশকে ব্যবহার করলে আমারা সবচেয়ে বেশী উপকৃত হবে। আমাদের নিজেদের কথা ভেবে পরিবেশ সংরক্ষণ করতে  হবে অর্থাৎ জল, বায়ু, অরণ্য নিধন, মৃত্তিকা দূষণ বন্ধ করতে হবে।

অপরদিকে, মানুষের স্বার্থচিন্তা ছাড়া পরিবেশের স্বার্থেই পরিবেশকে সংরক্ষণ করা হল গভীর বাস্তুতন্ত্র। মানুষের স্বার্থ এক্ষেত্রে গৌন, কারণ মানুষের মতোই পরিবেশ বা প্রকৃতির স্বতঃমূল্য রয়েছে। তাই গভীর বাস্তুতন্ত্র বলে পরিবেশের স্বতঃমূল্য রক্ষার জন্য মানুষকে নিঃস্বার্থ ভাবে পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, অগভীর বাস্তুতন্ত্রে কেবল মানুষের দিকে তাকিয়ে সম্পদ ব্যবহারের কথা বলা হয়। সম্পদের বিলুপ্তির বিষয়টি কখনও দুশ্চিন্তার কারণ হয় না। কারণ অগভীর বাস্তুতন্ত্রে বলা হয়। সম্পদ কমে গেলে সম্পদের মূল্য বৃদ্ধি পাবে এবং বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিকল্প সম্পদের আবিষ্কার হবে।

অপরদিকে, গভীর বাস্তুতন্ত্রে কেবলমাত্র মানুষের দিকে তাকিয়ে নয় সকল প্রাণীর দিকে তাকিয়ে সম্পদ ব্যবহারের কথা ভাবা হয়। গভীর বাস্তুতন্ত্রে সমগ্র বাস্তুতন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পদকে ভাবা হয়, যেখানে কিছু প্রাণী বা কিছু স্থানীয় পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

তৃতীয়ত, অগভীর বাস্তুতন্ত্রে ভূবৈচিত্র্য নদনদী, পাহাড়পর্বত প্রভৃতি প্রকৃতির সকল উপাদানকে সামগ্রিকরূপে না দেখে কখন ব্যক্তির , কখনো প্রতিষ্ঠানের, কখন রাষ্ট্রের সম্পত্তিরূপে দেখা হয়।

অপরদিকে গভীর বাস্তুতন্ত্রের প্রকৃতির উপাদানগুলিকে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের সম্পত্তিরূপে দেখা হয় না। নদী, পাহাড়, পর্বত, সমুদ্র  কোনো দেশের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এগুলি প্রকৃতির উপাদান হিসাবে স্বতঃমূল্যরূপে প্রকৃতিতে অবস্থান করে।

Thanks For Reading –গভীর ও অগভীর বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য।


প্রশ্ন- উত্তর

1. গভীর বাস্তুতন্ত্রের প্রবক্তা কে?

উত্তর-  গভীর বাস্তুতন্ত্রের প্রবক্তা  হলেন – Arne Naes।

২. গভীর বাস্তুবিদ্যা বলতে কী বোঝায়?

উত্তর-  মানুষের কল্যাণ হয় বলে পরিবেশকে সংরক্ষণ করতে হবে , পরিবেশের  স্বতঃ মূল্যের জন্য নয়। পরিবেশ সম্পর্কে এই রূপ চিন্তাকে বলে গভীর বাস্তুবিদ্যা।

 


Read More: 

  1. গান্ধীজীর সত্যাগ্রহ আন্দলন

  2. ভারতীয় দর্শনে দর্শন শব্দের অর্থ

  3. পরিবেশ নীতিবিদ্যা | স্বতঃমূল্য ও পরতমূল্যে

  4. অধিবিদ্যা কী | অধিবিদ্যার প্রকৃতি আলোচনা করো


 

Leave a comment